বেসরকারি বিনিয়োগ

নতুন বিনিয়োগে স্থবিরতা সম্প্রসারণেও ধীরগতি

প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

কয়েক মাস পরই নির্বাচন। এছাড়া ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে খরচও বেড়েছে। অর্থনীতিও চাপে। তাই উদ্যোক্তাদের ধীরে চলো নীতি। মূল্যস্ফীতি, ডলার সংকট ও গ্যাস-বিদ্যুতের সমস্যায় এক বছরের বেশি সময় ধরে চাপে রয়েছে দেশের বিভিন্ন শিল্প উৎপাদন খাত। দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এখনো ঠিক হয়নি। সেই সঙ্গে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ। এসব কারণে একদিকে বিভিন্ন শিল্প খাতে চলমান বিনিয়োগ প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি কমেছে, অন্যদিকে দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তারাও নতুন বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। একাধিক বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডলার-সংকটের কারণে অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্মাণকাজের গতিও কমে গেছে। পাশাপাশি নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ-সুবিধার অভাবে বিভিন্ন কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। বিনিয়োগও কমে গেছে। শুধু ডেলটা, মেঘনা বা পলমলই নয়, একই অবস্থা দেশের বেশির ভাগ শিল্প গ্রুপের। পোশাক, প্যাকেজিং, খাদ্য ও পানীয় খাতে দেশবন্ধু গ্রুপের কয়েকশ’ কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে।

তবে গত এক বছরে গ্রুপটির বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের প্রবৃদ্ধি ৩১ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির ঘটনাও ঘটেছে। মূলত ডলার-সংকট ও গ্যাস-বিদ্যুতের সমস্যার কারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় এমনটা হয়েছে। দেশবন্ধু গ্রুপের এক শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘বছরখানেক হলো আমাদের শতভাগ টাকা ব্যাংকে জমা দিয়ে ঋণপত্র খুলে বিভিন্ন কাঁচামাল ও যন্ত্রাংশ আমদানি করতে হচ্ছে। এর সঙ্গে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে খরচ বেড়ে গেছে অনেক।’ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুসারে, ২০১৮-১৯ বছরে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) বেসরকারি বিনিয়োগ ছিল ২৫ দশমিক ২৫ শতাংশ। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা কমে দাঁড়ায় ২৩ দশমিক ৬৪ শতাংশে। অর্থাৎ ৫ বছরেও প্রবৃদ্ধি বাড়েনি। গত এক বছরের ব্যবধানে প্রকৃত জিডিপিতে দেশের শিল্প উৎপাদন খাতের অবদানও কমেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) জিডিপিতে শিল্প উৎপাদন খাতের অবদান ছিল ৯ দশমিক ২৩ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১২ দশমিক ৩১ শতাংশ। সম্প্রতি বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ নিয়ে একটি জরিপ প্রকাশ করেছে জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন বা জেট্রো। জরিপে বাংলাদেশে ব্যবসারত জাপানি কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রায় ৭১ শতাংশই জানিয়েছে, এখানকার ব্যবসার পরিবেশ নিয়ে তারা সন্তুষ্ট নয়। অথচ দীর্ঘ সময় ধরে এ দেশে বিনিয়োগ রয়েছে জাপানের উদ্যোক্তাদের।