ডলার সংকট মোকাবিলা ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সাশ্রয় করতে দেড় বছর ধরে দেশে আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। কঠোর নিয়ন্ত্রণের প্রভাবে আমদানি কমেছে। এতে আমদানিনির্ভর ঋণ বায়ার্স ক্রেডিট বা ক্রেতার ঋণ কমছে। ৯ মাসের ব্যবধানে দেশে বায়ার্স ক্রেডিট (আমদানির বিপরীতে আমদানিকারককে বিদেশি ব্যাংক বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান যে ঋণ দিচ্ছে) কমেছে ২৯২ কোটি ডলার। আমদানি কমায় আমদানিনির্ভর শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তবে এ ঋণ কমায় বৈদেশিক ঋণে সুদের বোঝা কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২০ সাল পর্যন্ত দেশে বায়ার্স ক্রেডিট স্থিতিশীল থেকে ওঠানামা করেছে। কিন্তু ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে তা বাড়তে থাকে। ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বেড়েছে। এটি ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে কমতে থাকে। এখনো সেটি নিুমুখী। গত বছরের ডিসেম্বরে দেশে বায়ার্স ক্রেডিটের স্থিতি ছিল ৯৫৭ কোটি ডলার। গত অক্টোবর পর্যন্ত তা কমে দাঁড়িয়েছে ৬৬৫ কোটি ডলার। আলোচ্য নয় মাসে বায়ার্স ক্রেডিট কমেছে ২৯২ কোটি ডলার। উদ্যোক্তারা বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির বিপরীতে এই ঋণ নিয়ে থাকেন। কোনো ব্যাংক বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থেকে এই ঋণ নেওয়া হয়। অনেক সময় বাকিতে পণ্য আমদানি করেও ঋণ নেওয়া হয় সরাসরি রপ্তানিকারকের কাছ থেকে। এই ঋণে দেশে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আমদানি হলে ডলারের ওপর চাপ কিছুটা কমে। কিন্তু বায়ার্স ক্রেডিটে আমদানি করা বেশির ভাগ পণ্যই বাণিজ্যিক। এসব পণ্য আমদানিতে এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক কড়াকড়ি আরোপ করেছে। যে কারণে সার্বিকভাবে আমদানি কমেছে। এর প্রভাবে কমেছে বায়ার্স ক্রেডিট। বায়ার্স ক্রেডিটের শতভাগ ঋণের সুদই বাজারভিত্তিক। যে কারণে এ ঋণের সুদের হার ওঠানামা করে। তবে বর্তমানে সব খাতে সুদহার বাড়ায় এ খাতেও ঋণের সুদহার বেড়েছে।