চুলা কিংবা ওভেন নয়, পাউরুটি সেঁকতে ব্যবহার হচ্ছে আগ্নেয়গিরির উষ্ণ প্রস্রবণ! বছরের পর বছর ধরে যা চলে আসছে। বিষয়টি মজারই বটে। লগারভটনে যা দেখতে ভিড় করছেন পর্যটকরাও। না আপনার চোখের ভুল নয়।
আইসল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী পাউরুটি হেভারব্রাউড তৈরিতে কোনও চুলা বা ওভেনের দরকার নেই। তবে এর যথাযথ স্বাদ আনতে বেক করা হয় ভূতাত্ত্বীয় উষ্ণতায়। একসময়ের বিরাণভূমি আইসল্যান্ডের বিখ্যাত গোল্ডেন সার্কেলের পাশাপাশি লগারভটন এলাকা পর্যটকদের আকর্ষণে পরিণত হচ্ছে হেভারব্রাউডের জন্য।
লগারভটন ফনটানা নামক স্থানীয় স্পা এবং বেকারির ব্যবস্থাপক সিগ্গি রাফন হিলমারসনের পরিবার বহু বছর ধরে হেভারব্রাউড তৈরি করছে। বংশানুক্রমে পাওয়া এই রেসিপি আগে গোপন রাখতেন তারা। তবে সম্প্রতি সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন হিলমারসন। তার হোটেলে আসা পর্যটক এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের তিনি জানান, গোপন এই রেসিপির খবর। লগারভটন ফন্টানার ব্যবস্থাপক হিলমারসন বলেন, আমরা আগে আমাদের হোটেলের সকালের নাস্তা হিসেবে হেভারব্রাউড পরিবেশন করতাম। রেসিপিটা গোপন রাখা হতো। তবে একদিন মনে হলো আমাদের জন্য বিষয়টা সাধারণ হলেও পর্যটকদের কাছে চমকপ্রদ হতে পারে। অন্যান্য স্থানীয়রা যেন আমাদের ভৌগোলিক অবস্থানের সুযোগ নিতে পারেন।
তাই তাদেরও রেসিপিটা জানাই। হেভারব্রাউডের রেসিপি তত জটিল নয়। রাই, ময়দা, চিনি, বেকিং পাউডার, লবণ এবং গরুর দুধের সঙ্গে মিশিয়ে তৈরি করা হয় মিশ্রণ।
তবে এই খাবারের স্বাদ নির্ভর করে লগারভটনের মাটির নিচের তাপমাত্রা, গভীরতা এবং কত সময় বেক করা হয় সেসবের ওপর। হিলমারসন বলেন, মিশ্রণটি মুখবন্ধ পাত্রে নিয়ে ২৪ ঘণ্টা অন্তত ১ ফুট গভীরতায় রাখা হয়। সেখানে ফুটন্ত পানি প্রায় ৯৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়।
তাপমাত্রা, গভীরতা ও সময়ের সংমিশ্রণ হেভারব্রাউডকে অনন্য স্বাদ দেয়। লগারভটনের স্থানীয় বাসিন্দারা শত বছর ধরে ভূতাত্ত্বীয় তাপশক্তিকে রান্না এবং বাড়িঘর গরম রাখার কাজে ব্যবহার করছেন। তবে ভূত্বাত্ত্বিক বিস্ময়ের মাঝে আজীবন থাকার পরও নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন হিলমারসন।