কর অডিট প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা ও কর কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতার প্রয়োগ নতুন কিছু নয়। এবার কর ফাঁকি চিহ্নিত করতে ও করদাতাদের অডিট-ভীতি দূর করতে সফটওয়্যার তৈরি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সংশ্লিষ্টদের মতে, এতে অডিট প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার পাশাপাশি কর কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছাচার ক্ষমতা কমবে। সেই সঙ্গে চিহ্নিত করা যাবে কর ফাঁকি। সূত্র জানায়, এ লক্ষ্যে ‘রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ইঞ্জিন’ নামে একটি সফটওয়্যার তৈরি করেছে এনবিআর। সফটওয়্যারটি তথ্য সংগ্রহের জন্য অন্যান্য সরকারি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ, ব্যক্তি ও কোম্পানির জমা দেওয়া রিটার্ন স্ক্যান করার পর ব্যক্তিগত অডিটের জন্য ফাইল বাছাই করবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, চলতি বছরের পুরো সময় বিভিন্ন কর অঞ্চলে এ কার্যক্রমের সফলতা যাচাই করা হবে। এরপর আগামী বছর থেকে পুরোদমে কার্যক্রম শুরু করবে সফটওয়্যারটি। জানা গেছে, প্রথমবারের মতো এনবিআর অডিট ম্যানুয়ালও তৈরি করছে। ওই ম্যানুয়ালের আওতায় এই কার্যক্রম চলবে। ট্যাক্স ম্যানুয়াল না থাকায় কর্মকর্তারা এখন ইচ্ছেমতো ফাইল বাছাই করেন। অভিযোগ রয়েছে, এ প্রক্রিয়ায় অনেক করদাতা প্রায়ই হয়রানির শিকার হন।
এনবিআর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন অটোমেটেড সিস্টেম চালু হলে কর কর্মকর্তারা ইচ্ছামাফিক কর ফাইল অডিটের জন্য বাছাই করতে পারবেন না। কারণ, তখন কোনো করদাতার ফাইল অডিট করা হবে, তা নির্দিষ্ট মানদণ্ডের ভিত্তিতে সফটওয়্যারটিই বেছে নেবে। এ প্রক্রিয়া কেবল কর নয়, দেশের সার্বিক আর্থিক ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে বিরাট ভূমিকা পালন করবে। এনবিআর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, করদাতাদের তিন বছরের ডেটা সংগ্রহের কাজ এখন চলমান আছে। কর বিভাগ সরকারের অন্যান্য সংস্থার ডেটাবেইসে প্রবেশাধিকার নিচ্ছে। এর ফলে কর ফাইলে দেখানো আয়, ব্যয় ও সম্পদের তথ্যের সঙ্গে সফটওয়্যার অন্যান্য বিভাগের তথ্য মিলিয়ে দেখে নির্দিষ্ট মানদণ্ডের ভিত্তিতে সন্দেহভাজন ফাইল চিহ্নিত করতে পারবে। এরপর ওই সব ফাইল এনবিআরের ট্যাক্স রিস্ক ইউনিটে পাঠানো হবে। সেই ইউনিট চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে মাঠপর্যায়ের অফিসগুলোকে অডিটের জন্য নির্দেশনা দেবে। তবে অডিটের ক্ষেত্রে কোন ধরনের ফাইল সন্দেহের তালিকায় থাকবে, সেই ক্রাইটেরিয়া এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে আয়-ব্যয় কিংবা সম্পদে বড় ধরনের গরমিল রয়েছে, এমন ব্যক্তি এর আওতায় আসতে পারেন।