২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের আকার
প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা হ্রাসের পরিকল্পনা সরকারের
প্রকাশ : ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়ায়, আগামী অর্থবছরের জাতীয় বাজেট প্রণয়ন ও জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা প্রক্ষেপণে আরও সংরক্ষণমূলক হবে সরকার। অর্থাৎ, বাজেটের উচ্চাকাঙ্ক্ষী সম্প্রসারণের চেয়ে প্রাধান্য পাবে রাজস্ব নীতির বিচক্ষণতা। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বাজেট মনিটরিং ও সম্পদ কমিটি এবং আর্থিক, মুদ্রা ও মুদ্রা বিনিময় হার সংক্রান্ত অর্থনৈতিক কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের আকার, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বরাদ্দ, এবং জিডিপির প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ব্যাপকভাবে কমিয়ে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ধরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে প্রাথমিকভাবে জিডিপির প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭.৫ শতাংশ ধরা হলেও সংশোধিত বাজেটে এটি কমিয়ে ৬.৫ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সভায় উপস্থিত সূত্রগুলো জানায়, আর্থিক খাতের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক এ কমিটির সভায় স্থানীয় ও বৈশ্বিক নানান কারণে দেখা দেওয়া অর্থনৈতিক সংকটের গভীরতা স্পষ্টভাবে উঠে আসে। গত এক দশকের মধ্যে (কোভিডকালীন সময় ছাড়া) ধারাবাহিকভাবে বাজেটের আকার বাড়িয়ে উচ্চাভিলাসী বাজেট প্রণয়ন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে বাজেটের আকার কমাতেই হবে। এর বেশকিছু কারণ উল্লেখ করেন তারা। যেমন- রাজস্ব আদায়ে স্থবিরতা; বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ নেওয়ার সীমিত সক্ষমতা; স্থানীয় ঋণে সরকারের সুদব্যয় বৃদ্ধি এবং বৈদেশিক বিনিয়োগের সীমিত সুযোগ। ফলে সরকারি ব্যয় কমানো আর এড়িয়ে যাওয়ার যেত না। এদিকে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুতও দ্রুত কমছে, নভেম্বরের শেষ নাগাদ যা ছিল প্রায় ১৯.৫২ বিলিয়ন ডলার। যদিও অর্থবিভাগের কর্মকর্তারা অর্থবছর শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২ বিলিয়ন ডলার বাড়ার অনুমান করছেন। আগামী ১৩ ডিসেম্বর আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়ার পাশাপাশি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকসহ বিভিন্ন সংস্থা থেকে বাজেট সহায়তা বাবদ ঋণ পাওয়া যাবে বলে জানান তারা। গত এক দশকের মধ্যে এবারই প্রথম চলতি অর্থবছরের বাজেটের আকারের তুলনায় আগামী অর্থবছরের বাজেটের আকার মাত্র ৫.৬৭ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোভিডকালীন সময় ছাড়া প্রতি বছরই মূল বাজেটের আকার আগের অর্থবছরের মূল বাজেটের তুলনায় ১০ শতাংশের বেশি হারে বাড়ানোর ঐতিহাসিক প্রবণতা থেকে সরে আসার, যা ব্যতিক্রমী এক সিদ্ধান্ত।