টিসিবির স্মার্ট কার্ড বিতরণ
উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যে বাড়তি সুবিধা নিচ্ছে অসাধু চক্র
বললেন বাণিজ্যমন্ত্রী
প্রকাশ : ১০ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ১ কোটি ফ্যামিলি বা পরিবার কার্ডকে স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরিত করায় ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে। সেই সঙ্গে অসামঞ্জস্যতাও দূর হবে। আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে সারা দেশে বিনা মূল্যে এই স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে উল্লেখ করে কার্ড পেতে কার্ডধারীদের আর্থিক লেনদেন থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মালিবাগে পিডব্লিউডি কলোনি অডিটরিয়ামে টিসিবি আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ১ কোটি ফ্যামিলি কার্ডকে স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরিত করে বিনা মূল্যে বিতরণ এবং কার্ডধারীদের কাছে চালসহ টিসিবির পণ্য সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন তিনি। এ সময় তিনি স্বীকার করেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যে বাড়তি সুবিধা নিচ্ছেন। টিপু মুনশি বলেন, গরিব-দুঃখী, অসহায় মানুষ যাঁরা দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের কথা বিবেচনা করে ১ কোটি ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে ৫ কোটি মানুষকে কম মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বাংলাদেশে যে পরিমাণ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে, তার চেয়ে বেশি মানুষের কাছে সরকার ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রয় করছে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ডিম ও আলু আমদানি শুরু হওয়ায় বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ডিমের একটি চালান দেশে আসার পর সরকার থেকে যে দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, তার চেয়ে কম মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। আগামী মাসের মাঝামাঝি সময় আলু, পেঁয়াজসহ অন্যান্য শাকসবজির বাজার স্বাভাবিক হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। পেঁয়াজ প্রসঙ্গে টিপ মুনশি আরও বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম নির্ভর করে দেশের উৎপাদনের ওপর। এখন পেঁয়াজের শেষ সময়। আমরা ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে ঘাটতি পূরণ করি, কিন্তু ভারত রপ্তানি নিরুৎসাহিত করতে প্রথমে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে; এর কিছুদিন পরেই তারা প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজের রপ্তানি মূল্য ৮০০ ডলার নির্ধারণ করে। এতে তাদের পেঁয়াজ রপ্তানি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে বাজারে দাম বেশি।’ ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়ার পরও চালান আসতে দেরি হওয়া প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ডিম আমদানির ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার সনদ ছিল অন্যতম। এসব শর্ত পূরণে কিছু আইনি জটিলতা থাকায় দেশে চালান আসতে দেরি হয়েছে। টিপু মুনশি বলেন, ডিম, আলু ও পেঁয়াজের পরিস্থিতি নিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সুযোগ নিচ্ছেন এবং মানুষ কষ্ট পাচ্ছেন, এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। বৈশ্বিক কারণে মূল্যস্ফীতি নিয়ে ভীষণ দুঃসময় পার করতে হচ্ছে, এর মধ্যে বাড়তি সুবিধা নিচ্ছে অসাধু চক্র। রাজনৈতিক পরিচয় যা-ই হোক না কেন, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ার করেন বাণিজ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। এ সময় টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান, পিএসসি এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মামুন রশিদ শুভ্র প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।