নারীদের রক্ষায় এডিবির নতুন উদ্যোগ

প্রকাশ : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

নারীদের ওপর তাপজনিত প্রভাব কমাতে নতুন কর্মসূচি নিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এক্ষেত্রে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নারী ও মেয়েদের ওপর তাপের চাপের প্রভাবগুলো আরো ভালোভাবে বুঝতে এবং অভিযোজনে বিনিয়োগ করার জন্য একটি নতুন উদ্যোগ চালু করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার ঢাকা কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব বিষয় জানানো হয়। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল জুড়ে নারী ও মেয়েদের ওপর তাপ-চাপের প্রভাব আরো ভালোভাবে বুঝতে এবং অভিযোজনে বিনিয়োগের জন্য একটি নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। সম্প্রতি উদ্যোগটি গ্রহণ করা হয়। নতুন কারিগরি সহায়তা কর্মসূচির আওতায় এডিবি নারীদের ওপর তাপ-চাপের ক্রমবর্ধমান হুমকি কীভাবে প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে গবেষণা করবে।

আর, সুনির্দিষ্ট নীতি, পদক্ষেপ ও বিনিয়োগ নির্ধারণ করবে; যা নারী ও মেয়েদের ওপর তাপের প্রভাব কমাতে বিভিন্ন দেশের সরকারকে সহায়তা করবে। বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও তাজিকিস্তানে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। কপ-২৮ সম্মেলনের উদ্বোধনীতে, এডিবির প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়া বলেন, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সবচেয়ে উষ্ণতম বছরের জন্য অবশ্যই রয়েছি। এই উষ্ণতা, নারীদের অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতা, খাদ্য নিরাপত্তায় তাদের ভূমিকা এবং নারীদের ব্যবহৃত অবকাঠামোর ওপর নজিরবিহীন চাপ সৃষ্টি করছে। তিনি বলেন, চরম তাপের মতো জলবায়ু পরিবর্তনের পরিণতি মোকাবিলা না করে, উন্নয়ন আর সম্ভব নয়। আমাদের অবশ্যই নারীদের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। প্রচণ্ড গরমে বিশ্বব্যাপী ৬৫ হাজার ঘণ্টার বেশি বার্ষিক শ্রম ক্ষতি হয়, যা প্রায় ১৪ কোটি ৮০ লাখ পূর্ণ-সময়ের চাকরির সমতুল্য; এটি পরিমাপে ব্যাঘাতের দিক থেকে কোভিড-১৯ মহামারির সঙ্গে তুলনীয়। নারীরা এই ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা দ্বারা অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে প্রভাবিত হয়; প্রাণঘাতী পরিস্থিতি এবং উল্লেখযোগ্য আর্থ-সামাজিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এডিবি এবং আরশট-রকফেলার ফাউন্ডেশন রেজিলিয়েন্স সেন্টারের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আরশট-রক গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর হিলারি রডহ্যাম ক্লিনটন বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের নারীরা উষ্ণায়নের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই ভারসাম্যহীনতা দূরীকরণে এডিবি’র উদ্যোগ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। মেক্সিকোর সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিলিপে ক্যালডেরন বলেন, পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ প্রচণ্ড গরমে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। নীতিনির্ধারকদের অবশ্যই সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়গুলোকে রক্ষা করার জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে; বিশেষত শহরগুলোতে যেখানে শহুরে তাপ-বলয়ের প্রভাবের কারণে সমস্যাটি আরো গুরুতর।

ফিজি’র নারী, শিশু ও দারিদ্র্য বিমোচনবিষয়ক মন্ত্রী লিন্ডা তাবুইয়া বলেন, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তন একটি জীবন্ত বাস্তবতা। আমরা সেখানে প্রত্যক্ষভাবে দেখতে পাচ্ছি যে প্রচণ্ড তাপ কীভাবে বিদ্যমান লিঙ্গ বৈষম্য আরো বাড়িয়ে তোলে। আমাদের সম্মিলিত জলবায়ু প্রতিক্রিয়ার জন্য লক্ষ্য-যুক্ত পদক্ষেপ দরকার। ইউএন-হ্যাবিট্যাট অ্যান্ড আরস্ট-রক গ্লোবাল’র চিফ হিট অফিসার এলেনি মাইরিভিলি বলেন, নারীদের ওপর তাপ-চাপের অসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রভাবের জন্য একটি উপযুক্ত পদ্ধতি প্রয়োজন। আমাদের জলবায়ু কৌশলগুলোতে লিঙ্গ দৃষ্টিভঙ্গি একীভূত করা কেবল অপরিহার্য নয়; এটি জরুরি এবং সমতার বিষয়। মেলবোর্ন সিটির মেয়র স্যালি ক্যাপ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে শহরগুলো সর্বাগ্রে রয়েছে। নেতা হিসেবে, আমাদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে, আমাদের জলবায়ু সহনশীলতার প্রচেষ্টা অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং নারীদের অনন্য দুর্বলতা ও শক্তিকে স্বীকৃতি দেয়।