বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন

গ্রাহক বাড়ছে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে

প্রকাশ : ২০ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে এজেন্ট ব্যাংকিং। তারপরও আমানতে ভাটা পড়েছে। বিদ্যমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণেই এমনটা হচ্ছে বলে ধারণা করছেন অর্থনীতির বিশ্লেষকরা। গত সেপ্টেম্বরে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের গ্রাহক বেড়ে ২ কোটি ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৯৬৬ জনে পৌঁছেছে। তবে আমানত কমেছে ২৫৩ কোটি ৫১ লাখ টাকা। সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য। তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের গ্রাহকদের আমানতের পরিমাণ ছিল ৩৪ হাজার ৫২৪ কোটি ১০ লাখ টাকা। এর আগের মাসে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের আমানত ছিল ৩৪ হাজার ৭৭৭ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এতে এক মাসের ব্যবধানে আমানত কমেছে ২৫৩ কোটি ৫১ লাখ টাকা। সেপ্টেম্বরে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ৩৯ হাজার ৩০৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা লেনদেন করেছেন গ্রাহক। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রামের চেয়ে বেশি সুবিধা ভোগ করেন শহর অঞ্চলের গ্রাহক। ২০১৩ সালের ৯ ডিসেম্বর এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা সংক্রান্ত নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। নীতিমালায় প্রথমে শুধু পল্লি এলাকায় এজেন্ট ব্যাংকিং করার সুযোগ দেওয়া হলেও পরের বছর নীতিমালা কিছুটা সংশোধন করে পৌর ও শহর অঞ্চলেও এজেন্ট ব্যাংকিং চালুর সুযোগ দেওয়া হয়। এ পর্যন্ত ৩১টি ব্যাংককে এজেন্ট ব্যাংকিং চালুর অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক; যার সবগুলোই কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের বিকল্প নেই। এর মাধ্যমে মানুষের দোরগোড়ায় ব্যাংক সেবাকে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। এটা ব্যাংকের খরচও বাঁচিয়েছে। গ্রাহকরাও কম খরচে ও দ্রুত সময়ে ব্যাংকে না গিয়ে প্রায় সব সেবা পাচ্ছে এজেন্ট বুথে। এখন বাসাবাড়ির নিচে বা বাসাবাড়ি থেকে একটু দূরে স্থানীয় হাটবাজারে এজেন্ট আউটলেট বা বুথেই ব্যাংকের মতো প্রায় সব ধরনের সেবা পাওয়া যাচ্ছে। অ্যাকাউন্ট খোলার সুবিধা থেকে শুরু করে আমানতের টাকা জমা ও উত্তোলন, মোবাইল টপআপ, টাকা স্থানান্তর (দেশের ভেতর), রেমিট্যান্সের অর্থ উত্তোলন, ইউটিলিটি বিল এবং যানবাহনের লাইসেন্স ও ফিটনেস ফি গ্রহণ, বিভিন্ন ধরনের ঋণ বিতরণ ও আদায় এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সব ধরনের ভাতা এ সেবার মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এ সেবায় বাড়তি কোনো চার্জও নেই। এ ছাড়া ডেবিট কার্ড, চেক বই ও ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের সুবিধাও নিতে পারেন এজেন্ট ব্যংকিংয়ের গ্রাহকরা। রয়েছে বায়োমেট্রিক বা হাতের আঙুলের স্পর্শের মাধ্যমে হিসাব পরিচালনা করার সুযোগও। ফলে এ সেবার জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে। এদিকে গত ১৫ নভেম্বর বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য ব্যাংকগুলোকে নিজস্ব নেটওয়ার্ক (শাখা, উপশাখা, এজেন্ট ব্যাংকিং, কন্ট্রাক্ট ফার্মিং, দলবদ্ধ ঋণ বিতরণ এবং ব্যাংক-এমএফআই লিংকেজ) ব্যবহার করতে পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কারণ প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষক পর্যায়ে ঋণ বিতরণে অনেক ব্যাংকের অনীহা রয়েছে। নিজস্ব নেটওয়ার্ক না থাকলে ব্যাংকের খরচ বেশি পড়ে। তাই বাধ্য হয়ে কিছু ব্যাংক বড় ঋণ দিয়ে থাকে। এতে পরিচালনা খরচ কম।