ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

করমুক্ত সর্বজনীন পেনশনের টাকা

করমুক্ত সর্বজনীন পেনশনের টাকা

সর্বজনীন পেনশন স্কিমে (ইউপিএস) অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা তাদের প্রিমিয়ামের ওপর কর ছাড় পাবেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকার প্রবর্তিত এই স্কিমে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের স্কিমের মেয়াদ পূর্তির পর তাদের টাকার ওপর কর দিতে হবে না। এনবিআরের কর আইন বিভাগের দ্বিতীয় সচিব বাপন চন্দ্র দাস বলেন, ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিমকে জনপ্রিয় করে তুলতেই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ, স্কিমটি জনগণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক নিরাপত্তা হিসেবে কাজ করবে।’ ১৮ বছরের বেশি বয়সি সবাইকে এই স্কিমের আওতায় আনতে সরকার গত আগস্টে তা চালু করে। জাতীয় পরিচয়পত্রের ভিত্তিতে প্রবাসীসহ ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সি সবাই এই সুবিধা নিতে পারবেন। আগে শুধু সরকারি, আধা-সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা পেনশন সুবিধা পেতেন। বিশেষ বিবেচনায় ৫০ বছরের বেশি বয়সি ব্যক্তিরাও পেনশন স্কিমে অংশ নিতে পারবেন। নতুন আইনের মাধ্যমে বেসরকারি খাতের কর্মীদের পেনশন স্কিমের আওতায় আনার লক্ষ্য নিয়েছে সরকার। আগস্টে চালু হওয়া সর্বজনীন পেনশন স্কিমে বিনিয়োগ করলে তার ওপর বিনিয়োগকারীরা কর ছাড় পাবেন এবং সেখান থেকে কোনো ধরনের আয় হলে তা করমুক্ত হবে। গত ৫ নভেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ বিষয়ে একটি আদেশ জারি করেছে, যা গত বুধবার সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। নতুন আয়কর আইনের ৭৮ ধারা অনুযায়ী, কোনো করদাতার করযোগ্য আয়ের ৩% কিংবা আলোচ্য খাতগুলোতে সম্মিলিত বিনিয়োগের ১৫% বা ১০ লাখ টাকার মধ্যে যেটি কম, ওই পরিমাণ অর্থ তিনি কর ছাড় পাবেন। গত আগস্টে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করা হয়। সর্বজনীন পেনশন স্কিমে বর্তমানে আছে মোট চারটি ধরন- প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা ও সমতা। তবে ব্যাপক উৎসাহের সাথে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করা হলেও একে ঘিরে মানুষের আশানুরূপ সাড়া মেলেনি। প্রথম মাসে আনুমানিক ১৩ হাজার লোক বিভিন্ন পেনশন স্কিমের আওতায় আসেন, কিন্তু পরবর্তী মাসে এ সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে মাত্র দুই হাজারে নেমে আসে। এনবিআর সূত্রে জানা যায়, নতুন আয়কর আইন-২০২৩-এর ষষ্ঠ তফসিলে (অংশ-৩) বলা হয়েছে, জীবন বিমার প্রিমিয়াম, প্রভিডেন্ট ফান্ডের চাঁদা, স্বীকৃত ভবিষ্যৎ তহবিলের চাঁদা, সরকারি সিকিউরিটিজ বা মিউচুয়াল ফান্ডে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ, বছরে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা (মাসিক ১০ হাজার) ডিপিএসে বিনিয়োগ ও শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করলে সেই অর্থের ওপর কর রেয়াত বা করছাড় পাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে উল্লিখিত খাতে যে পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করা হবে, তার ১৫ শতাংশ বা ১০ লাখ টাকার কম যে অর্থ হবে, সেই পরিমাণ অর্থ করছাড় পাওয়া যাবে। কিন্তু ষষ্ঠ তফসিলে পেনশন স্কিমের চাঁদার কথা উল্লেখ নেই। অন্যদিকে, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২৩-এর ১৪ (১) (ঢ) ধারায় বলা আছে, পেনশনের চাঁদা বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করে কর রেয়াতের জন্য বিবেচিত হবে এবং মাসিক পেনশন বাবদ প্রাপ্ত অর্থ আয়করমুক্ত থাকবে। তবে আয়কর আইনের ৭৬ (২) ধারায় বলা আছে, আয়কর আইন ছাড়া অন্য কোনো আইন বা আইন হিসেবে পরিগণিত দলিলের মাধ্যমে যদি কোনো ব্যক্তিকে কর অব্যাহতি দেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে ওই আইন বা আইন হিসেবে পরিগণিত দলিলে যাই থাকুক না কেন, এনবিআর প্রজ্ঞাপন দ্বারা ওই ব্যক্তিকে কর অব্যাহতি না দিলে সেই বিধান কার্যকর হবে না। তাই বিষয়টি আইনে অন্তর্ভুক্ত করতে উদ্যোগ নেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। প্রসঙ্গত, গত ১৭ আগস্ট সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত