ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

যশোর ইপিজেড

৫৬৫ একর জায়গায় হচ্ছে যশোর ইপিজেড

সাড়ে ৪ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করবে
৫৬৫ একর জায়গায় হচ্ছে যশোর ইপিজেড

যশোরে ৫৬৫ একর জমির ওপর রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড) করেছে বেপজা। এতে প্রত্যক্ষভাবে ১ লাখ ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে, পরোক্ষভাবে উপকৃত হবে আরো ৩ লাখ মানুষ। এতে ২০০ কোটি মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে বছরে আরও ২৪০ কোটি ডলারের রপ্তানি আয় সম্ভব বলে মনে করছে বেপজা। গত মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘যশোর রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা’ শীর্ষক এই প্রকল্প অনুমোদন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা)। এর মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৮৯২ কোটি ৭২ লাখ টাকা। এর মধ্যে বেপজার নিজস্ব অর্থায়ন ৩৫০ কোটি টাকা। সরকার দেবে ১ হাজার ৫৪২ কোটি ৭২ লাখ টাকা। প্রকল্পটি জুলাই ২০২৩ থেকে জুন ২০২৬ মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে। এটি হবে যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলায়। প্রকল্পের প্রধান কাজের বিষয়ে ডিপিপিতে বলা হয়েছে, ৫৬৫ দশমিক ৮৭১ একর ভূমি অধিগ্রহণ এবং ভূমি উন্নয়ন। ৪৩৮টি শিল্প প্লট সৃষ্টি, রাস্তা নির্মাণ, খাল খনন এবং ড্রেন নির্মাণ। চারটি ছয়তলা কারখানা ভবন, তিনটি ১০তলা ও চারটি ছয়তলা বিভিন্ন ধরনের আবাসিক ভবন, একটি ছয়তলা ও দুটি চারতলা অফিস ভবন এবং দুটি অন্যান্য ভবন নির্মাণ। ১৪টি ১১/০.৪১৫ কেভি সাব-স্টেশন, ১৪.৮৭৪ কিলোমিটার ১১ কেভি এইচটি লাইন ও ১টি ৩৩/১১ কেভি জিআইএস সাব-স্টেশন নির্মাণ। ১৬০টি হাইপ্রেসার সিকিউরিটি লাইট। ১৫.৯০৪ কিলোমিটার সিইটিপি নেটওয়ার্ক। ১৪.৬৭৯ কিলোমিটার পানির লাইন। হেলিপ্যাড একটি এবং স্যানিটারি ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা, বৈদ্যুতিক সুবিধা, সংযোগ রাস্তা, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ জলাধার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সুবিধাদি সৃষ্টি। যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভূমি অধিগ্রহণ শাখার তথ্য মতে, ইপিজেডের জন্য নির্ধারিত স্থানের অধিকাংশ জমিই ব্যক্তি মালিকানার। এর মধ্যে মাত্র দুই একর খাসজমি। পরিকল্পনা কমিশনের মতামতে বলা হয়, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ইপিজেড স্থাপনের মাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে প্রায় দেড় লাখ লোকের ও পরোক্ষভাবে আরো ৩ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। ইপিজেড-সংলগ্ন এলাকায় দেশীয়/বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি, ব্যাকওয়ার্ড ও ফরোয়ার্ড লিংকেজ শিল্পের বিকাশ, আপামর জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্থানীয় শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়ন সম্ভব হবে। ফলে বিনিয়োগ আহরণ এবং রপ্তানি আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে আঞ্চলিক বৈষম্য কমিয়ে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতিতে এ প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। তবে পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ধলার বিলে কোথাও কোথাও প্রায় ১৫ থেকে ২০ ফুট গভীরতা রয়েছে। ইপিজেড বাস্তবায়ন করতে হলে এ গভীর জলাশয় ভরাট করেই করতে হবে। জলাশয় ভরাট হলে পরিবেশের ক্ষতি হবে কি না, তা তারা বেপজার কাছে জানতে চেয়েছেন। জবাবে বেপজা জানিয়েছে, ইপিজেড হলে পরিবেশের ক্ষতি হবে না। বরং ইপিজেড স্থাপনের পর একটি খাল করে দেওয়া হবে, যাতে ভৈরব নদে ইপিজেডের পানি প্রবাহিত হতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে পরিচালিত বেপজা ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। দেশের সব ইপিজেড পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে এ সংস্থা। বর্তমানে দেশে ৯টি ইপিজেড রয়েছে।

১৯৮৩ সালে চট্টগ্রামে স্থাপিত হয় দেশের প্রথম ইপিজেড। পরবর্তী তিন দশকের মধ্যে পর্যায়ক্রমে স্থাপিত হয় বাকিগুলো। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল যশোরে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড) নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যশোর ইপিজেড স্থাপনের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সাড়ে ৪ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্যোগে প্রায় ১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নেওয়া ‘যশোর রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানিয়েছে, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলায় হবে এই ইপিজেড। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে ১ হাজার ৫৪২ কোটি ৭২ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। আর ইপিজেড কর্তৃপক্ষের নিজস্ব তহবিল থেকে আসবে ৩৫০ কোটি টাকা। প্রকল্পটি ২০২৬ সালের ৩০ জুন মেয়াদে বাস্তবায়িত হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত