ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিবিএস ২০২২-এর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন

ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করেন ৭৮ শতাংশ শ্রমিক

ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করেন ৭৮ শতাংশ শ্রমিক

দেশের কল-কারখানাগুলো ধীরে ধীরে সবুজায়নের দিকে গেলেও এখনো ৭৮ দশমিক ৩ শতাংশ শ্রমিক ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করছেন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রকাশিত (বিবিএস) শ্রমশক্তি জরিপ ২০২২-এর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। বিবিএস বলছে, জরিপের সময় শ্রমিকদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল তাদের কাজের পরিবেশ কেমন। এতে বেশ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর নেওয়া হয়েছিল তাদের কাছ থেকে। এতে দেখা যায়, ৩১ দশমিক ৭ শতাংশ ধুলো, শব্দ দূষণ ও ধোঁয়ায়, ৩০ শতাংশ অতিরিক্ত গরম কিংবা ঠান্ডায় এবং ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ শ্রমিককে ঝুঁকিপূর্ণ যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে হয়। জরিপে অংশ নেওয়া ৩১ দশমিক ৭ শতাংশই মনে করেন শব্দ দূষণ, ধুলো, ধোঁয়া, কম্পনে কাজ করা তাদের কাছে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এদের মধ্যে শহরের শ্রমিকরাই বেশি ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করেন। তাদের বক্তব্য অনুসারে সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ কাজ হলো অতিরিক্ত গরমের মধ্যে অথবা অতিরিক্ত ঠান্ডার মধ্যে কাজ করা। গরমে অথবা ঠান্ডায় সবেচেয়ে বেশি কাজ করেন নারীরা, এ হার ২৩ শতাংশ, বাকি ১৫ দশমিক ৭ শতাংশ পুরুষরা গরম কিংবা ঠান্ডায় কাজ করেন। শ্রম আইন ২০০৬-এর ৫১ থেকে ৯৯ ধারাসমূহে শ্রমিকের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। শ্রম আইনের উক্ত ধারাসমূহ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, শ্রমিকের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কলকারখানা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, শ্রমিকদের যাতে স্বাস্থ্যহানি না ঘটে এজন্য পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল ও যথাযথ তাপমাত্রা বজায় রাখা, প্রত্যেক শ্রমিকের জন্য অন্তত ৯ দশমিক ৫ কিউবিক মিটার পরিমাণ জায়গার ব্যবস্থা করা, পান করার জন্য বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা, মহিলা এবং পুরুষ শ্রমিকদের জন্য পৃথকভাবে শৌচাগার ও প্রক্ষালন কক্ষের ব্যবস্থা করা মালিকের দায়িত্ব। একই সঙ্গে শ্রমিকের ক্ষতি হতে পারে এমন কোনো ভারী জিনিস উত্তোলন, বহন অথবা নাড়াচাড়া করতে না দেওয়ার ব্যাপারেও শ্রম আইনে উল্লেখ রয়েছে। শ্রমিকের কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অগ্নি দুর্ঘটনার কারণে অথবা অন্য কোনো জরুরি প্রয়োজনে বহির্গমনের জন্য প্রত্যেক তলার সঙ্গে সংযোগ রক্ষাকারী অন্তত একটি বিকল্প সিঁড়িসহ বহির্গমনের উপায় এবং প্রত্যেক তলায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জামের ব্যবস্থা করা উচিত। কাজ চলাকালীন প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে কোনো কক্ষ হতে বহির্গমনের পথ তালাবদ্ধ বা আটকে রাখা যাবে না। কোনো দরজা স্লাইডিং টাইপের না হলে এমনভাবে তৈরি করতে হবে যেন তা বাইরের দিকে খোলা যায় অথবা যদি কোনো দরজা দু’টি কক্ষের মাঝখানে হয়, তাহলে তা ভবনের নিকটতম বহির্গমন পথের কাছাকাছি দিকে খোলার ব্যবস্থা থাকতে হবে। বহির্গমনের পথ বাধাগ্রস্ত কিংবা পথে কোনো প্রতিবন্ধকতাও তৈরি করা যাবে না। প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে সাধারণ বহির্গমনের জন্য ব্যবহৃত পথ ব্যতীত অগ্নিকাণ্ডকালে বহির্গমনের জন্য ব্যবহার করা যাবে- এরূপ প্রত্যেক জানালা, দরজা বা অন্য কোনো বহির্গমন পথ স্পষ্টভাবে লাল রঙ দ্বারা বাংলা অক্ষরে অথবা অন্য কোনো সহজবোধ্য প্রকারে চিহ্নিত করতে হবে। কর্মরত প্রত্যেক শ্রমিককে অগ্নিকাণ্ডের বা বিপদের সময় তৎসম্পর্কে হুঁশিয়ার করার জন্য এবং স্পষ্টভাবে শ্রবণযোগ্য হুঁশিয়ারি সঙ্কেতের ব্যবস্থা থাকতে হবে। প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেক কক্ষে কর্মরত শ্রমিকদের অগ্নিকাণ্ডের সময় বিভিন্ন বহির্গমন পথে পৌঁছার সহায়ক একটি অবাধ পথের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত