বিশ্ব অর্থনীতি সংকটেও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু দুবাই
প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
এখন বিশ্বের বড় বড় ধনীদের কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পরিণত হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। ফলে দেশটির এখন শনৈঃ শনৈঃ অর্থনৈতিক উন্নতি হচ্ছে। সেই সঙ্গে এর ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল হচ্ছে। ৩০ নভেম্বর দেশটিতে বার্ষিক জলবায়ু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ১২ দিনের এই সম্মেলনে সারা বিশ্ব থেকে ৭০ হাজার প্রতিনিধি যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। দ্য ইকোনমিস্ট-এর এক সংবাদে বলা হয়েছে, দুবাই শহরের শান শওকত দেখে এই সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের চোখ ধাঁধিয়ে যাবে। গোল্ডেন ভিসা দিয়ে বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), বিশেষ করে দুবাই শহর। বদৌলতে শহরটির আবাসন বাজার বিনিয়োগকারীদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে কৃত্রিম দ্বীপ বানিয়ে বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে ইউএই। একটি উদাহরণ দেওয়া যাক: পাম জেবেল আলি নামের এক কৃত্রিম দ্বীপ প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার আগে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের এক সকালে এটির কার্যালয়ের সামনে ক্রেতারা ব্যাপক ভিড় করেন। মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের মতো সংযুক্ত আরব আমিরাতও জ্বালানি তেলের অন্যতম কেন্দ্র। গত বছর জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ১০০ বিলিয়ন বা ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার আয় করেছে দেশটি। তবে তারা এখন আর নিছক জ্বালানি তেলের ওপর নির্ভরশীল না থেকে বরং অর্থনীতির বহুমুখীকরণে জোর দিয়েছে। জ্বালানি তেল থেকে এখন তাদের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) মাত্র এক-তৃতীয়াংশ আসে। গত বছর দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ৪১ শতাংশ। অর্থনৈতিক উন্নতির সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি যে উজ্জ্বল হচ্ছে, তার বড় নিদর্শন হলো- বৈশ্বিক জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলন বা কপ আয়োজন। দেশটির উন্মুক্ত অর্থনৈতিক নীতি ও রাজনীতি নিরপেক্ষ ব্যবসায়িক মনোভাবের কারণে সব জাতি ও বর্ণের ব্যবসায়ীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে দুবাই, বিশ্বের খুব কম স্থানেই এটা হয়। এ ছাড়া বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকেই সাড়ে আট ঘণ্টায় দুবাই আসা-যাওয়া করা যায়। ফলে দীর্ঘ বিমান ভ্রমণ এড়িয়ে কম সময়ে ব্যবসায়িক আলোচনা-সমঝোতা সারার জন্য এই শহরকে বেছে নেন অনেকেই। তবে অর্থনৈতিক পরিবর্তন ও সম্ভাবনার সঙ্গে সঙ্গে নতুন চ্যালেঞ্জও সামনে আসছে ইউএইর। অর্থনীতিতে নতুন খাত সৃষ্টি হওয়ার সঙ্গে দেশটির সামাজিক চুক্তিও বদলে যাচ্ছে। নতুন নতুন কর আরোপিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে মানুষেরও নতুন ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার সময় এসেছে বলে মনে করা হয়। তবে সংযুক্ত আরব আমিরাত চূড়ান্ত বিচারে রাজতান্ত্রিক হওয়ায় মানুষের দ্বিমত পোষণ করার পরিসর কম। শাসকের কর্তৃত্বের ওপর লাগাম না থাকায় নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাচারিতা ও ভুল নীতি গ্রহণের অনেক অবকাশ রয়েছে। আরব-আমিরাতের অর্থনৈতিক পরিবর্তনের ইতিহাস আছে। একসময় তারা ছিল মুক্তাসংগ্রাহক জাতি, সেখান থেকে তারা পরবর্তীকালে পেট্রো মানে তেলের রাষ্ট্র হয়ে ওঠে। সে জন্য এখন পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে তারা বেশ মুনশিয়ানার পরিচয় দিচ্ছে বলে মনে করে দ্য ইকোনমিস্ট।