ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নাইকো থেকে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার পথে বাংলাদেশ

টেংরাটিলায় গ্যাস বিস্ফোরণ
নাইকো থেকে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার পথে বাংলাদেশ

দীর্ঘ দেনদরবার ও আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রের ১ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণের দাবি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আন্তর্জাতিক আদালত-ইকসিডে। বিদায়ি ডিসেম্বরের শুনানি শেষে এমন আশার কথা জানান মামলার আইনজীবী মইন গনি। তিনি বলেন, মাস ছয়েকের মধ্যে আসতে পারে চূড়ান্ত রায়। তবে নাইকো দেউলিয়া হয়ে যাওয়ায় অর্থ পাওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এমন দুর্নীতি না হলে গ্যাস সংকটে ভুগতো না বাংলাদেশ। এক অভাবনীয় দুর্নীতির ভয়ংকর পরিণতি দেশের মহামূল্যবান জাতীয় সম্পদের আধার টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্র। ২০০৫-এর বিস্ফোরণের পর এখনো ঝুঁকিতে পুরো এলাকা। দুর্নীতির মাধ্যমে অযোগ্য এক প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়ার খেসারত বহন করতে হবে লম্বা সময়। তবে দীর্ঘদিনের আইনি লড়াই আর দেনদরবারের পর অবশেষে ক্ষতি আদায়ের পথে অনেকখানি এগিয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাংকের বিশেষায়িত আদালত ইকসিডে হওয়া ডিসেম্বরের সবশেষ শুনানিতে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের দাবি। যেখানে রাষ্ট্রীয় কোম্পানি বাপেক্স, পুড়ে যাওয়া গ্যাসের দাম, নজরদারি ও আইনি পরামর্শসহ- সবমিলিয়ে পাওয়ার সম্ভাবনা আছে ১ বিলিয়ন ডলারের ওপরে। অবশ্য এই দাবিতে অন্তর্ভুক্ত হয়নি সামাজিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ। বাংলাদেশ সরকার ও পেট্রোবাংলার আইনজীবী মইন গনি বলেন, আমরা প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি, বিস্ফোরণগুলোর জন্য নাইকো দায়ী ছিল। এখন কোম্পানিটি কি পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দেবে, সেটা নির্ধারণ করা বাকি। তবে বিশ্বের এখন কোথাও তাদের অপারেশন নেই। কিন্তু বাংলাদেশে কিছু সম্পদ আছে। এখন সেখান কতটুকু নিতে পারি, সেটাই দেখা হচ্ছে। জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বদরুল ইমাম বলেন, এই খামখেয়ালির জন্য একটা জীবনকে দুরবস্থার মধ্যে ফেললে, সেটার একটা আর্থিক মূল্য এখানে যোগ করতে হবে। সামাজিক দিকগুলোর ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০৩ সালের ১৬ অক্টোবর কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান নাইকোকে এই কাজ দেন সেসময়ের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তবে চুক্তির মাত্র ৫ দিনের মাথায় নাইকো বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্টের অনুকূলে ৪০ লাখ কানাডিয়ান ডলার ছাড় শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। এরও আগে থেকে আইনি পরামর্শ বাবদ সাড়ে ১৪ হাজার ডলার নেন সেসময়ের আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ। আর বছর দুয়েক পর প্রায় ২ লাখ ডলার দেয়া হয় জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেনকে। এরপর কাশেম শরীফ, নাইকোর এজেন্টখ্যাত সেলিম ভূঁইয়াকে ৫ লাখ ডলার দেয়া হয়। সেখান থেকে ৩ লাখ ডলার যায় তারেক রহমানের ব্যবসায়িক অংশীদার গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের কাছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেই সুবাদেই তারেক রহমান প্রভাব খাটান এই কাজ দিতে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দুর্নীতি এড়ানো গেলে তৈরি হতো না বর্তমান গ্যাস সংকট। বদরুল ইমাম বলেন, দুর্ঘটনার ফলে যে ক্ষতি হয়েছে, সেটা বিবেচনায় নিয়ে সাবধানতার সঙ্গে কূপগুলো খনন করতে হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত