ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগে আগ্রহ কমেছে স্টার্টআপে

ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগে আগ্রহ কমেছে স্টার্টআপে

ঝুঁকিপূর্ণ খাতে বিনিয়োগে অনাগ্রহ দেখা দিয়েছে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার বাড়িয়ে দেওয়ায়। তাই অন্তত বিনিয়োগকারীদের সন্তুষ্ট করার জন্য বাংলাদেশের স্টার্টআপগুলোকে নিট মুনাফায় নজর দেওয়া উচিত বলে মনে করা হচ্ছে। ‘চালডাল’ বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিশীল স্টার্টআপগুলোর মধ্যে একটি। ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ৩২.৮ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ পেয়েছে এই কোম্পানি। কিন্তু বৈশ্বিক ভেঞ্চার ক্যাপিটাল (ভিসি) বিনিয়োগকারীরা মন্দাভাবে সতর্ক হয়ে ব্যয়ের বিষয়ে আরো হিসেবি হয়ে ওঠায় বাংলাদেশের স্টার্টআপগুলো নতুন তহবিল সংগ্রহের জন্য লড়াই করছে, এমনকি চালডালের মতো প্রতিশ্রুতিশীল স্টার্টআপগুলোও তহবিলের সংকট থেকে নিরাপদ নয়। করোনা মহামারি চলাকালীন অর্ডার বেড়ে যায় চালডাল-এর। এ সময় প্রতিষ্ঠানটি ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, যশোর, গাজীপুর, রাজশাহী, টাঙ্গাইল এবং নারায়ণগঞ্জে তাদের ব্যবসা প্রসারিত করে। চালডাল ‘ডার্ক স্টোর’ মডেল অনুসরণ করে। খুচরা দোকানের পরিবর্তে নিজস্ব গুদাম থেকে অর্ডারকৃত পণ্য সরবরাহ করে প্রতিষ্ঠানটি।

সুতরাং নতুন শহরে সম্প্রসারণের অর্থ হলো পণ্য মজুদে পর্যাপ্ত পরিমাণ জায়গা নিশ্চিত করা। ২০২২ সালে কোম্পানিটি বরিশাল, ময়মনসিংহ, রংপুর এবং কুমিল্লাসহ ১১টি শহরে নিজেদের কার্যক্রম চালুর পরিকল্পনা করে। কিন্তু মাঝপথেই এসব কার্যক্রম বন্ধ করা হয়, পাশাপাশি চলতি বছরের শুরুতে সিলেট, রাজশাহী এবং গাজীপুরে তাদের সেবা বন্ধ করা হয়। চালডাল আট দফা তহবিল সংগ্রহ করেছে। মহামারি চলাকালীন ১৮ মিলিয়ন ডলারের বেশি তহবিল এসেছে। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে, চালডাল তার তহবিল সংগ্রহের ‘সিরিজ সি রাউন্ড’ বন্ধ করে দেয়। যখন কোনো প্রতিষ্ঠান বাজারে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে, তখন সম্প্রসারণের জন্য বা অন্য প্রতিষ্ঠান অধিগ্রহণে বড় বিনিয়োগ পেতে ‘সিরিজ সি রাউন্ড’ চালু করে তহবিল সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু এই পর্যায়ে এসে চালডালে বিনিয়োগে মাঝারি পর্যায়ের আগ্রহ দেখা গেছে। ১৩ মিলিয়ন বিনিয়োগ আসে, যা কমবেশি সিরিজ বি রাউন্ডের সমান। এবং চালডালের এমন অবস্থান দেশের স্টার্টআপগুলোর বাস্তবতা বলে মনে হচ্ছে।

উদাহরণস্বরূপ আরেক স্টার্টআপ ‘শপআপ’ ভালার ভেঞ্চার, প্রসাস, সিকোইয়া ক্যাপিটাল, ফ্লোরিশ ভেঞ্চারস, টাইগার গ্লোবালের মতো বিখ্যাত বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ২০১ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ সংগ্রহ করে। চলতি বছর শপআপ সংগ্রহ করেছে ৩০ মিলিয়ন। যা বাংলাদেশি সব স্টার্টআপের পাওয়া বিনিয়োগের ৬৪ শতাংশ। তবে দুঃখজনক বিষয় হলো পুরো অর্থই এসেছে ঋণ হিসেবে। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ডিং নয়।

বছরের তৃতীয় ত্রৈমাসিক শেষ হতে আর এক মাস বাকি, এরমধ্যে বাংলাদেশি স্টার্টআপগুলো কেবল ৪৭ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেছে। গত বছর প্রথম ৯ মাসে সংগ্রহ ছিল ১১৪ মিলিয়ন। আর পুরো ২০২২ সালে বিনিয়োগ আসে ১২৫ মিলিয়ন ডলার। স্টার্টআপ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল সংস্থাগুলো এখন কম নগদ অর্থ ব্যয় করে দ্রুত ব্যবসা বাড়ানো যায় এবং আয় করা যায় এমন স্টার্টআপে আগ্রহী। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমে এই মুহূর্তে তিনটি প্রধান সমস্যা রয়েছে: যে সমস্যার সমাধান করা হচ্ছে তা যথেষ্ট বড় নয়; সরবরাহ করা সমাধানগুলোও যথেষ্ট নয় এবং দুর্বল নেতৃত্ব। তাই সাফল্য পাওয়া এবং স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানকে বড় করা কঠিন হয়ে পড়েছে। আইডিএলসি ফাইন্যান্স বর্তমানে ৪৫ কোটি টাকার ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ড পরিচালনা করে। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ জাভেদ নূর বলেন, বিনিয়োগ সংকট অনিবার্য।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত