আমদানিতে কমছে ডিম-আলুর দাম
প্রকাশ : ০৭ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আরিয়ান স্ট্যালিন
২ নভেম্বর অনুমতির পর গেল তিন দিনে দেশে এসেছে প্রায় ১ হাজার ২০০ টন আলু। খুচরায় কেজিপ্রতি কমেছে ১০ টাকা। আমদানিকারদের আশা, শিগগিরই আলুর দাম ভোক্তার নাগালে আসবে। বছরে দেশে আলু উৎপাদন ১ কোটি ১২ লাখ টন। আর চাহিদা ৯০ লাখ টন। এই পরিসংখ্যান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের। সরকারি হিসাবেই এ বছর আলুর উদ্বৃত্ত ২২ লাখ টন। চাহিদা ও উৎপাদনের এই বিশাল ফারাক থাকার পরও বেশ কয়েক দিন ধরেই টালমাটাল আলুর বাজার। পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত আমদানির ওপর ভর করে সরকার। ২ নভেম্বর অনুমতির পর পরই শুরু হয় আমদানি। এরই মধ্যে তিন দিনে দেশে এসেছে প্রায় ১ হাজার ২০০ টন আলু। তবে তাতেও খুব একটা চিত্র বদলায়নি। পাইকারিতে কিছুটা কমলেও খুচরায় প্রভাব খুবই সামান্য।
রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, এখনো প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। যদিও তা ঠেকেছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। এদিকে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে বেশ কমেছে ডিমের দাম। প্রতিটি ফার্মের মুরগির ডিমের দাম প্রায় ১ টাকা কমেছে। অর্থাৎ, প্রতি ১০০ ডিম বিক্রি হচ্ছে আগের থেকে ৯০ থেকে ১০০ টাকা কমে। পাইকারিতে কমলেও খুচরায় দাম কমার কোনো লক্ষণই নেই। ফলে বাড়তি দামেই ডিম খেতে হচ্ছে ভোক্তাদের। রাজধানীর তেজগাঁও ডিমের পাইকারি আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি ১০০ পিস ফার্মের বাদামি ডিম ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১ হাজার ১৪০ থেকে ১ হাজার ১৬০ টাকা। এছাড়া প্রায় ৩০ থেকে ৫০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ফার্মের সাদা ডিম। অর্থাৎ পাইকারিতে বাদামি একটি ফার্মের ডিমের দাম পড়ছে ১০ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৬০ পয়সা, যা খুচরা বাজারে এসে ১২ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। এলাকার বাজার এবং পাড়া-মহল্লার দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে ফার্মের মুরগির ডিম। প্রতি হালি ৫০ টাকা। এদিকে দেড় মাস আগে বাজারে প্রতি পিস ডিমের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১২ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। বাস্তবে যা এখনো কার্যকর হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে বাজার নিয়ন্ত্রণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে কয়েক দফায় ১৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেয়। এর মধ্যে রোববার যশোরের বেনাপোল দিয়ে প্রথম দফায় ভারত থেকে ৬১ হাজার ৯৫০ পিস ডিম আমদানি হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় ভারতের পেট্রাপোল বন্দর থেকে ডিমের চালান নিয়ে একটি গাড়ি বন্দরে প্রবেশ করে। পর্যায়ক্রমে এ পথে আরো ডিম আসবে বলে জানান আমদানিকারকের প্রতিনিধিরা। প্রথম দফায় ডিমের আমদানিকারক ঢাকার রামপুরার বিডিএস করপোরেশন। রপ্তানিকারক হলো ভারতের ত্রিপুরার কানুপ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। জানা যায়, বেনাপোল দিয়ে আসা প্রতিটি ডিমের আমদানি মূল্য দেখানো হয়েছে ৫ টাকা ৪৩ পয়সা। এর ওপর সরকারি শুল্ক ১ টাকা ৮০ পয়সা। এলসি খরচ, রপ্তানি খরচ, পোর্ট চার্জ, সিঅ্যান্ডএফ চার্জ, পরিবহণ খরচ ধরলে ৯ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১০ টাকার মধ্যে থাকবে। এসব ডিম বাজারে বিক্রি হবে ১২ টাকা পিস হিসেবে। এদিকে এর আগে ২০১২ সালের জুনে ডিমের হালি ৪০ টাকায় উঠেছিল। তখন সরকার কিছু ডিম আমদানি করে। তাতেই দাম কমে যায়। এবারও যথাযথভাবে ডিম আমদানি হলে দাম আরো নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।