ঢাকা ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শাকের দাম বেড়ে দ্বিগুণ

সবজির দাম শুনে হতবাক ক্রেতা

অধিকাংশ সবজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা
সবজির দাম শুনে হতবাক ক্রেতা

এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব শাকের দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। সমান গতিতে বাড়ছে সবজির দামও। শীতকালীন সবজি বাজারে আসতে শুরু করার পরও অধিকাংশ সবজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকার কিংবা তার কাছাকাছি দামে। বেশ কিছু সবজির মূল্য আকাশছোঁয়া। শাকসবজি কিনতে বাজারে এসে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। তাদের অভিযোগ, পচনশীল পণ্য শাকসবজির বাজারেও এখন চলছে সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের কারণে অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন সবজির দাম অনেক বেশি।

তারা বলেন, এখন বৃষ্টি-বাদল নেই, আসতে শুরু করেছে শীতকালীন সবজি, তবু পেঁপে ছাড়া সব সবজির দাম বাড়তি। বিক্রেতারাও দাম বাড়ার বিষয়টি স্বীকার করছেন। তারা বলছেন, সবজির সরবরাহ কম তাই দাম বেশি। শীতকালীন সবজি পুরোদমে বাজারে আসতে শুরু করলে দাম কমবে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শাল-শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। অথচ এক সপ্তাহ আগেও একই আঁটি বিক্রি হয়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকায়। লাউশাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। অথচ এক সপ্তাহের আগে লাউশাকের আঁটি বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। একইভাবে ২০ টাকা আঁটির ডাটাশাক বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। পালনশাক বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা আঁটিতে। মুলাশাক বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা আঁটিতে। আর কলমি শাক বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা আঁটি। মুগদা বাজারের শাক নিতে আসা শহিদুল ইসালাম বলেন, শাকের দাম শুনে আমি অবাক। শাকসবজি তো বাংলাদেশে উৎপাদন হয়। এগুলোতে তো আর আর রাশিয়া-ইউক্রেন কিংবা ইসরাইল ও গাজার যুদ্ধের প্রভাব নেই, তবু কেন দাম বাড়ছে। তিনি বলেন, তিন দোকান ঘুরে এক আঁটি লাউশাক কিনেছি ৫৫ টাকা দিয়ে, একটা কী মানা যায়? মুগদায় ৭ বছর ধরে ব্যবসা করা শাহজালাল বলেন, শাকসবজির সবকিছুর দাম বাড়ছে। আমার জীবনে এত দামে শাক বিক্রি করিনি। দাম বাড়ছে কেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের বেশি দামে কিনতে হয়, তাই বেশি দামে বিক্রি করি। একই কথা বলেন বাড্ডার ব্যবসায়ী শাহ-আলম। ক্রেতা সেজে দাম জানেতে চাইলে তিনি বলেন, শালশাকের আঁটি ২৫ টাকা। লাউশাক ৫০ টাকা। পুঁইশাক ৩০ টাকা। কততে দেবেন- জানতে চাইলে উত্তরে তিনি বলেন, এক দাম, দামাদামি করবে না। নিলে নেন, না নিলে বিরক্ত করবেন না। সব জিনিসের দাম বাড়তি, শুধু শাকের দাম বাড়ালেই দোষ।

সবজির দাম শুনে হতবাক ক্রেতা : রাজধানীর বাজারগুলোতে শীতকালীন সবজি লাউ, টমেটো, ফুলকপি, সিম, মুলা ও বরবটি আসছে শুরু করেছে। তবু আগের সেই চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে এসব সবজি। অধিকাংশ সবজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। ফলে বাজারে এসে চরম বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ।

মধ্যবাড্ডা বাজার ঘুরে দেখা যায়, শীতকালীন সবজি সিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি। ৪০ থেকে ৫০ টাকার লাউ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা পিস। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি। গাজর বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজিতে। বরবটি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি। করলা ও বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১১০ টাকা কেজিতে। কচুর লতি ও কচুর মুখী বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে।

শীতকালীন সবজি মূলা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। পটল, ঝিঙে, ধুন্দুল বিক্রি হচ্ছে একই দরে। প্রতি পিস ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, কুমড়া ৬০ টাকা এবং কাঁচামরিচ ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া শসা ও আলু ৬০ টাকা কেজি। আর সব চেয়ে কম দামি পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজিতে। মধ্যবাড্ডা বাজারে ৫০০ টাকা নিয়ে এসেছেন সত্তোঊর্ধ্ব ক্রেতা আশিকুল ইসলাম। বাজার করতে এসে সবজির দাম শুনে হতবাক। তিনি চার-পাঁচটি দোকান ঘুরে ১ কেজি করে পটোল ও আলু, একপোয়া কাঁচামরিচ কিনে বাসায় পথ ধরেন। জানতে চাইলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রত্যেকটা সবজির দাম বাড়তি। দুই দিন আগেও আলু কিনেছি ৫০ টাকা কেজি। আজকে কিনেছি ৬০ টাকায়। এটা কী মানা যায়। বাসায় ডাল আছে। আলু নিচ্ছি- বলব আলুর ভর্তা-ডাল রান্না করতে। তাই শাকসবজি কিনলাম না।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত