ঢাকা ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিদেশফেরত কর্মীর জন্য ৪০ কোটি টাকার প্রকল্প

বিদেশফেরত কর্মীর জন্য ৪০ কোটি টাকার প্রকল্প

বিশ্বব্যাপী করোনার কারণে আমাদের প্রবাসী শ্রমিকরা নানামুখী সমস্যার মধ্যদিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। আমাদের যেসব শ্রমিক প্রবাসে ছিলেন, তাদের বেশির ভাগ সেখানকার অবকাঠামো নির্মাণসহ নানা রকম কাজে যুক্ত আছেন। করোনার কারণে অনেক দেশে এসব কাজের চাহিদা কমে গেছে। এ কারণে বিপুলসংখ্যক প্রবাসী শ্রমিককে দেশে ফিরে আসতে হয়েছে। তাদের অনেকেই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। এ অবস্থায় কেবল দেশে ফেরত শ্রমিকরা নন, তাদের পুরো পরিবারই ঝুঁকিতে আছে। প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো অর্থ যেমন আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডার স্ফীত করছে, তেমনি অর্থনীতিকেও করছে গতিশীল।

বিদেশফেরত অভিবাসী কর্মীদের জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও জবাবদিহিমূলক কাঠামো নিশ্চিতকরণে ৪০ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প নিচ্ছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।

প্রকল্পটিতে ৪০ কোটি ২৩ লাখ টাকা অনুদান হিসেবে দেবে সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কো-অপারেশন (এসডিসি) আর ৩০ লাখ টাকা অনুদান দেবে সরকার। প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে জুলাই ২০২৩ থেকে ডিসেম্বর ২০২৬ মেয়াদে বাস্তবায়িত হবে। সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাবিত প্রকল্পটির মূল্যায়ন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য সচিব মো. আবদুল বাকী। প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য প্রত্যাগত অভিবাসী কর্মীদের পুনরেকত্রীকরণের জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও জবাবদিহিমূলক কাঠামো নিশ্চিত করা এবং যথাযথ প্রতিষ্ঠান ও সিস্টেম প্রবর্তনের মাধ্যমে প্রত্যাগত কর্মীদের জন্য টেকসই সেবাসমূহ শক্তিশালীকরণে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে কারিগরি সহায়তা দেয়া।

বিদেশফেরত কর্মীদের টেকসই পুনরেকত্রীকরণ নীতি ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়নে সহায়তা করা, সক্ষমতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণে কারিগরি সহায়তা প্রদান ও বিদেশফেরত অভিবাসী কর্মীদের জন্য জেলাপর্যায়ে বিদ্যমান উৎপাদনশীল বিনিয়োগ এবং ব্যবসার সুযোগসমূহ চিহ্নিতকরণ। বর্তমানে এ ধরনের একটি প্রকল্প চলমান আছে। বিদেশফেরত অভিবাসী কর্মীদের অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে ৪২৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এর বেশিরভাগই অর্থাৎ ৪২৫ কোটি টাকাই ঋণ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড প্রকল্পটি ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। প্রকল্পটির আওতায় ২ লাখ কর্মীকে বাছাই করে তারা কী করতে চান, সেটা জেনে সে অনুযায়ী তাদের সহায়তা করা হচ্ছে।

যেমন কেউ বিদেশে গাড়ি চালাতেন, কিন্তু এখন কোনো সনদ নেই, তাকে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিটিআরসি) থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সনদ দেয়া হবে। সেই সনদ দিয়ে চাইলে ওই কর্মী ফের বিদেশে যেতে পারবেন। কিংবা দেশের মধ্যেই গাড়ি চালাতে পারবেন। ওই কর্মীর যদি আর্থিক সহযোগিতার প্রয়োজন হয়, তাকে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ) মাধ্যমে ঋণের ব্যবস্থা করে দেয়া হবে।

কোনো বিদেশফেরত কর্মী যদি উদ্যোক্তা হওয়ার আগ্রহের কথা জানান, তাকে এসএমই ফাউন্ডেশনে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে সেখান থেকে ঋণের ব্যবস্থা করে দেয়া হবে। প্রস্তাবিত এ প্রকল্পটি চলমান প্রকল্পের সঙ্গে দ্বৈততা হবে কি না, পিইসি সভায় জানতে চাওয়া হলে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি জানান, চলমান প্রকল্পটির সঙ্গে এ প্রকল্পের কোনো দ্বৈততা নেই।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত