অবশেষে নানা আলোচনা-সমালোচনার পর বেসরকারি চাকরিজীবীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের আয়ের ওপর আরোপিত কর কমাতে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। চাপের মুখে বেসরকারি প্রভিডেন্ট ফান্ডের ওপর কর কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এটি ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে অর্থমন্ত্রী সারসংক্ষেপ অনুমোদন করেছেন। চলতি সপ্তাহে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে। দায়িত্বশীল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জাতীয় সংসদে জুনে পাস হওয়ায় নতুন আয়কর আইনে ট্রাস্ট ও তহবিলকে (প্রভিডেন্ট ফান্ড ও গ্রাচ্যুইটি ফান্ড) কোম্পানি হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। এ কারণে বেসরকারি প্রভিডেন্ড ফান্ডকে নিরীক্ষিত হিসাব বিবরণীসহ রিটার্ন দাখিল এবং ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ হারে করপোরেট কর দেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়। যদিও সরকারি চাকরিজীবীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডকে করের আওতামুক্ত রেখে এনবিআর প্রজ্ঞাপন জারি করে। পুরোনো আয়কর আইনে সরকারি-বেসরকারি প্রভিডেন্ট ফান্ড করের আওতামুক্ত ছিল। সাধারণত প্রভিডেন্ট ও গ্রাচ্যুইটি ফান্ডের অর্থ সরকারি সিকিউরিটিজ বা সঞ্চয়পত্র কেনায় বা ব্যাংকে এফডিআরে বিনিয়োগ করা হয়। এর বিপরীতে যে সুদ পাওয়া যায় তার ওপর ৫ থেকে ১০ শতাংশ হারে উৎসে কর কেটে রাখা হয়। বাকি অর্থ প্রভিডেন্ট ফান্ডে যুক্ত হয়। বেসরকারি চাকরিজীবীরা চাকরি ছেড়ে দিলে বা অবসরে গেলে প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থ পেয়ে থাকেন। অবশ্য প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থের ওপর চাকরিজীবীদের কর দিতে হয় না। নতুন আয়কর আইনে প্রভিডেন্ট ফান্ডকে কোম্পানি হিসেবে সংজ্ঞায়িত করায় বিনিয়োগজনিত মুনাফার ওপরে ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ হারে করপোরেট কর দিতে হতো। অর্থাৎ, উৎসে কর হিসাবে ১০ শতাংশ কেটে রাখার পরও একই মুনাফার ওপর আরো ১৭ দশমিক ৫০ শতাংশ কর দিতে হতো। চলতি সপ্তাহে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে করপোরেট কর ১৫ শতাংশ করা হলে আগের চেয়ে অতিরিক্ত আরো ৫ শতাংশ কর দিতে হবে। তাতে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবেন বেসরকারি চাকরিজীবীরা। কর হার সাড়ে ২৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মোহাম্মদ রহমাতুল মুনিম। বোর্ডের কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। চলতি অর্থবছরের বাজেটে বেসরকারি চাকরিজীবীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের আয়ে কর বাড়িয়ে ১০ শতাংশ থেকে সাড়ে ২৭ শতাংশ করে এনবিআর।