তেল-গ্যাস আমদানিতে বাড়তি ব্যয় ১৪ বিলিয়ন ডলার

প্রকাশ : ০৭ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

গেল সাড়ে ৩ বছরে জ্বালানি তেল ও এলএনজি আমদানির পেছনে বাড়তি ব্যয় হয়েছে ১৪ বিলিয়ন ডলার। ভূ-রাজনৈতিক টানাপড়েন ও যুদ্ধের কারণে এই ব্যয়ের চাপে টান পড়েছে বাংলাদেশের রিজার্ভে। জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী মনে করেন, আন্তর্জাতিক লুটেরাচক্রের ডাকাতির বলি হচ্ছে বাংলাদেশের মতো দেশগুলো। নিজস্ব উৎস না থাকায় বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের আমদানি নির্ভরতা প্রায় শতভাগ। ফলে প্রতি বছরই গুণতে হয় বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারের উঠাণ্ডনামার সঙ্গেও বদলায় অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এই খাতে বিপুল ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় চাপে পড়েছে সার্বিক অর্থনীতি। যেমন- বিপিসির হিসাবে, ২০২০ সালে ৫২ লাখ টন জ্বালানি তেল আমদানিতে ২১০ কোটি ডলারের কিছু বেশি ব্যয় হয়েছে। তবে ২০২২-এ ৭০ লাখ টনের জন্য খরচ ছাড়ায় ৭০২ কোটি। অর্থাৎ, ২ বছরে প্রতি টনের গড় ব্যয় বাড়ে ৩ গুণ। যে ধারা অব্যাহত ছিল চলতি বছরেও। বিপিসির তথ্য অনুযায়ী, এই সাড়ে ৩ বছরে কেবল জ্বালানি তেলের পেছনে ব্যয় করতে হয়েছে দেড় হাজার কোটি ডলার। ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, পশ্চিমা বিশ্ব বা তেল রপ্তানিকারক কোম্পানিগুলো বলতে গেলে লুটে নিয়ে গেছে। যুদ্ধের নামে আমাদের মতো দেশগুলো থেকে টাকাগুলো নিয়ে গেছে তারা। যদি জ্বালানি পণ্যের দাম না বাড়ত, তাহলে বাংলাদেশের রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারের ওপরে থাকত। কেবল জ্বালানি তেল নয়, সমানতালে ব্যয় বেড়েছে এলএনজি আমদানিতেও। হিসাব অনুযায়ী, ২০২০ সালে ৪২ লাখ টনের জন্য ১৩১ কোটি ডলার খরচ হলেও ২ বছর পর একই পরিমাণ এলএনজির জন্য গুণতে হয় সাড়ে ৩০০ কোটির ওপরে। সবমিলিয়ে গেলো সাড়ে ৩ বছরে তেল ও গ্যাস কিনতে খরচ হয় প্রায় আড়াই হাজার কোটি ডলার। এই প্রবণতা চলতে থাকলে ২০২৩ শেষে খাতে বাড়তি ব্যয় হবে অন্তত ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, জ্বালানির দর বেড়ে যাওয়ার কারণে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সারের দাম বেড়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার খরচ ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। ফলে মূল্যস্ফীতিও হয়েছে। এগুলো একে অপরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম তামিম বলেন, আমরা যদি সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান বা জাপানের দিকে তাকাই, তাহলে দেখা যাবে; যারা জ্বালানি আমদানির ওপর নির্ভরশীল, তারা একই আর্থিক সংকটের মধ্যদিয়ে গেছে। সাম্প্রতিক মধ্যপ্রাচ্য সংকটে আবারও অস্থির হওয়ার আভাস রয়েছে জ্বালানির বাজার, যার প্রভাবে আরো চাপে পড়তে পারে বাংলাদেশ।