ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পণ্যের জিএসপি সুবিধা অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশকে ইইউ’র সতর্কবার্তা

পণ্যের জিএসপি সুবিধা অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশকে ইইউ’র সতর্কবার্তা

বাংলাদেশের শ্রম ও মানবাধিকার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় কমিশন। অর্থনীতিবিদরা এই প্রতিবেদনকে ‘সতর্কবার্তা’ হিসেবে উল্লেখ করে বলছেন, ইউরোপীয় কমিশনের উদ্বেগের বিষয়গুলো বাংলাদেশের গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত। গতকাল শনিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিবিসি বাংলা উল্লেখ করা হয়, ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশ বর্তমানে ইবিএ (এভরিথিং বাট আর্মস) সুবিধা পায়। এর অর্থ হচ্ছে, অস্ত্র ও গোলাবারুদ ছাড়া রপ্তানিযোগ্য সব পণ্যের ইউরোপের বাজারে শুল্কমুক্ত ও কোটা-মুক্ত প্রবেশাধিকার। এই সুবিধার আওতায় বর্তমানে ৪৭টি দেশ রয়েছে। এই দেশগুলোকে ইউরোপে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে নির্ধারিত ১২ শতাংশ শুল্ক দিতে হয় না। শুধু শ্রম আইন সংশোধন আর শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠা করলেই হবে না। নিশ্চিত করতে হবে মানবাধিকারও। যেখানে বিরোধীদের মত প্রকাশ এবং সমাবেশের স্বাধীনতা থাকবে। তবেই ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) অব্যাহত থাকবে বাংলাদেশের পণ্যে জিএসপি সুবিধা। এমন তথ্যই উঠে এসেছে ইইউ’র এক প্রতিবেদনে। শ্রমিকের অধিকার রক্ষা না হলে মার্কিনিরা দেবে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা। ১৬ নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের এমন ঘোষণায় আলোচনার ঝড় তুলেছে সারা পৃথিবীর মতো বাংলাদেশেও। মার্কিনিদের এমন ঘোষণার পর পরই ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও কম্বোডিয়ার জিএসপি-বিষয়ক অগ্রগতি রিপোর্ট প্রকাশ করে ইইউ। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিবেদনে নিষেধাজ্ঞার হুমকি না থাকলেও আছে বেশ কিছু সতর্কীকরণ এবং পরিত্রাণের পরামর্শ। বাংলাদেশ প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়, ইইউতে জিএসপি সুবিধা অব্যাহত রাখতে হলে নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি বাস্তবায়ন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সমাবেশ ও সংগঠিত হওয়ার স্বাধীনতার সুরক্ষা এবং নাগরিক সমাজের দায়িত্ব পালনের সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির কথা। একই সঙ্গে নির্যাতনের অভিযোগ, অন্যায় আচরণ, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমের বিষয়ে তদন্তের আহ্বান জানানো হয়। সবশেষে বাংলাদেশকে শ্রমনীতি বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ মান নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি শ্রম খাতে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা পুরোপুরি বাস্তবায়নও চায় ইইউ। জানতে চাইলে বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, শ্রম অধিকার উন্নয়নে আইএলও ও ইইউ’র সঙ্গে নিয়মিত কাজ করছে সরকার। এরই মধ্যে ২০১০ সাল থেকে আমাদের শ্রম আইন চারবার সংশোধন করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত আমরা উন্নত ব্যবস্থাপনার দিকে যাচ্ছি। শ্রমিক সংগঠন করাটাকে সহজ করে দিয়েছি। তবে এই প্রতিবেদনের সঙ্গে সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করা ইবিএ প্রতিনিধি দলের কোনো সম্পর্ক নেই বলে নিশ্চিত করেন ঢাকার ইইউ ডেলিগেশন প্রধান চার্লস হোয়াইটলি। প্রায় ৩০ পাতার ওয়ার্কিং পেপারে মিয়ানমারে সামরিক সরকারের ওপর আরো কঠোর হওয়ার বার্তা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বলা হয়েছে, পরিস্থিতির উন্নতি না হলে জিএসপি সুবিধা ফেরত পাবে না কম্বোডিয়া। বর্তমানে থাকা জিএসপি নিয়মকানুনের মেয়াদ চলতি বছরের শেষ দিকে শেষ হয়ে যাবে। নতুন জিএসপি নিয়মকানুন গ্রহণের আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এই সময়ে বর্তমান নিয়মকানুনের মেয়াদ ২০২৭ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এই মেয়াদ বাড়ানোর প্রক্রিয়ার শেষ ধাপের কাজ করছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট এবং কাউন্সিল, যা আছে প্রতিবেদনে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপে রপ্তানির ক্ষেত্রে ইবিএভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগী দেশ। গত কয়েক দশকে এই সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশ তার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সামাজিক উন্নয়ন ঘটিয়েছে। বাংলাদেশের রপ্তানি মূলত তৈরি পোশাক শিল্পনির্ভর।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত