ঋণের সুদহার বাজারভিত্তিক করতে ব্যাংকিং খাতে ঋণ ও আমানতের সুদ ব্যবধান (স্প্রেড) তুলে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এত দিন স্প্রেড ৪ শতাংশ ছিল। এখন থেকে এর কোনো সীমা থাকবে না। ফলে ব্যাংকগুলো চাইলে আমানতে সুদ কম দিতে পারবে। আবার জরুরি প্রয়োজনে বেশি সুদও দিতে পারবে। গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ-সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করেছে। বর্তমানে ব্যাংক খাতে ঋণ ও আমানতের সুদহারের ব্যবধান ৩ দশমিক ৩১ শতাংশ। আগের নিয়মে কোনো ব্যাংক আমানতের ওপর যদি ৫ শতাংশ সুদ দিত, তাহলে ওই ব্যাংক ঋণে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সুদ নিতে পারত। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী এখন ঋণ-আমানতের সুদহারের ক্ষেত্রে কোনো সীমা থাকবে না। ৩ শতাংশে আমানত নিয়েও ১০ শতাংশ বা এর বেশি সুদে ঋণ দেওয়ার সুযোগ পাবে; অর্থাৎ আমানতের সুদহার যা-ই হোক ‘এসএমএআরটি’ বা ‘স্মার্ট’ রেটের সঙ্গে নির্ধারিত মার্জিন যোগ করে ঋণের সুদ নিতে পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়, ঋণের সুদহার বাজারভিত্তিক করার লক্ষ্যে ‘এসএমএআরটি’ বা ‘স্মার্ট’র (সিক্স মান্থ মুভিং এভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল) সঙ্গে নির্ধারিত মার্জিন যোগ করে সুদহার নির্ধারণ পদ্ধতি কার্যকর করা হয়েছে। সুদহার নির্ধারণের নতুন ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ঋণের বাজারভিত্তিক সুদহার নির্ধারিত হওয়ায় সুদহারের অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি রোধ করা সম্ভব হয়েছে। ফলে তারল্য পরিস্থিতির বিবেচনায় ঋণের সুদহারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমানতের সুদহার যৌক্তিক পর্যায়ে রাখা সম্ভব হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে আমানত ও ঋণের সুদহারের সীমা নির্ধারণ করার প্রয়োজন নেই। গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অপর এক নির্দেশনায় ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানতের সুদের হার নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী, ‘স্মার্ট’ হারের সঙ্গে আমানতে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং ঋণে ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে মার্জিন বা সুদ যোগ করে নভেম্বর মাসে ঋণ ও আমানতে সুদহার নির্ধারণ করবে।