বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাৎ করেছে- এমন চার ব্রোকারেজ হাউজের ক্ষতিগ্রস্তদের আংশিক অর্থ পরিশোধ শুরু করেছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। ইনভেস্টরস প্রটেকশন ফান্ড (আইপিএফ) থেকে ২৫ কোটি টাকার এ ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে ডিএসই। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) নির্দেশনা অনুসারে ইনভেস্টরস আইপিএফ থেকে এ অর্থ দিয়েছে ডিএসই। গতকাল ডিএসইর পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ডিএসই স্টেকহোল্ডার চার ব্রোকারেজ হাউজ ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ, বাঙ্কো সিকিউরিটিজ, তামহা সিকিউরিটিজ এবং শাহ মোহাম্মদ সগীর অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের প্রাপ্য অর্থ পরিশোধ করা শুরু করেছে এক্সচেঞ্জটি। এ চার ব্রোকারেজ হাউজের যেসব ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী চলতি বছরের ১ অক্টোবরের মধ্যে ডিএসইতে অভিযোগ দাখিল করেছেন শুধুমাত্র সেসব বিনিয়োগকারীদের আইপিএফ থেকে তাদের নিজ নিজ বিও হিসাবে উল্লেখিত ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে আনুপাতিক হারে প্রাপ্য অর্থ প্রদান করা শুরু করেছে। এ ক্ষেত্রে চারটি ব্রোকারেজ হাউজের ৮ হাজার ৫৮১ জন ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীকে আনুপাতিক হারে বিইএফটিএনের মাধ্যমে ২৫ কোটি টাকা পরিশোধ করা হবে। ডিএসইর প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (সিআরও) খাইরুল বাশার আবু তাহের মোহাম্মদের তত্ত্বাবধানে গতকাল দুজন ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীর হাতে চেক হস্তান্তর করা হয়। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসইসির কমিশনার মো. আব্দুল হালিম, ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু, ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) সাত্বিক আহমেদ শাহসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানের শুরুতেই ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান বলেন, আজ আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে আপনাদের হাতে কিছু টাকার চেক তুলে দিতে পারছি। আমরা আশা করছি পর্যায়ক্রমে সব বিনিয়োগকারীদের পাওনা পরিশোধ করতে পারব। আমি বিশ্বাস করি, এর মাধ্যমে বাজারে একটা ইতিবাচক বার্তা যাবে। আমরা সব পাওনা পরিশোধের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিনিয়োগকারীরা যেন এ ধরনের ঘটনায় ভবিষ্যতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়েও আমরা সতর্ক রয়েছি। এসইসি কমিশনার মো. আব্দুল হালিম বলেন, অল্প কিছু হলেও ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের অর্থ দিতে পারছি, এটা আনন্দের। তবে আইন-কানুন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আরো সক্রিয় হতে হবে। যেন কেউ কোনো বিনিয়োগকারীর টাকা আত্মসাৎ করতে না পারে। বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা দিতে পারলে পুঁজিবাজারে আস্থা বাড়বে। এই চারটি প্রতিষ্ঠানের টাকা আত্মসাতের পর নতুন করে কেউ আর আত্মসাৎ করতে পারেনি। এটা বন্ধ করতে নতুন আইন করতে হয়নি। আইনের যথাযথ প্রয়োগ করে, নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। যেন ভবিষ্যতে আর কেউ অর্থ আত্মসাৎ করতে না পারে। ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মোহাম্মদ হাসান বাবু বলেন, ডিএসইতে একটা যাত্রা শুরু হলো। বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা দরকার আছে। অল্প পরিসরে হলেও আমরা প্রমাণ করতে পারলাম। আমরা বিনিয়োগকারীদের কথা চিন্তা করি, আমরা বিনিয়োগকারী বান্ধব, তাদের সঙ্গে নিয়ে চলতে চাই। আজকের এই চেক হস্তান্তর বাজারের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আমরা শুধু বড় বড় বিনিয়োগকারীদের কথা ভাবি না, ছোট ছোট বিনিয়োগকারীদের কথাও চিন্তা করি।