পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতার জন্য ব্যবসায়ীর সিন্ডিকেটকেই দায়ী করলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান। একই সঙ্গে অস্বাভাবিক পেঁয়াজের বাজারে তিনি নিজেও ২৫০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কিনেছেন বলেও জানান। গত বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) নিজ কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
তিনি বলেন, আমি আড়াইশ’ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ কিনেছি। পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতার জন্য ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটকেই দায়ী করে ভোক্তার ডিজির অভিযোগ, ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের সুযোগ নিচ্ছে এই সিন্ডিকেট। তারা পেঁয়াজ মজুত করে বাজারশূন্য করার চেষ্টাও করেছে। এদিকে আমদানি করা ৮০ টাকা থেকে ৯০ টাকার পেঁয়াজ কারসাজি করে কীভাবে ১৫০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা হলো তার প্রমাণ দিলেন খোদ শ্যামবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি কামরুজ্জামান পাটোয়ারী। তিনি বলেন, ‘যে পেঁয়াজ ২০০ টাকা থেকে আড়াইশ’ টাকা উঠল, সেটি কিন্তু আমাদের মতো আড়তদার বা আমাদের মতো আমদানিকারকরাই করেছেন।’
অনুষ্ঠানে ভোক্তার ডিজি বলেন, ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে নিত্যপণ্যের আকাশচুম্বী দাম নিয়ে আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ। এ অবস্থায় জনমনে স্বস্তি দিতে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দেন তিনি। এছাড়া বাজারে খোলা সয়াবিন বিক্রি নিয়ে তিনি বলেন, জানুয়ারির পর থেকে বাজারে আর খোলা সয়াবিন তেল পাওয়া যাবে না। খোলার পরিবর্তে ছোট ছোট প্যাকেটে সয়াবিন তেল বিক্রি করতে হবে। বর্তমানে বাজারে প্যাকেটের গায়ে লেখা দামের চেয়ে কেউ সয়াবিন তেলের দাম বাড়তি নিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ সময় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে আয়োজিত সভায় মাংস ব্যবসায়ী খলিলকে শাসানো ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও জানান ভোক্তার ডিজি। গত ৭ ডিসেম্বর অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিত্যপণ্যটির রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ভারত। এই নির্দেশনা ৮ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়, যা কার্যকর থাকবে আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত। এ খবর প্রচার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লাফিয়ে প্রতি কেজি ২০০ টাকার ওপরে উঠে যায় পেঁয়াজের দাম, যা রোববারে উঠে ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে। টানা তিন দিন বাড়ার পর গত রোববার (১০ ডিসেম্বর) বিকাল থেকে কমতে শুরু করে পেঁয়াজের দর।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ১৩ ডিসেম্বরের হালনাগাদ তথ্য বলছে, বাজারে এখন দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৮০ থেকে ১৭০ টাকা দরে।