আসন্ন রমজান মাসে খেজুরসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ ঠিক রাখার মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। গতকাল বুধবার তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবি আয়োজিত টিসিবির ফ্যামিলি স্মার্ট কার্ড বিতরণ এবং সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য বিক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। রমজান মাস উপলক্ষ্যে খেজুরসহ অন্যান্য পণ্য আমদানিতে শুল্ক কমানো হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে টিপু মুনশি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় শুল্ক কমাতে পারে না। তবে কমানোর জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নিকট অনুরোধ জানাতে পারে এবং পরিস্থিতি বিবেচনায় করা হয় থাকে। রমজানে মাসে মানুষ যাতে খেজুরসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সহজে ক্রয় করতে পারে, সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, টিসিবির কার্ডধারীরা প্রতি মাসে একবার পণ্য নিশ্চিতভাবেই পাবেন। কারণ তাদের নামে পণ্য নির্দিষ্ট করা থাকে। এই ১ কোটি কার্ডধারীদের বাইরে থাকা নিম্নআয়ের মানুষকে ভর্তুকি মূল্যে ট্রাকসেলে প্রতিদিন পণ্য বিক্রয় করা হচ্ছে। এই ট্রাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্য বিতরণ করা হয়ে থাকে। একটি ট্রাক থেকে ৩০০ জন পণ্য পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। এর বেশি দিতে পারবে না। স্বাভাবিকভাবেই যারা আগে আসেন তারা পাবেন। কিছু মানুষকে খালি হাতে ফেরত যেতে হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি আরো জানান, আমরা ট্রাকসেলের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। পাশাপাশি দেশের বড় শহরগুলোতে দেওয়া যায় কি না, সেটাও বিবেচনা করা হচ্ছে, যাতে করে আরো বেশি মানুষ এই সুবিধার আওতায় আনা সম্ভব হয়। আলুর বাজার দর সম্পর্কে এক প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আলুর বাজার দ্রুত অস্থিতিশীল হওয়ার পরপরই আমরা আমদানির অনুমতি দিয়েছি। এরপর ভারত থেকে আলু আসায় বাজারে ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। দেশে নতুন আলু আসতে শুরু করেছে। আগামী, এখন মাসের মধ্যে বাজারে পুরোপুরি নতুন আলু আসবে। এতে করে আলুর দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। টিপু মুনশি জানান, সার্বিক বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় নিম্ন আয়ের মানুষের কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টিসিবি কার্ডধারীদের বাইরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিতরণের নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশনার আলোকে রাজধানীতে ৩০টি ট্রাকসেলের মাধ্যমে সয়াবিন, পেঁয়াজ, আলু ইত্যাদি ভর্তুকি মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবি একটি চ্যালেঞ্জ নিয়ে ১ কোটি ফ্যামিলি কার্ডকে স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরের কর্মযজ্ঞ পরিচালনা করে যাচ্ছে।
সরকারের এই মহতি উদ্যোগ সফল করতে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। চলতি মাসের মধ্যে ২০ লাখ স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা সম্ভব হবে বলে জানান মন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। এ সময় টিসিবির চেয়ারম্যান বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান, উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা এবং ২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল মন্জুর অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।