আট মেগা প্রকল্পে গড় অগ্রগতি ৮৫ শতাংশ

প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাচ্ছে ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত মেগাপ্রকল্পের কাজ। শুরু থেকে গত আগস্ট মাস পর্যন্ত এসব প্রকল্পের আওতায় ব্যয় হয়েছে দুই লাখ সাত হাজার ৯২৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। আগস্ট পর্যন্ত প্রকল্পগুলোর গড় ভৌত অগ্রগতি ৮৪.৬৬ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৭২.৩০ শতাংশ। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে তিন লাখ ছয় হাজার ২৬৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা। বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) অগ্রগতি প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, ‘মেগাপ্রকল্পগুলোর কাজ এগিয়ে চলছে পুরোদমে। অর্থায়ন নিশ্চিত করতে চলতি অর্থবছরে চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ নিশ্চিত করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি প্রকল্পের কাজ শেষের পথে। আমরা আশা করছি, জনগণ আমাদের কাজের মূল্যায়ন করবে। তবে উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষা প্রয়োজন। সেইসঙ্গে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলে অগ্রগতি অব্যাহত থাকে। এমএ মান্নান বলেন, উন্নয়নে কোনো কৃচ্ছ্র সাধন নেই। সরকার জনগণের উন্নয়নের জন্য কাজ করে। তবে আমাদের নির্দেশনা আছে, অপব্যয় কমাতে হবে। বাড়তি খরচ কমাতে হবে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত আটটি মেগাপ্রকল্প হলো পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্প, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ এবং দোহাজারী-রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু-মিয়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গল লাইন ডুয়াল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্প। ২০২২ সালের ২৫ জুন উদ্বোধন করা হয় পদ্মা সেতু প্রকল্প। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ শতভাগ শেষ হয়নি। গত আগস্ট পর্যন্ত প্রকল্পটির আওতায় ব্যয় হয়েছে ২৯ হাজার ২৯৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা। আর্থিক অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৮৯.৮৫ শতাংশ। পুরো প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৯৯.৮০ শতাংশ। এটি বাস্তবায়নে মোট ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। মেট্রো রেল প্রকল্পের উত্তরা-আগারগাঁও অংশ গত বছর ২৮ ডিসেম্বর উদ্বোধন হয়েছে। ২৯ ডিসেম্বর থেকে নির্ধারিত সময়ে জনগণের চলাচলের জন্য খুলে গেছে এ অংশ। কিন্তু পুরো প্রকল্প শেষ হতে অপেক্ষা করতে হবে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশা করছেন, আগামী ২০ অক্টোবর মতিঝিল পর্যন্ত খুলে দেওয়া দেশের সবচেয়ে বেশি ব্যয়ের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আগস্ট পর্যন্ত ভৌত অগ্রগতি ৬০.৪৬ শতাংশ। প্রকল্পের আওতায় এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৬৫ হাজার ৮৩০ কোটি ২৮ লাখ টাকা। ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য রয়েছে। পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্পে গত আগস্ট পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২৯ হাজার ৯৩৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। প্রকল্পটির আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৭৬.২৭ শতাংশ। প্রকল্পটি ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্য রয়েছে। মহেশখালী-মাতারবাড়ী সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন কার্যক্রম (১২টি প্রকল্পযুক্ত) প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৫১ হাজার ৮৫৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। গত আগস্ট পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৩৩ হাজার ৭৭৭ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। আর্থিক অগ্রগতি ৬৫.১৪ শতাংশ এবং সার্বিক অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৭৮ শতাংশে। রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ১৬ হাজার কোটি টাকা। গত আগস্ট পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১৪ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা। আর্থিক অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৯০.২০ শতাংশ। ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৯৫.৬৩ শতাংশ। পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পটি চার হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে। গত আগস্ট পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে তিন হাজার ৭৫২ কোটি ১৩ লাখ টাকা। আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৮৫.৭৭ শতাংশ এবং ভৌত অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৯০.১২ শতাংশ। দোহাজারী-রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু-মিয়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গল লাইন ডুয়াল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৮৮ শতাংশ।