মুরগির খাবারের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা

সিন্ডিকেটের দিকেই অভিযোগ ছোট খামারিদের

প্রকাশ : ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

আবারো বাড়তে শুরু করেছে পোলট্রি খাবারের দাম। পোলট্রি খাবারের দাম বাড়লে মুরগি উৎপাদনের খরচও বেড়ে যাবে। বাড়তি এই খরচ গিয়ে পড়বে ক্রেতাদের ওপর। বাজারে ফার্মের মুরগি ও ডিমের দাম কিছুটা সহনীয় অবস্থায় এসেছে। তাতে মুরগির মাংস ও ডিম কিনতে গেলে ক্রেতাদের আগের চেয়ে ব্যয় একটু কম হচ্ছে। কিন্তু বাজারে পোলট্রি খাবারের দাম আবার বাড়তে শুরু করেছে। পোলট্রি খাবারের দাম বাড়লে খামারিদের মুরগি উৎপাদনের খরচও বেড়ে যাবে। বাড়তি এই খরচ গিয়ে পড়বে ক্রেতাদের ওপর। খামারি, মুরগির খাবারের ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে বাজারে মুরগির খাবারের দাম কেজিপ্রতি সর্বোচ্চ সাড়ে তিন টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তাতে ৫০ কেজির এক বস্তা খাবারের দাম ১৭৫ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে ৩ হাজার ৪০০ টাকা থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকায় এক বস্তা পোলট্রি খাবার পাওয়া যেত, তা এখন ৩ হাজার ৫৭৫ থেকে ৩ হাজার ৬৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিছুদিন খামারিরা ভালো ছিলেন। এখন আবার মুরগির খাবারের দাম বাড়ানো হলো। এতে খামারিদের ওপর চাপ বাড়বে। অনেকে উৎপাদন ছেড়ে দেবেন। মানভেদে ব্রয়লার মুরগি ও সোনালি মুরগির খাবারের দামে প্রতি বস্তায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকার মতো পার্থক্য থাকে। ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির পাশাপাশি লেয়ার মুরগি ও হাঁসের খাবারের দাম কেজিপ্রতি সর্বনিম্ন ২ টাকা বেড়েছে। মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় নাম লিখিয়েছে মাছের ও গরুর খাবারও। এই দুই পদের খাবারের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি সর্বোচ্চ আড়াই টাকা পর্যন্ত। পোলট্রি খাবারের বড় উপকরণ হলো ভুট্টা ও সয়া মিল। এ ছাড়া চালের কুঁড়া, ক্যানুলা মিল, গমের আটা, সাধারণ লবণসহ অন্যান্য উপকরণের সংখ্যা ১৫ থেকে ২০টি। খাবারের মানভেদে উপাদান কমবেশি হয়। এসব উপকরণের অধিকাংশই আমদানিনির্ভর। আমদানিকারকদের দাবি, মুদ্রাবাজারে মার্কিন ডলারের দাম নিয়ে নতুন করে অস্থিরতা বেড়ে যাওয়ায় পোলট্রি খাবারের দাম বাড়ছে। অবশ্য মুরগির খাবারের মূল্যবৃদ্ধির জন্য বরাবরের মতো উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সিন্ডিকেটের দিকেই অভিযোগের তির ছোট খামারিদের। তাঁদের দাবি, এসব প্রতিষ্ঠান সময়ে-সময়ে নিজেদের মতো করে মুরগির খাবারের দাম বাড়িয়ে দেয়। এতে বিপদে পড়েন ছোট খামারিরা। সে জন্য দাম নির্ধারণে সরকারের হস্তক্ষেপ চান তাঁরা। প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, কিছুদিন খামারিরা ভালো ছিলেন। এখন আবার মুরগির খাবারের দাম বাড়ানো হলো। এতে খামারিদের ওপর চাপ বাড়বে। অনেকে উৎপাদন ছেড়ে দেবেন। তখন করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কন্ট্যাক্ট ফার্মিংয়ে যুক্ত করবে। চুক্তি অনুযায়ী ডিমণ্ডমুরগির দাম নির্ধারণেও তখন খামারিদের কোনো ভূমিকা থাকবে না।