ভোক্তা মূল্যসূচকের হালনাগাদ তথ্য
অক্টোবরে খাদ্যে রেকর্ড মূল্যস্ফীতি
প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। মূল্যস্ফীতি কমাতে নানা উদ্যোগ নিলেও বাজারে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। একটি পরিবারে যত অর্থ খরচ হয়, তার অংশই খরচ হয় খাবার কিনতে। সেই খাবারের খরচ জোগানোর ক্ষেত্রে অনেক সাধারণ মানুষ এখন চাপে পড়ছেন।
মূল্যস্ফীতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাদের আয় বাড়ছে না। গত অক্টোবরে নতুন করে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে রেকর্ড ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ হয়েছে, গত বছরের এই সময়ে যা ছিল ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ। গত মাসে অর্থাৎ সেপ্টেম্বরে যা ছিল ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আর আগের মাস আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। সোমবার (৬ নভেম্বর) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মূল্যস্ফীতি নিয়ে চলতি বছরের অক্টোবরে ভোক্তা মূল্যসূচকের (সিপিআই) হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে। বিবিএসের প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, গত বছরের অক্টোবরে খাদ্যখাতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ। অর্থাৎ বছরওয়ারী পয়েন্ট টু পয়েন্টের ভিত্তিতে ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে এক লাফে খাদ্যখাতে মূল্যস্ফীতির হার হয়েছে ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। অর্থাৎ, এক বছরে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ৪ দশমিক ০৬ শতাংশ। গত অক্টোবর আলু, মাছ, চাল, ডাল, তেল, লবণ, মাছ, মাংস, সবজি, মসলা ও তামাকজাতীয় পণ্যের দাম বাড়ায় খাদ্যে মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে বলে জানিয়েছে বিবিএস। বিবিএসের হিসাবে, গত আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ, যা গত ১১ বছর ৭ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২ দশমিক ৭৩ শতাংশে উঠেছিল। একদশকের মধ্যে গত আগস্টে হঠাৎ খাদ্য মূল্যস্ফীতি প্রথমবারের মতো ২ অঙ্কের ঘরে উঠে যায়। অথচ চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের মধ্যে রাখার। কিন্তু চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে গড় মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশের মধ্যে। অক্টোবরে সাধারণ মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে এ খাতে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশে। বিবিএসের তথ্যে দেখা যায়, অক্টোবরে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। এর অর্থ হলো গত বছরের অক্টোবরে যে খাদ্যপণ্য ১০০ টাকায় কেনা গেছে, এ বছরের অক্টোবরে তা কিনতে হয়েছে ১১২ টাকা ৫৬ পয়সায়। অর্থাৎ, মাত্র ১০০ টাকার খাবার কিনতে এক বছরে ১২ টাকা ৫৬ পয়সা বাড়তি খরচ করতে হয়েছে।
আয়ের সঙ্গে জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও তা কিনতে তেমন সমস্যা নেই। কিন্তু দেশে মূল্যস্ফীতির চেয়ে মজুরি বৃদ্ধির হার এক বছর ধরেই কম। গত অক্টোবরে মজুরি বৃদ্ধির হার ছিল ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ। তবে সাধারণত মূল্যস্ফীতির চেয়ে মজুরি বৃদ্ধির হার বেশি থাকে। খাদ্যখাতে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আলু ও ডিম ডিস্টার্ব করেছে। এ কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। তবে একটা ভালো দিক মূল্যস্ফীতি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে না, ধীরে ধীরে বাড়ছে। তারপরও আমরা এটা চাই না। তবে আগামী মাসে কৃষকের ঘরে ঘরে আমন ধান উঠবে তখন মূল্যস্ফীতি কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।