অ্যান্টি-মানিলন্ডারিং সূচকে বাংলাদেশের পাঁচ ধাপ উন্নতি
প্রকাশ : ২২ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
অর্থপাচার প্রতিরোধ ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ ব্যবস্থায় পাঁচ ধাপ উন্নতি হয়েছে বাংলাদেশের। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক দ্য ব্যাসেল ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স বাসেল অ্যান্টি মানি লন্ডারিং (এএমএল) ইনডেক্স-২০২৩ রিপোর্টে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। গত সোমবার বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৩ নভেম্বর সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক দ্য ব্যাসেল ইনস্টিটিউট অন গভার্নেন্স বিশ্বের ১৫২টি দেশের মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন ঝুঁকি নিরূপণ করে এ ইনডেক্স প্রকাশ করে। এই তালিকায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধব্যবস্থায় বাংলাদেশের পাঁচ ধাপ উন্নতি হয়েছে। এর আগে ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে বাংলাদেশের ৮ ধাপ উন্নতি হয়েছিল। মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধের সূচকে ২০২৩ সালে বাংলাদেশের অবস্থা হলো ৪৬ নম্বরে। আগের বছর ২০২২ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৪১ নম্বরে।
নতুন সূচক মোতাবেক সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের মধ্যে রয়েছে ১. হাইতি, ২. শাদ, ৩. মিয়ানমার, ৪. কঙ্গো। সবচেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ আইসল্যান্ড ১৫২তম স্থানে রয়েছে। এছাড়া এই তালিকায় চীনের অবস্থান ২৭, পাকিস্তান ৬১ ও শ্রীলঙ্কা ৬২তম অবস্থানে রয়েছে। আর প্রভাবশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্র ১১৯ ও যুক্তরাজ্য রয়েছে ১৪০তম স্থানে। ২০২২ সালের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এটি তৈরি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, দ্য ব্যাসেল ইনস্টিটিউট অন গভার্নেন্স গত ১২ বছর ধরে কোনো একটি দেশের যে ৫টি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে ব্যাসেল এএমএল ইনডেক্স নির্ধারণ করে থাকে সেগুলো হলো- মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ ব্যবস্থার পরিপালন (৬৫ শতাংশ); ঘুষ ও দুর্নীতি (১০ শতাংশ); আর্থিক স্বচ্ছতা ও মানদ- (১০ শতাংশ); স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা (৫ শতাংশ); এবং আইনগত ও রাজনৈতিক ঝুঁকি (১০ শতাংশ)।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক দ্য বাসেল ইনস্টিটিউট অন গভর্ন্যান্স ১৫২ দেশের অর্থ পাচার (মানি লন্ডারিং) ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন ঝুঁকি নিরূপণ করে ২০২২ সালের এএমএল সূচক তৈরি করেছে। গতকাল সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বাসেল এএমএল সূচক অনুযায়ী, অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়নের ক্ষেত্রে বিশ্বে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের মধ্যে রয়েছে হাইতি (১), চাদ (২), মিয়ানমার (৩) ও কঙ্গো (৪)। আর সবচেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ দেশের মধ্যে রয়েছে আইসল্যান্ড (১৫২), চীন (২৭), যুক্তরাষ্ট্র (১১৯) ও যুক্তরাজ্য (১৪০)। এ সূচকে যে দেশের যত বেশি নম্বরে অবস্থান, সে দেশ তত বেশি কম ঝুঁকিপূর্ণ। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ সূচকে উন্নয়নের কারণ হিসেবে আর্থিক খাতের স্বচ্ছতা বৃদ্ধি এবং অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ কাঠামোর মানোন্নয়নের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ক্ষেত্রে সরকারের উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক অঙ্গীকার, আন্তসংস্থার কাজের সমন্বয়, আর্থিক খাতে অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে সরকারের পর্যাপ্ত লোকবল ও অর্থের সংস্থান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। উল্লেখ্য, দ্য বাসেল ইনস্টিটিউট অন গভর্ন্যান্স গত ১২ বছর ধরে পাঁচটি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে বাসেল এএমএল সূচক প্রকাশ করছে। সেগুলো হচ্ছে অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ ব্যবস্থার পরিপালন, ঘুষ ও দুর্নীতি, আর্থিক স্বচ্ছতা ও মানদ-, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি এবং আইনগত ও রাজনৈতিক ঝুঁকি।