বিশ্বে খাদ্যপণ্যের দাম কমেছে : এফএও

প্রকাশ : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক

বিশ্বজুড়ে প্রধান খাদ্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। তবে চলতি বছর আগস্ট মাসে খাদ্যপণ্যের দাম কমেছে, যা গত ২ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা-এফএও’র তথ্যসূত্রে বিষয়টি জানা গেছে। এফএও জানায়, সংস্থাটির খাদ্য মূল্যসূচক আগস্ট মাসে ১২১ দশমিক ৪ পয়েন্টে নেমে এসেছে, যা গত জুলাই মাসে ছিল ১২৪ পয়েন্ট। ২০২১ সালের মার্চের পর জাতিসংঘের খাদ্যমূল্য সূচক সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। তবে ভারতের রপ্তানি বন্ধের কারণে চালের দাম রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। ২০২২ সালের মার্চে খাদ্যমূল্য সূচক সর্বকালের রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছে ছিল। তবে সেই তুলনায় ২০২৩ সালের আগস্টে মাসে সার্বিক সূচক ২৪ শতাংশ কমেছে। দুগ্ধজাত পণ্য, তেলবীজ, মাংস, দানাজাতীয় খাদ্যপণ্যসহ প্রায় সব ধরনের খাবারের দামই কমেছে। ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে শস্যচুক্তি বাতিল হওয়ার পরও গম বা ভুট্টার বাজারে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। ব্রাজিলের উদ্বৃত্ত উৎপাদন আর যুক্তরাষ্ট্রে ফসল তোলার সময় ঘনিয়ে আসায় এই দুই খাদ্যের দামই বরং কমেছে। ভোজ্য তেলের দাম কমেছে ৩ দশমিক ১ শতাংশ। আর দুগ্ধজাত পণ্যের দাম ৪ শতাংশ কমেছে। সংস্থাটি আরো জানায়, ইউক্রেন রাশিয়ার শস্যচুক্তি বাতিল হলেও গম বা ভুট্টার বাজারে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। ইউক্রেন-রাশিয়ার শস্যচুক্তি বাতিল হলেও গম বা ভুট্টার বাজারে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। তবে ব্যতিক্রম চালের বাজার। ভারতের রপ্তানি বন্ধের ঘোষণায় বিশ্ববাজারে চালের দাম ১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। জুলাইর তুলনায় আগস্টে চালের দাম ১০ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া ১ দশমিক ৩ শতাংশ দাম বেড়েছে চিনির, যা ২০২২ সালের তুলনায় চিনির দাম বেড়েছে প্রায় ৩৪ শতাংশ পর্যন্ত। সূত্র : ডয়চে ভেলে, রয়টার্স ও এএফপি

অবশেষে বিশ্ববাজারে চিনি ও সয়াবিনের দাম আরো কমল:

আন্তর্জাতিক বাজারে গত কিছুদিন ধরে হু হু করে বাড়ছিল চিনির দাম। অবশেষে খাদ্যপণ্যটির দর নিম্নমুখী হলো। গত শুক্রবার ইন্টারন্যাশনাল কন্টিনেন্টাল এক্সচেঞ্জে চিনির সরবরাহ মূল্য হ্রাস পেয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে প্রভাবশালী বাণিজ্যিক সংবাদমাধ্যম নাসডাকের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এতে বলা হয়, এশিয়ায় আবহাওয়ার উন্নতি হয়েছে। ফলে এই অঞ্চলের কয়েক দেশে চিনির উৎপাদন বাড়তে পারে। এমনটি হলে বিশ্ববাজারে সরববরাহ বৃদ্ধি পাবে। এই প্রত্যাশায় ভোগ্যপণ্যটির দরপতন ঘটেছে। এদিন ইন্টারকন্টিনেন্টাল এক্সচেঞ্জে (আইসিই) আগামী অক্টোবরের অপরিশোধিত চিনির দর কমেছে ১ দশমিক ৪ শতাংশ বা শূন্য দশমিক ৩৭ শতাংশ। প্রতি পাউন্ডের দাম স্থির হয়েছে ২৬ দশমিক ৩১ সেন্টে, এর আগে যা ছিল ২৭ দশমিক ১০ সেন্ট। বিগত ৪ মাসের মধ্যে তা ছিল সর্বোচ্চ। সবমিলিয়ে চলতি গত সপ্তাহে বেঞ্চমার্কটির দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে ১ দশমিক ৯ শতাংশ। একই কর্মদিবসে আসছে অক্টোবরের সাদা চিনির দামও কমেছে শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ বা ৬ ডলার ৫০ সেন্ট। প্রতি মেট্রিক টনের দর নিষ্পত্তি হয়েছে ৭২৬ ডলার ৮০ সেন্টে, এর আগে যা ছিল ৭৫৩ ডলার ১০ সেন্ট। গত ১২ বছরের মধ্যে তা সবচেয়ে বেশি। এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিনের দাম আরও কমেছে। গত শুক্রবার শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে (সিবিওটি) তেলবীজটির দর আরেক দফা হ্রাস পেয়েছে। এ নিয়ে টানা ২ সপ্তাহ পণ্যটির মূল্য নিম্নমুখী হলো। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে বিজনেস রেকর্ডারের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।

এতে বলা হয়, দক্ষিণ আমেরিকায় সয়াবিনের বাম্পার ফলনের আভাস মিলেছে। ফলে বিশ্ববাজারে সরবরাহ বৃদ্ধির সম্ভাবনা জোরালো হয়েছে। তাতে তেলবীজটির দরপতন ঘটেছে। সরবরাহ মূল্য কমেছে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ। প্রতি বুশেলের দাম স্থির হয়েছে ১৩ ডলার ৫৫ সেন্টে। আগের কার্যদিবস গত বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) যা ছিল ১৩ ডলার ৭৪ সেন্ট। সবমিলিয়ে চলতি সপ্তাহে ভোজ্যতেল তৈরির কাঁচামালটি দর হারিয়েছে ১ শতাংশেরও বেশি। দক্ষিণ আমেরিকার শীর্ষ দুই উৎপাদনকারী দেশ আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলে ব্যাপক পরিমাণে সয়াবিন উৎপাদনের প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এতে তেলবীজটির বৈশ্বিক বাজার চাপে পড়েছে। গত আগস্টে সয়াবিনের দাম বেড়েছিল।

দুই সপ্তাহে তুলার দর সর্বনিম্ন :

আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার দাম আরো কমেছে। গত বৃহস্পতিবারও (৭ সেপ্টেম্বর) ইন্টারকন্টিনেন্টাল এক্সচেঞ্জে (আইসিই) অর্থকরী ফসলটির সরবরাহ মূল্য কমেছে। গত ২ সপ্তাহের মধ্যে তা সর্বনিম্নে নেমে গেছে। এতে পোশাক শিল্পের প্রধান কাঁচামাল সুতার দাম কমতে পারে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে প্রভাবশালী বাণিজ্যিক সংবাদমাধ্যম নাসডাকের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি মন্থর রয়েছে। পাশাপাশি মার্কিন মুদ্রা ডলারের দাম আরও বেড়েছে। এছাড়া চীনের অর্থনীতি দুর্বল রয়েছে।