ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চলতি বছর বাংলাদেশের রেমিট্যান্স ২৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে

বিশ্বব্যাংক
চলতি বছর বাংলাদেশের রেমিট্যান্স ২৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে

২০২৩ সালে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ ২৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। আগামী বছরও বাংলাদেশে একই পরিমাণ রেমিট্যান্স পাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি। গত সোমবার প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ব্রিফ অনুসারে, সাম্প্রতিক ব্যালান্স অভ পেমেন্ট সংকটের কারণে বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এতে বলা হয়েছে, মুদ্রার অবমূল্যায়ন এবং বিনিময় হার ব্যবস্থাপনা নীতির কারণে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার প্রবাসীরা কালোবাজারের সুবিধা নিতে এবং অনানুষ্ঠানিক ও আনুষ্ঠানিক চ্যানেলের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করতে উৎসাহিত করেছে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- ‘২০২৩ সালে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ ২৩ বিলিয়ন ডলার থাকবে বলে প্রক্ষেপণ করা হয়েছে।’জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালের ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে রেকর্ড ১২.৪৬ লাখ কর্মী বিদেশে গেছে। গত বছরে এ সংখ্যা ছিল ১১.৩৫ লাখ। কর্মী রপ্তানি খাতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হলেও বিগত দুই পঞ্জিকাবর্ষে রেমিট্যান্সের প্রবাহ ২২ বিলিয়ন ডলারের আশপাশেই আটকে ছিল। বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থাটি পূর্বাভাস দিয়েছে যে আগামী বছর উপসাগরীয় দেশগুলোতে দক্ষিণ এশিয়ার কর্মীদের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি হতে পারে। এই দেশগুলো আবার বাংলাদেশের রেমিট্যান্সের প্রধান উৎস।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিলভুক্ত (জিসিসি) দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক থাকতে পারে। পাশাপাশি তেলের দাম কম হওয়ায় ২০২৪ সালে ওই দেশগুলোতে দক্ষিণ এশীয় অভিবাসীদের জন্য নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ১১ মাসে বাংলাদেশ ১৯.৯৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ায় রেমিট্যান্স প্রবাহ ২০২৩ সালে ৭.২ শতাংশ বেড়ে ১৮৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে। এই প্রবৃদ্ধির পুরোটাই আসবে ভারতে রেমিট্যান্স প্রবাহের হাত ধতে। ২০২৩ সালে দেশটি ১২৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরো এরিয়া ও জিসিসি দেশগুলোতে দুর্বল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে ২০২৪ সালের রেমিট্যান্স প্রবাহে প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশে নেমে আসতে পারে। রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে সরকার এখন ২.৫ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেয়। এর পাশাপাশি ব্যাংকগুলো রেমিট্যান্সে আরো প্রতিযোগিতামূলক দাম দিতে পারে, যা আরও বেশি মানুষকে ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠাতে উৎসাহিত করতে পারে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন শ্রমিকের সংখ্যার তুলনায় রেমিট্যান্স কম আসার কারণ খোঁজার তাগিদ দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক অভিবাসন দিবস উপলক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক তিনি বলেন, ‘আমরা যে পরিমাণ লোক বিদেশ পাঠাচ্ছি, তার তুলনায় রেমিট্যান্সের পরিমাণ কম। অনেক দেশ এর চেয়ে কম লোক পাঠিয়ে বেশি রেমিট্যান্স আয় করছে। এ ব্যাপারে বিশেষ নজর দিতে হবে। সংশ্লিষ্ট যারা আছেন, তাদের বিষয়টি খুঁজে বের করতে হবে। এক্ষেত্রে দক্ষ কর্মী পাঠানোর বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।’মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘প্রবাসীরা যেন বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠায়, সেটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠালে সরকার কী কী সুবিধা দিচ্ছে, হয়তো অনেকে জানেন না। এ ব্যাপারে প্রচার আরও বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে বিদ্যমান প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতাগুলোরও সমাধান করতে হবে।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত