ডিজিটাল হুন্ডি-জুয়ায় পাচার হচ্ছে টাকা
এমএফএস লেনদেনে নজরদারি
প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
দিন যত গড়াচ্ছে দেশের সব শ্রেণির জনগণের কাছে ততই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম। তুলনামূলক সাশ্রয়ী চার্জ, খুবই দ্রুত, সুরক্ষিত এবং নিরাপদ পেমেন্ট হওয়ায় প্রতিদিনই বাড়ছে ডিজিটাল মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন। তবে ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম কাজে লাগিয়ে দেশ থেকে অর্থপাচারের বড় মাধ্যম হয়ে উঠেছে ‘ডিজিটাল হুন্ডি’। সুরক্ষিত মোবাইল অ্যাপে যোগাযোগ এবং মোবাইল ব্যাংকিং সেবা (এমএফএস) ব্যবহার করে বিদেশ থেকে অবৈধভাবে দেশে টাকা পাঠানো হচ্ছে। প্রবাসীর স্বজনরা টাকাও পাচ্ছেন, ফলে প্রক্রিয়াটি বৈধ নাকি অবৈধ, তা নিয়ে তারা ভাবছেন না। তবে এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশ। হুন্ডি কারবারিদের কারসাজিতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা হারাচ্ছে বাংলাদেশ। অবৈধ হুন্ডির সঙ্গে আরো যোগ হয়েছে অনলাইন গ্যাম্বলিং, গেমিং, বেটিং, ফরেক্স ও ক্রিপ্টো ট্রেডিং। ফলে একদিকে মুদ্রা পাচার বাড়ছে, অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের অর্থনীতি। এসব অবৈধ কার্যকলাপ রোধে একসঙ্গে কাজ করছে সরকারের বেশ কিছু সংস্থা। বিশেষ করে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার লেনদেনে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
সন্দেহজনক লেনদেন হওয়া অ্যাকাউন্ট ফ্রিজসহ (জব্দ) ডিজিটাল হুন্ডি কারবারিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। হুন্ডির মাধ্যমে ১ বছরে পাচার হয়েছে ৭৮০ কোটি ডলার বা ৭৫ হাজার কোটি টাকা। এই সময় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে হুন্ডি কারবারে জড়িত ১৬ জনকে গ্রেপ্তারের কথাও জানায় সিআইডি। দেশে অর্থপাচার ও সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়ন প্রতিরোধে কাজ করে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। ডিজিটাল হুন্ডি লেনদেনে জড়িত সন্দেহে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা (এমএফএস) এজেন্ট বাতিলসহ অনেকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে সংস্থাটি। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো প্রতিনিয়ত এ বিষয়ে নানা তথ্য সরবরাহ করছে বিএফআইইউ। পাশাপাশি সহযোগিতা করছে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রদানকারী কোম্পানিগুলোও। সবার মিলিত প্রয়াসে অর্থপাচার রোধে দিনে গড়ে ২০০ এমএফএস হিসাব জব্দ করা হচ্ছে। অর্থপাচার ও হুন্ডি তৎপরতা বন্ধ তথা অবৈধপথে রেমিট্যান্স গ্রহণ নিরুৎসাহিত করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত করা হচ্ছে প্রবাসীদের। বাংলাদেশ ব্যাংক, বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ফেসবুক পেজে চালানো হচ্ছে এ সংক্রান্ত প্রচারণা। আবার বিদেশে অবৈধভাবে বিভিন্ন এমএফএস প্রতিষ্ঠানের লোগো ব্যবহার করে যাতে হুন্ডি না হয়, এ বিষয়ে দূতাবাসের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে।