ডিম আমদানির খবরে পাইকারি বাজারে কমতে শুরু করেছে ডিমের দাম। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর বিভিন্ন পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি ১০০টি ডিমের দাম ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। খুচরা বাজারে অবশ্য এখনো সেভাবে প্রভাব পড়েনি। কোথাও কোথাও ১৪৪ টাকা ডজনে বাদামি রঙের ডিম বিক্রি হলেও অধিকাংশ দোকানে এখনো খুচরায় ১৫০ বা তার আশপাশে এক ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর মগবাজার ও মালিবাগ বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ব্যবসায়ীরা আজ পাইকারিতে ১০০টি বাদামি রঙের ডিম কিনেছেন ১ হাজার ১২৫ থেকে ১ হাজার ১৩০ টাকায়, গতকাল যা ছিল ১ হাজার ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা। সাদা রঙের প্রতি ১০০টি ডিমের দাম ১ হাজার ১০৫ টাকার আশপাশে। সাদা রঙের ডিমও তাই খুচরা বিক্রেতারা একটু কম দামে ডজনে ১৪৪ থেকে ১৪৫ টাকায় বিক্রি করছেন। ডিমের দাম দুই বছর ধরে বাড়ছে। তবে গত বছর হালিপ্রতি ডিমের দর ৬০ টাকায়ও উঠেছিল। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবির) হিসাবে, ২০২১ সালের জানুয়ারিতে বাজারে এক হালি ডিমের দাম ২৮ থেকে ৩০ টাকা ছিল। এদিকে সরকার যেসব প্রতিষ্ঠানকে ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে তারা মূলত ভারত থেকে ডিম আমদানি করবে। পাশাপাশি ইন্দোনেশিয়া ও আজারবাইজান থেকেও আমদানির চেষ্টা চলছে। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর দাবি, তারা দেশের বাজারে প্রতিটি ডিম ১০ টাকার কমে বিক্রি করতে পারবে। ভারত থেকে ডিম আসতে সময় লাগতে পারে এক সপ্তাহের মতো। বাংলাদেশে ডিম আমদানি নিষিদ্ধ। প্রয়োজন হলে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মতিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আমদানির অনুমতি দিতে পারে। কাস্টমস ট্যারিফের তালিকা (২০২৩-২৪) অনুযায়ী, ডিমের ওপর ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক, ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর ও ৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক রয়েছে। মোট শুল্ক-কর ভার ৩৩ শতাংশ। ফলে ১০০ টাকার ডিম আমদানি করতে ৩৩ টাকা শুল্ককর দিতে হবে। দেশের বাজারের ডিমসংকট ও বাড়তি দামের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর নভেম্বরে ৬টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ৫১ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি চেয়ে সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন জানিয়েছিল। তখন অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবে সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চার প্রতিষ্ঠানকে চার কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে। আমদানির অনুমতির পাশাপাশি খুচরা দোকানে একটি ডিমের সর্বোচ্চ দর ১২ টাকা বেঁধে দেওয়া হয়। তবে বর্তমানে ডিমের বাজার স্থিতিশীল উল্লেখ করে তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আমানত উল্লাহ বলেন, ডিমের দাম আর বৃদ্ধির সম্ভাবনা কম। এখন বাজার স্থিতিশীল-দামেরও বড় নড়াচড়া নেই। তেমন কোনো সংকট হওয়ার মতো পরিস্থিতিও দেখছেন না বলে জানান তিনি।