ঢাকা ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মূল্যস্ফীতির কারণে বাড়ছে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার

মূল্যস্ফীতির কারণে বাড়ছে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার

উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে দেশে জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে নাভিশ্বাস অবস্থা সাধারণ মানুষের। আয় তেমন না বাড়লেও খরচ বেড়েছে অধিকাংশের। অনেকেই ধারদেনা করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন অনেকে। এ অবস্থায় সুপারশপগুলোতে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন বাড়ছে। মূলত এখানে কেনাকাটায় ৪৫ দিনের জন্য ঋণ পরিশোধের সুযোগ পান গ্রাহক। কেনাকাটাও ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন হয়ে থাকে। এ সুযোগই কাজে লাগাচ্ছেন গ্রাহক। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, গত আগস্টে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪৩৭ কোটি টাকা। যা আগের মাস জুলাইয়ে ছিল ২ হাজার ৩৪১ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ৯৬ কোটি টাকা বা ৪ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। আগস্ট মাসে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে সুপারশপে ১ হাজার ২১৮ কোটি টাকা কেনাকাটা হয়েছে, যা মোট লেনদেনের ৪৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ। অন্যদিকে, জুলাই মাসে সুপারশপে কেনাকাটায় লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১৭৩ কোটি টাকা বা মোট লেনদেনে ৫০ দশমিক ১১ শতাংশ। তথ্যমতে, শতকরা হিসাবে আগস্টে লেনদেন কমলেও টাকার পরিমাণে লেনদেন বেড়েছে। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীর খরচের ধরণ বিবেচনায় গ্রাহক খুচরায় ১২ দশমিক ৩৪ শতাংশ কেনাকাটা করে থাকেন। তারা ইউটিলিটির জন্য ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ লেনদেন করে থোকেন। ওষুধ কেনাকাটায় ৫ দশমিদ ৯৫ শতাংশ, পোশাকে ৪ দশমিক ৫২ শতাংশ, ফান্ড ট্রান্সফারে ৩ দশমিদ ৪৭ শতাংশ, পরিবহন কাজে ৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ, ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ২ দশমিক ১৮ শতাংশ, পেশা ও সরকারি সেবায় ১ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ লেনদেন হয়ে থাকে। হাবিবুর রহমান নামে একজন ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারী জানান, আমার আয়ের সিংহভাগই খরচ হয়ে যায় মাসের শুরুতে। মূলত দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় এমনটা হয়। পরে ধার করে চলা লাগত। এখন আমি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করি। এর মাধ্যমে ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে লেনদেন করি। আর ধার করা লাগে না আবার ক্রেডিট কার্ডেও ৪৫ দিনের সময় পাওয়া যায়। ব্যাংকগুলোও ক্রেডিট কার্ডের প্রচারণা করছে জোরেসোরে। একটি বেসরকারি ব্যাংকের কার্ড রিটেইল বিভাগের প্রধান জানান, নিত্যপণ্যসহ নানা পণ্য কিনতে ক্রেডিট কার্ডে ছাড় দেওয়া হয়ে থাকে। আমরা গ্রাহকের সুবিধার কথা বিবেচনায় এনে নানা অফার দিয়ে প্রচার করছি। গ্রাহক যাতে এসব অফার নিতে পারেন। অন্যদিকে, দেশের বাইরে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার হয়ে থাকে ২৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ। এর সিংহভাগই খরচ হয় ডিপার্টমেন্টাল স্টোর বা সুপারশপে। খুচরা আউটলেটে ব্যবহার হয় ১৫ দশমিক ৯২ শতাংশ। বিদেশের বেশি ব্যবহার হয় ভিসা কার্ডের মাধ্যমে, যা প্রায় মোট লেনদেনের ৭২ দশমিক ৬ শতাংশ, মাস্টার কার্ডের মাধ্যমে খরচ হয় ১৭ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ, এমএক্স কার্ডের মাধ্যমে খরচ হয় ১০ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। ক্রেডিট কার্ডে মাধ্যমে ভারতে ব্যবহার হয়ে থাকে ১৭ দশমিক ৬২ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহার হয় ১৬ দশমিক ৩২ শতাংশ, থাইল্যান্ডে ব্যবহার হয় ৯ দশমিক ৫১ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ব্যবহার হয় ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ, সিঙ্গাপুরে ৭ দশমিক ৬৮ শতাংম, কানাডায় ৬ দশমিক ৭১ শতাংশ, আরব আমিরাতে ৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ, মালয়েশিয়ায় ৫ দশমিক ৪০ শতাংশ, সৌদি আরবে ২ দশমিক ১৮ শতাংশ ব্যবহার হয়। আগস্ট মাসে বিদেশি নাগরিকরা দেশের মধ্যে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে খরচ করেছেন ২১৮ কোটি টাকা। এসব নাগরিকদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ২৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে নাগরিক ১২ দশমিক ৩৯ শতাংশ, ভারতের নাগরিক ১০ দশমিক ৯২ শতাংশ, সিঙ্গাপুরের নাগরিক ৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ ক্রেডিট কার্ডে মাধ্যমে খরচ করেছেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত