সক্ষমতার মাত্র ২৫ শতাংশ স্যালাইন উৎপাদন লিব্রার

প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ায় দেশে ইনজেকশনযোগ্য স্যালাইনের চাহিদা বহুগুণ বাড়ার সময়ে দেশের সবচেয়ে বেশি স্যালাইন উৎপাদনকারী কোম্পানি লিব্রা ইনফিউশনস লিমিটেড স্যালাইন উৎপাদন ৭৫ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে। রাজধানীতে চাহিদার ৫০ শতাংশ স্যালাইন সরবরাহ করতে পারছে কোম্পানিগুলো। আর রাজধানীর বাইরে চাহিদার মাত্র ৩০ শতাংশ স্যালাইন সরবরাহ হচ্ছে। বাজারে স্যালাইনের সংকটের কারণে ৫০০ টাকা দিয়েও স্যালাইন কিনতে বাধ্য হচ্ছেন রোগীরা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় স্যালাইন আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে। স্যালাইন সংকট মেটাতে উৎপাদক কোম্পানিগুলোকে তিন শিফটে উৎপাদন চালানোর নির্দেশ দিয়েছে সরকার। এমন পরিস্থিতিতে দৈনিক ১ লাখ ব্যাগ স্যালাইন উৎপাদনের সক্ষমতা থাকা লিব্রা ইনফিউশনস উৎপাদন করছে মাত্র ২৫ হাজার ব্যাগ। ‘অপারেটিং ক্যাপিটাল’ না থাকার কারণে বাধ্য হয়ে উৎপাদন কমানোর দাবি করেছে কোম্পানিটি। লিব্রা ইনফিউশনসের কোম্পানি সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘আমাদের অপারেটিং ক্যাপিটালের ঘাটতি থাকায় সক্ষমতা অনুযায়ী উৎপাদন করতে পারছি না। ব্যাংক থেকে ঋণ পাচ্ছি না, এ কারণে সক্ষমতার ২৫ শতাংশ স্যালাইন উৎপাদন করছি আমরা। ব্যাংক ঋণ পেলে সক্ষমতার পুরোটা কাজে লাগানো যাবে।’ ডেঙ্গুর প্রকোপের কারণে স্যালাইনের চাহিদা বাড়ার সময় সরবরাহ সংকট দেখা দেওয়ার ঘটনাকে ‘জাতীয় সংকট’ হিসেবে বিবেচনা করে স্যালাইন উৎপাদক কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন। লিব্রা ইনফিউশনের ৭৫ শতাংশ উৎপাদন কমানোর ঘটনার ব্যাখ্যা চায় কমিশন।

সেখানে লিব্রা ইনফিউশনস অপারেটিং ক্যাপিটাল সংকটের পাশাপাশি স্যালাইন বিক্রি করে না পোষানোর কথা জানায় বলে প্রতিযোগিতা কমিশনের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা টিবিএসকে জানিয়েছেন। প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘তিন দশকের বেশি সময় ধরে কোম্পানিটি প্রফিট করছে। আর জাতীয় সংকটের মুহূর্তে উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে, যা মোটেই কাম্য নয়।’ পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রতিযোগিতা কমিশন প্রয়োজনে কঠোর হবে বলেও জানান তিনি। কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ভারতে প্রতি ব্যাগ স্যালাইনের দাম এখন ৪৩ রুপি। আর বাংলাদেশে প্রতি ব্যাগ স্যালাইনের মূল্য ৯০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। তারপরও স্যালাইন বিক্রি করে না পোষানোর ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য নয়। স্কয়ার গ্রুপের স্যালাইন উৎপাদন ইউনিটও বন্ধ রয়েছে। দেশের স্যালাইন সংকট দূর করতে ৩.৫০ লাখ ব্যাগ স্যালাইন আমদানি করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ খাতের ব্যবসায়ীরা বলেছেন, স্বাভাবিক সময় প্রতি মাসে স্যালাইনের চাহিদা ছিল ৪০ থেকে ৫০ লাখ ব্যাগ। এখন তা বেড়ে ২.৪০-৩ কোটি ব্যাগ হয়েছে। বর্তমানে ছয়টি কোম্পানি উৎপাদনে আছে। এর মধ্যে বেক্সিমকো গ্রুপ সর্বোচ্চ দিনে ৩০ হাজার ব্যাগ স্যালাইন উৎপাদন করছে। কোম্পানিগুলো তিন শিফটে পূর্ণ উৎপাদন সক্ষমতা কাজে লাগালে মাসে ৬৫ লাখ পর্যন্ত জোগান দিতে পারবে। ওরিয়ন ইনফিউশনের সহকারী ভাইস প্রেসিডেন্ট খায়রুল বাশার জানান, এ প্রতিষ্ঠান ছুটির দিনসহ তিন শিফটেই স্যালাইন উৎপাদন করছে। দৈনিক উৎপাদিত ২৫ হাজার ব্যাগের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে ১০ হাজার ব্যাগ সরবরাহ করা হচ্ছে। বাকিটা বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে। কোম্পানিগুলো বলছে, স্যালাইনের দাম সরকার নির্ধারণ করে দেয়।