এবার চিনির বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে চিনি আমদানিতে কাস্টমস শুল্ক অর্ধেক কমানো হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত গেজেট প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, অতিরিক্ত স্বাদ-গন্ধ-রংবিহীন অপরিশোধিত চিনির আমদানি শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি টনে ১ হাজার ৫০০ টাকা। অন্যান্য চিনির শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি টনে ৩ হাজার টাকা। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এই করহার অবিলম্বে কার্যকর হবে এবং ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত তা কার্যকর থাকবে। জানা যায়, অপরিশোধিত চিনির কাস্টমস শুল্ক আগে ছিল ৩ হাজার টাকা আর অন্যান্য চিনির শুল্ক ছিল ৬ হাজার টাকা। বর্তমানে চিনি আমদানিকারকদের ১৫ শতাংশ ভ্যাট, ৩০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক ও ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর ছাড়াও প্রতি টন চিনিতে নির্দিষ্ট ৩ হাজার টাকা কর দিতে হয়। সেটা কমিয়ে এবার ১ হাজার ৫০০ টাকা করা হলো। সব মিলিয়ে প্রতি কেজি চিনি ভোক্তার হাতে যাওয়া পর্যন্ত মোট কর আরোপিত হয় ৬০ শতাংশের ওপর, টাকার অঙ্কে যা ৪০ থেকে ৪২ টাকা। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি চিনি ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিনির এই উচ্চ দামের রাশ টানতে এ বছর সরকার বেশ কয়েকবার শুল্ক ছাড়সহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও শেষমেশ তেমন কোনো কাজ হয়নি। দেশে চাহিদার তুলনায় চিনি উৎপাদিত হয় কম-বেশি ১ শতাংশ। এখন স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয় কম-বেশি ৩০ হাজার টন। আমদানি হয় ২২ থেকে ২৪ লাখ টন। মূলত অপরিশোধিত আকারে চিনি আমদানি হয় বেশি। অপরিশোধিত চিনি বা কাঁচামাল এনে প্রক্রিয়াজাত করে চিনি উৎপাদন করে পরিশোধন কারখানাগুলো। আর ওষুধ কোম্পানি ছাড়া ২৫ থেকে ২৭টি খাদ্যপণ্য প্রক্রিয়াজাত ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত চিনি আমদানি করে। চিনির আমাদনি শুল্ক কমিয়েছে সরকার। আমদানি করা অপরিশোধিত চিনির ক্ষেত্রে প্রতি টনে ১ হাজার ৫০০ টাকা এবং এবং পরিশোধিত চিনির ক্ষেত্রে প্রতি টনে ৩ হাজার টাকা আমদানি শুল্ক কমানো হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এতে স্বাক্ষর করেছেন এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, অপরিশোধিত চিনি আমদানির ক্ষেত্রে টন প্রতি আমদানি শুল্ক দিতে হবে ১ হাজার ৫০০ টাকা। আর পরিশোধিত চিনির ক্ষেত্রে টন প্রতি আমদানি শুল্ক দিতে হবে ৩ হাজার টাকা। আগে অপরিশোধিত চিনি আমদানির ক্ষেত্রে টন প্রতি আমদানি শুল্ক দিতে হতো ৩ হাজার টাকা। আর পরিশোধিত চিনির ক্ষেত্রে টন প্রতি আমদানি শুল্ক ছিল ৬ হাজার টাকা। অর্থাৎ, উভয় ধরনের চিনির আমদানি শুল্ক কমিয়ে অর্ধেক করা হয়েছে। শুল্ক কমানোর এ সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে এনবিআরের প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত চিনির আমদানি শুল্ক ছাড়ের এই সুবিধা পাওয়া যাবে। আমদানি শুল্কের পাশাপাশি চিনিতে নিয়ন্ত্রণ মূলক শুল্ক রয়েছে ৩০ শতাংশ। এছাড়া আমদানিকারকদের ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। সেই সঙ্গে অগ্রিম আয়কর দিতে হয় ২ শতাংশ। বর্তমানে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি চিনি ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান টিসিবির হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে খুচরা পর্যায়ে চিনির দাম বেড়েছে ২০ দশমিক ৪৫ শতাংশ। এক বছর আগে প্রতি কেজি চিনির দাম ছিল ১০৫ থেকে ১১৫ টাকা।