ডিমের পর এবার মুরগির বাচ্চা নিয়ে কারসাজি শুরু করেছে কর্পোরেট ব্যবসায়ীরা। এমন অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সভাপতি সুমন হাওলাদার। কর্পোরেট সিন্ডিকেট চক্রটি দিনে ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, পরিকল্পনামন্ত্রী বলেছেন যে, আগস্টে মূল্যস্ফীতির মূল কারণ ডিম ও মুরগি। কর্পোরেট গ্রুপগুলো সরকারি সুবিধা ভোগ করেও খেয়াল খুশিমতো কখনো ডিম আবার কখনো মুরগি, আবার কখনো পোলট্রি ফিড ও বাচ্চার দাম বাড়ায়। তারা সিন্ডিকেট করে বাজারে ডিম ও মুরগির বাড়তি দাম প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। বর্তমানে মুরগির বাচ্চায় সিন্ডিকেট চলছে। যেমন- আগস্ট মাসের ২০ তারিখে ১ পিস ব্রয়লারের বাচ্চার উৎপাদন খরচ হয় ২৮ থেকে ৩০ টাকা। বিক্রির দাম ছিল ৩৫ টাকা। কালার বার্ড সোনালি মুরগির বাচ্চার উৎপাদন খরচ ২০ থেকে ২২ টাকা। বিক্রি হয়েছিল ৩০ থেকে ৩২ টাকায়। ডিমের লেয়ার মুরগির বাচ্চা উৎপাদন খরচ ২০ থেকে ২৫ টাকা আর বিক্রি হয় ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। বর্তমানে কী এমন উৎপাদন খরচ বাড়ল যে ২০ দিনের ব্যবধানে আজ কোনো কারণ ছাড়াই সেই বাচ্চা বাড়তি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। বর্তমানে ব্রয়লারের বাচ্চা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকায়, কালার বার্ড সোনালি মুরগির বাচ্চা ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় এবং লেয়ার মুরগির বাচ্চা ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। প্রতিদিন প্রায় ২৬ লাখ মুরগির বাচ্চা উৎপাদন করা হয়। একটি মুরগির বাচ্চায় যদি ২৫ টাকা বেশি নেওয়া হয় তাতে সিন্ডিকেট করে প্রতিদিন ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা বেশি হাতিয়ে নিচ্ছে কর্পোরেট গ্রুপগুলো। কৃষি আইনে উৎপাদক ৩০ শতাংশ লাভ করার কথা থাকলেও তারা ১০০ শতাংশ লাভ করে যাচ্ছে। কৃষি আইন মানছেন না তারা। কে কত টাকা লাভ করবে সরকারের তদারকি করা উচিত। দেশের জনগণ থেকে ভোক্তা এমনকি প্রান্তিক খামারিরা সবাই জিম্বি হয়ে পড়ছে। উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে দিয়ে প্রান্তিকদের উৎপাদন থেকে সরিয়ে দিচ্ছে। তারা চাইলে বাজার দাম বাড়ে আবার তারা চাইলে বাজার দাম কমে। একই বাজারে দুই রকম দামে বাচ্চা ও ফিড বিক্রির বৈষম্য দূর করে প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদনে ধরে রাখতে হবে। সরকারের কঠোর নজরদারি প্রয়োজন, কেন না কিছু দিন পর পর বাজার বেড়ে যায় আবার কমে যায়। বিষয়টি তদন্ত করে সমাধান করা উচিত তা না হলে ডিম ও মুরগির বাজারে স্বস্তি আসবে না। কর্পোরেট গ্রুপগুলো ডিম ও মুরগির কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ভোক্তাদের পকেট ফাঁকা করে দিচ্ছে।
তাই সরকারের সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত বলে মনে করি। বিবৃতিতে বলা হয়, আজ আমি প্রশ্ন করছি যে, বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) পোলট্রি শিল্পের বৃহত্তর সংগঠন। তাদের নিবন্ধন কোথায় জানতে চাই। বাংলাদেশ পোলট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদ (বিপিকেআরজেপি) ও পোলট্রি প্রফেশনাল বাংলাদেশ (পিপিবি) এরা সবাই পুরোনো সংগঠন ও কর্পোরেটদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পরিচালনা করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। এই সিন্ডিকেট বন্ধ করতে সরকারের প্রতি দাবি জানান তিনি।