ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পোশাক শ্রমিকদের মজুরি গ্রেড কমাতে রাজি মালিকপক্ষ

পোশাক শ্রমিকদের মজুরি গ্রেড কমাতে রাজি মালিকপক্ষ

তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর লক্ষ্যে গঠিত নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সভা চূড়ান্তভাবে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে। তবে এ সভায় মজুরি নির্ধারণের সিদ্ধান্ত না হলেও শ্রমিকদের মজুরির গ্রেড সাতটি থেকে কমিয়ে পাঁচটি করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে মালিকপক্ষ। গতকাল বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মজুরি বোর্ডের অফিসে সভা শুরু হয়। মালিকদের পক্ষ থেকে ছিলেন তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি ও স্টার্লিং গ্রুপের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান। অন্যদিকে শ্রমিকপক্ষে ছিলেন জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি। সভায় শেষে জানানো হয়, মজুরির সাতটি গ্রেডের বদলে পাঁচটি গ্রেড হবে। এ বিষয়ে মালিকপক্ষ সম্মত হয়েছে। তবে নভেম্বরের মধ্যে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার চেষ্টা চলছে। আগামী মিটিংয়ে এ বিষয়ে প্রস্তাবনা আকারে জানানো হবে। এ াড়া সরকার যা সিদ্ধান্ত নেবে, মালিকপক্ষ তা মেনে নেবে। সভায় মালিকপক্ষ থেকে দাবি করা হয়, যারা রাস্তায় আন্দোলন করছেন তারা বেশিরভাগই শ্রমিক না। সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে আন্দোলনের কোনো মানে হয় না। শ্রমিক হত্যার ব্যাপারে মালিকপক্ষ থেকে বলা হয়, গুলি অনেকেই করতে পারে। কেউ বলতে পারবে না সরকার বা পুলিশ গুলি করেছে। বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সরকার যা সিদ্ধান্ত নেবে তাই মেনে নেয়া হবে। যারা রাস্তা-ঘাট বন্ধ করে আন্দোলন করছেন তাদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার নয়। সভায় শ্রমিকপক্ষ থেকে বলা হয়, ২০ হাজার ৩৯৩ টাকার কথা আমরা বলেছি। এর মধ্যে কেউ এসে বলছে ২৩ হাজার টাকা, কেউ আবার বলছে ২৫ হাজার টাকা। এটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য করা হচ্ছে। শ্রমিকপক্ষ থেকে কাজে যোগদানের আহ্বানও জানানো হয়। নৈরাজ্য সৃষ্টি হলে ট্রেড ইউনিয়ন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। যারা রাস্তায় আছেন তাদের ভুল বোঝানো হচ্ছে। তৃতীয় পক্ষ সুবিধা আদায় করার চেষ্টা করছে বলে দাবি করা হয়। নিম্নতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলি জানান, মজুরি আরো বাড়ানোর পক্ষে মালিকপক্ষ সম্মত হয়েছে। শিগগিরই এ বিষয়ে আরেকটি মিটিং হবে। পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১০ হাজার ৪০০ টাকা করার যে প্রস্তাব মালিকপক্ষ দিয়েছিল, তা আরো বাড়াতে রাজি হয়েছে তারা। সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মালিকপক্ষের প্রতিনিধি সিদ্দিকুর রহমান। তবে মজুরি ঠিক কত বাড়তে পারে তা তিনি জানাননি। তিনি বলেন, ‘আমরা আগে যে প্রস্তাব দিয়েছিলাম, তা থেকে মজুরি বাড়বে। কত বাড়বে তা মালিকপক্ষের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করবো।’ পরবর্তী সভা চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন বোর্ডের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী মোল্লা। শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, ‘আমরাও বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীতে বিভিন্ন শ্রমিক পক্ষের সাথে আলোচনা করবো।’ গত ২২ অক্টোবরের সভায় তিনি ২০ হাজার ৩৯৪ টাকা মজুরির প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তার প্রস্তাবের কাছাকাছি মজুরির প্রস্তাব মালিকপক্ষ দিবে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি আশাবাদী।’ অবশ্য, মজুরি নিয়ে আলোচনার মধ্যে শ্রমিকদের কাজ বন্ধ করে রাস্তায় নেমে আসা ও ভাঙচুর করার বিষয়টিকে তিনি সমর্থন করেন না বলে জানান রনি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত