নিউক্লিয়ার ফুয়েল আমদানির জটিলতা

অর্থ বিভাগের গ্যারান্টি ৪৩৪৬ কোটি টাকা

প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের পারমাণবিক জ্বালানি আমদানির জটিলতা কাটাতে ৩০০ মিলিয়ন এসডিআর (দেশীয় মুদ্রায় ৪৩৪৬ কোটি টাকার) ক্ষতিপূরণজনিত গ্যারান্টি দিয়েছে অর্থ বিভাগ। ক্ষতিপূরণের অঙ্কটি আন্তর্জাতিক আইনে নির্ধারিত। এ জ্বালানি বহনকালে বা বিদ্যুৎকেন্দ্রে পারমাণবিকজনিত দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ বাবদ অর্থ বিভাগ এ গ্যারান্টি দিয়েছে। অন্যদিকে প্রকল্পের রাশিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘জেএসসি এটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট’ এ ক্ষেত্রে কোনো আর্থিক দায় নিচ্ছে না। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ সংক্রান্ত এক নথিতে স্বাক্ষর করেছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য। পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে ১২০০ মেগাওয়াট করে দুটি ইউনিটে মোট ২৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ চলমান আছে। এটি দেশে প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। এ কেন্দ্রে পারমাণবিক জ্বালানি আগামী অক্টোবরে দেশে আসছে। নিউক্লিয়ার ফুয়েল রাশান ফেডারেশন থেকে বিশেষ কার্গো বিমানে করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরিবহণ করা হবে। বিমানবন্দর থেকে এ জ্বালানি সড়কপথে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রে পর্যন্ত রাশান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জেএসসি এটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট কর্তৃক পরিবহণ করা হবে। এর তত্ত্বাবধানে থাকবে দেশের বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অংশগ্রহণে গঠিত কনভয়ে। নিয়ম অনুযায়ী এ ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্রে পারমাণবিক জ্বালানি বহনকালে দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতির বিপরীতে বিমা করতে হয়। কিন্তু রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রে নিউক্লিয়ার ফুয়েল বহনকালে দুর্ঘটনার বিপরীতে ক্ষতিপূরণের জন্য কোনো বিমা করা হয়নি। সূত্র আরো জানায়, নিউক্লিয়ার ফুয়েল আমদানির জন্য সাইড রেডিনেস নিশ্চিত করতে অনসাইট পরিদর্শন শুরু হবে। ফলে আগামী ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ক্ষতিপূরণ বাবদ আর্থিক নিশ্চয়তা পাওয়া না গেলে পারমাণবিক জ্বালানি আমদানি অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। কারণ ‘সিভিল লাইবেলিটি ফর ডেমেজ’র নীতি অনুযায়ী এ ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্রে পারমাণবিক জ্বালানি বহনকালে বা বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে পারমাণবিকজনিত দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণের বিপরীতে বিমা পলিসি বা আর্থিক নিশ্চয়তা থাকতে হয়। নিয়ম মতে নিশ্চয়তাপত্র ছাড়া নিউক্লিয়ার ফুয়েল আমদানি পারমিট ইস্যু করা হয় না। আর আর্থিক নিশ্চয়তাপত্র ছাড়া এ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করলে রাশান উপঠিকাদার ব্রারুস প্রজেক্ট লজিস্টিকের অনুকূলে বাপশিক কর্তৃক ইস্যুকৃত ক্লাস ডি লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে। অবশ্য এসব বিষয় তুলে ধরে অনেক আগেই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের রাশিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনকে অবহিত করেছিল।