দেশের কিছু ব্যাংকে অভ্যন্তরীণ রেমিট্যান্স প্রবাহ স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় প্রায় এক থেকে দশমাংশে নেমে আসলেও কিছু ব্যাংকের ক্ষেত্রে আবার সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে। যেমন- একসময় ডাচ্ থেকে বাংলা ব্যাংক রেমিট্যান্স অর্জনে দেশের শীর্ষ পাঁচ ব্যাংকের মধ্যে একটি ছিল। স্বাভাবিক সময়ে প্রতি মাসে এই ব্যাংকে গড়ে রেমিট্যান্স আসত ২২০ থেকে ২৩০ মিলিয়ন ডলার। অথচ চলতি বছরের আগস্টে ব্যাংকটির রেমিট্যান্স প্রায় ৮০ শতাংশ কমে মাত্র ৩৮ মিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতেও ঘটছে একই ঘটনা। মাত্র এক বছর আগেও প্রতি মাসে সোনালী ব্যাংকের গড় রেমিট্যান্স ১২০ থেকে ১৩০ মিলিয়ন ছিল; অথচ আগস্টে এই পরিমাণ মাত্র ৪৪ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের রেমিট্যান্সও স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ কমেছে। বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) চেয়ারম্যান ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আফজাল করিম বলেন, ‘বাফেদার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের কারণে আমি সবসময় নিয়ম থেকে কাননু সঠিকভাবে মেনে চলতে চেয়েছি। আপনারা সবাই ভালো করেই জানেন কেন আমাদের রেমিট্যান্স আয় এত কমে গেছে। এ বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য করাতে চাই না।’ এদিকে আবার বেশ কিছু নির্দিষ্ট ব্যাংকে রেমিট্যান্সের পরিমাণ বেড়েছে। গত বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রতি মাসে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫ থেকে ২০ মিলিয়ন ডলার। আর এ বছরের আগস্টে এই পরিমাণ লাফিয়ে ১২৭ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। বেড়েছে ঢাকা ব্যাংকের রেমিট্যান্সও। স্বাভাবিক সময়ে এই ব্যাংকের মাসিক রেমিট্যান্স প্রাপ্তির গড় পরিমাণ ছিল ৩ থেকে ৪ মিলিয়ন ডলার, যা গেল আগস্টে প্রায় ২৬ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। ডলার বাজারে অস্থিরতা শুরুর আগে গড়ে প্রতি মাসে ৩ থেকে ৪ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেতো শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক। গত মাসে এই ব্যাংকের রেমিট্যান্স আয় হয়েছে প্রায় ৩৪ মিলিয়ন ডলার। একই মাসে, ব্র্যাক ব্যাংকের রেমিট্যান্স আয় হয়েছে ৮৯ মিলিয়ন ডলার, যা আগের মাসগুলোতে গড় হিসাবে ছিল ৩০ থেকে ৪০ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশে কার্যরত প্রায় ৬০টি ব্যাংকের মধ্যে অন্তত অর্ধেকেরই অভ্যন্তরীণ রেমিট্যান্স অর্জন কমেছে। অথচ বাকিদের রেমিট্যান্স বেড়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। এদিকে ডলারের হার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পদক্ষেপ নিচ্ছে জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংকগুলো এখনো রেমিট্যান্সের ডলার বিনিময় হার নিয়ে প্রতিযোগিতা করছে।