আগামী জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত বন্ধ থাকা তিন দিনের প্যাকেজের দামে সাত দিনের ডেটা প্যাকেজ দিতে মোবাইল অপারেটরদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় ও টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অপারেটরদের ১০ নভেম্বরের মধ্যে সাত দিনের ডেটা প্যাকেজের দাম তিন দিনের ডেটা প্যাকেজের দামে নামিয়ে আনতে বলা হয়েছে। গত ১৪ অক্টোবর তিন দিনের ডেটা প্যাকেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ সিদ্ধান্ত গ্রাহকদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে। মোবাইল অপারেটররা বলেছে, সরকার নির্দেশিত শুল্ক তাদের জন্য বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক নয়। এক মোবাইল অপারেটরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘একটি প্রতিষ্ঠান ১০ গ্রাম প্যাকের দামে ২৫ গ্রাম শ্যাম্পু প্যাক বিক্রি করবে না।’ ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘গত ১৫ অক্টোবর তিন দিনের প্যাকেজ বন্ধ হওয়ার পর মোবাইল অপারেটরগুলো সাত দিনের প্যাকেজের দাম দুই-তিনগুণ বাড়িয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা এর অনুমতি দিতে পারি না- এটা অনৈতিক।’ বৈঠকে মন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের আগে সরকারের সম্মানহানি করতে অপারেটররা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাত দিনের প্যাকেজের দাম বাড়িয়েছে। পরবর্তীতে তিনি বিটিআরসিকে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি আরো বলেছিলেন যে মন্ত্রণালয় নির্বাচনের আগে ডেটার দামে কোনো পরিবর্তনের অনুমতি দেবে না। জবাবে অপারেটররা সভায় জানায়, নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা তাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে। এছাড়া প্রতিটি ডেটা প্যাকেজ চালুর আগে বিটিআরসির কাছ থেকে তারা অনুমতি নিয়েছে। টেলিযোগাযোগমন্ত্রী বলেন, অপারেটররা এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য তিন মাস সময় চেয়েছিল। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা তাদের বলেছি, আপনারা তিন সেকেন্ডও সময় পাবেন না। কারণ, আমরা তাদের যুক্তিকে ভিত্তিহীন বলে মনে করি। আগামী ১৫ জানুয়ারির আগে এ বিষয়ে অপারেটরদের সঙ্গে আলোচনা হবে না।’
নির্বাচনের আগে ভোটারদের সুদৃষ্টি আকর্ষণের উদ্দেশ্যে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কি না- জানতে চাইলে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘নির্বাচন আরেকটি বিষয়, কারণ আমরা চাই না আমাদের তরুণ প্রজন্ম এই সময়ে ডেটা ব্যবহারে নিরুৎসাহিত হোক।
এটাও আমাদের লক্ষ্য।’ এর আগের সিদ্ধান্ত গ্রাহকদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে। টেলিকমিউনিকেশন খাতের বিশেষজ্ঞ ও ভোক্তা অধিকার সংস্থার মতে, এর মাধ্যমে ভোক্তাদের পছন্দের স্বাধীনতা সীমিত করা হলো। এই উদ্যোগটি তৃণমূল, নিম্ন আয়ের ও তরুণদের ওপর আর্থিক প্রভাব ফেলে এবং এর কারণে টেলিকম পরিষেবা, বিশেষত ইন্টারনেটের ব্যবহার কমে।