তারল্য পরিস্থিতি

ব্যাংকে বাড়ল সুদহার

প্রকাশ : ২০ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির দায় মেটাতে ব্যাংকগুলো মার্কিন ডলার কেনার চাপে আছে। সে জন্য নগদ টাকায় রপ্তানি ও প্রবাসী আয় কেনার পাশাপাশি ব্যাংকগুলোকে একটিকে অন্যটির কাছ থেকে ডলার কিনতে হচ্ছে। অন্যদিকে সরকারও এখন উচ্চ সুদে টাকা ধার করছে। ফলে ব্যাংকগুলোতে টাকা, তথা তারল্য নিয়ে টানাটানি শুরু হয়েছে। সংকট কাটাতে সাড়ে ৯ শতাংশ পর্যন্ত সুদেও আমানত নিচ্ছে কোনো কোনো ব্যাংক। তবে সংকটে পড়া শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলো ১৫ শতাংশ সুদেও তহবিল সংগ্রহ শুরু করেছে বলে শোনা যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ব্যাংকঋণের সুদহার যতটা বেড়েছে, তার চেয়ে অনেক বেশি বেড়েছে আমানতের সুদ। এরপরও ব্যাংকগুলো কাঙ্ক্ষিত আমানত পাচ্ছে না। ব্যাংকে টাকার টানাটানি সামলাতে প্রতিদিন গড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকার সহায়তা বা ধার দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই চিত্র গত সপ্তাহের। আমানতের সুদহার সাড়ে ৯ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছে। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে তারল্যে চাপ আরও কিছুদিন থাকবে। এই সময়ে নতুন বিনিয়োগ হবে না, ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতি হচ্ছে। এর প্রভাব পড়বে সার্বিক অর্থনীতিতে। এদিকে তীব্র তার?ল্য-সংকটের পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণ প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। বিশেষ করে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তারা নতুন কোনো প্রকল্পে ঋণ দিচ্ছে না। সুদহার বাড়ানোয় ভোক্তাঋণ বিতরণও কমে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনাই এখন সরকারের প্রধান লক্ষ্য। এ জন্য ঋণের সুদহার বাড়িয়ে টাকাকে দামি করা হচ্ছে। এর প্রভাব পড়বে মূল্যস্ফীতির ওপর। আমানত সংগ্রহ ও ঋণ বিতরণ কত হলো, আবার সুদহারই-বা কোথায় গেল, সেটা এখন বিবেচ্য নয়। সরকার ট্রেজারি বিল ও বন্ডের মাধ্যমে ব্যাংকগুলো থেকে টাকা ধার করে। এতে বেড়েছে সুদহার। ১৩ নভেম্বর সরকার ৯১ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের মাধ্যমে ৩ হাজার ৩০ কোটি টাকা তুলেছে, যেখানে সুদহার ছিল ৯ দশমিক ৮০ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ। একই দিন ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদহার ছিল ৯ দশমিক ৯০ থেকে ১০ দশমিক ২০ শতাংশ। সেদিন ৬৪৭ কোটি টাকা তোলে সরকার। ৭৮২ কোটি টাকা তোলা হয় ৩৬৪ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের মাধ্যমে, যার সুদহার ছিল ১০ থেকে ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ।