আমদানি পণ্যের বিস্তারিত বিবরণ দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা

এলসি খোলার আগে পণ্যের মূল্য যাচাইয়ে কড়াকড়ি

প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

আমদানির মাধ্যমে বিদেশে ব্যাপকহারে বেড়েছে অর্থপাচার। এতে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এমন পরিস্থিতিতে অর্থপাচার নিয়ন্ত্রণে আমদানি পণ্যের মূল্য যাচাইয়ে তৎপর হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে পণ্যের সম্পূর্ণ বিবরণ, মান, ব্র্যান্ড, উৎপাদনের তারিখ, প্যাকেজিং সংক্রান্ত তথ্য ও গ্রেডসহ বেশ কিছু তথ্য দিতে বলা হয়েছে আমদানিকারক বা তার দেশীয় এজেন্টকে। গত সোমবার এ বিষয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে সার্কুলার দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, বিদেশ থেকে আমদানি করা পণ্য সম্পর্কে এমনভাবে তথ্য দিতে হবে যার মাধ্যমে পণ্যের গুণগত মান পৃথক করা যায় এবং ইউনিট প্রতি মূল্য ও পরিমাণ যাচাই করা সম্ভব হয়। এর আগে গত অক্টোবর মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলার দিয়ে জানিয়েছিল, আমদানি পণ্যর মূল্য যাচাইয়ের দায়িত্ব থাকবে বাণিজ্যিক ব্যাংকের। আমদানিতে এলসি (ঋণপত্র) খোলার আগে পণ্যর দাম যাচাইয়ের পাশাপাশি সরবরাহকারীর ক্রেডিট রিপোর্ট দেখতে ব্যাংকগুলোর প্রতি নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর বাইরেও আমদানি নীতিমালা মেনে মূল্য পরিশোধ করা হওয়ার বিষয়টিও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে ব্যাংকগুলোকে। বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির মূল্য বেশি দেখানো ওভার-ইনভয়েসিং এবং রপ্তানিতে মূল্য কম দেখানো হচ্ছে আন্ডার-ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে অর্থ পাচারের অভিযোগটি অনেক পুরোনো। অর্থপাচার প্রতিরোধে আরো শক্ত অবস্থানে যেতে আমদানি পণ্যর আরো বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সার্কুলারে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজার দরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সঠিকভাবে আমদানি করা পণ্যের দাম যাচাইয়ের সুবিধার্থে রপ্তানিকারক কর্তৃক প্রেরিত পিআইতে (প্রোফরমা ইনভয়েস) অথবা তাদের এদেশীয় এজেন্ট কর্তৃক সরবরাহ করা ইন্ডেন্টে আমদানি পণ্য সম্পর্কিত তথ্য দিতে হবে ব্যাংকের কাছে। একটি পিআইয়ের মাধ্যমে একাধিক পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আলাদাভাবে প্রতিটি পণ্যের বিবরণ, মান, ব্র্যান্ড, উৎপাদনের তারিখ, প্যাকেজিং সংক্রান্ত তথ্য ও গ্রেড (যদি থাকে) যা দ্বারা পণ্যের গুণগত মান পৃথক করা যায় এবং ইউনিট প্রতি মূল্য ও পরিমাণ উল্লেখ থাকতে হবে। একই পিআইয়ের মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে সাধারণভাবে সব পণ্যকে একটি নির্দিষ্ট ইউনিট যথা কেজি, লিটার অথবা পিস ইত্যাদিতে পরিমাপ না করে তাদের প্রকৃতি অনুযায়ী পৃথক পৃথকভাবে দেখাতে হবে। ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের অনুমোদিত ইনকোটার্মস এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে পরিবহন ভাড়ার তথ্যও সংযুক্ত করতে হবে। আমদানিকৃত পণ্য সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিতকরণের জন্য এইচএসকোডের ৬ ডিজিটের পরের ২ ডিজিট (মোট ৮ ডিজিট পূর্ণরূপে) উল্লেখ করার বাধ্যবাধকতা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।