বিশ্বমন্দার চ্যালেঞ্জের মধ্যেই সাফল্য অর্জন করেছে পোশাক খাত। বছর ব্যবধানে ২০২৩ সালে রপ্তানি আয় হয়েছে ১৬৮ কোটি ডলার বেশি। চলতি বছর এ আয় আরো বাড়াতে নতুন সরকারকে ডলার ও জ্বালানি সংকট দূর করার তাগিদ দিলেন ব্যবসায়ীরা। চলতি মাসের শুরুতে প্রকাশিত জাতিসংঘের প্রতিবেদন বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও সম্ভাবনা ২০২৪-এ বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে যেখানে বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৫.৭ শতাংশ, চলতি বছর তা নেমে আসবে ৩.৯ শতাংশে। বৈশ্বিক এমন চাপমুক্তির পূর্বাভাসে ভোক্তাদের বাড়তি স্বস্তি দিচ্ছে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সুদহার কমানোর পথে হাঁটার মতো ঘোষণা। একই সঙ্গে দীর্ঘদিন ব্যয় সংকোচন নীতিতে চলা ক্রেতারা আবার ফিরতে শুরু করেছেন খুচরা দোকানে। এতে তৈরি পোশাকের বিশ্ববাজারে বাড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা।
এমন দাবি করে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত টানা তিন মাস নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে থাকলেও চলতি বছরের শুরু থেকেই ঘুরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে আশাবাদী এ খাতের ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে বিশ্ববাজারে ভালো পরিমাণে তৈরি পোশাক বিক্রি হয়েছে। আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর খুচরা বিক্রি ভালো হয়েছে। অর্থাৎ, তাদের ইনভেন্টরিতে থাকা পণ্য অনেক কমেছে। এছাড়া বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতিও কমছে। তাই ফেডের সুদের হার আর বাড়বে না বলে আশা করা যায়। বরং, সুদের হার এখন কমানো শুরু করা হবে। এটি একটি ইতিবাচক দিক। সুতরাং, ২০২৩ সালে আমরা যে কঠিন সময়টি পার করেছি, সেটির তুলনায় ২০২৪ আশা করি ভালো যাবে। এখানেও পুরোনো চ্যালেঞ্জকে বড় বাধা হিসেবে সামনে আনছেন আমদানি-রপ্তানিকারকরা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাজারমুখী ক্রেতার হাতে বাংলাদেশি পোশাক পৌঁছে দিতে উৎপাদন পর্যায়ে জ্বালানি সংকট আর দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে বিদ্যমান ডলার সংকট দূর করতে নতুন সরকারের কাছে বিশেষ পদক্ষেপের আশা করছেন তারা। মার্কিন ডলার ও জ্বালানি সংকট সমধানের তাগিদ দিয়ে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) পরিচালক প্রকৌশলী রাজীব হায়দার বলেন, আমাদের মূল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, আমরা যে পরিমাণ ক্রয়াদেশ প্রত্যাশা করছি, সে পরিমাণ ক্রয়াদেশ আসা। এর পরই রয়েছে আমাদের অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ।
দেশের জ্বালানি ও বৈশ্বিক মুদ্রার যে সংকট রয়েছে, এগুলো আমি মনে করি আমাদের নতুন সরকার আসার পর শক্ত হাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। কেন না, প্রত্যাশা অনুসারে ক্রয়াদেশ আসলো, কিন্তু আমাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা সমাধান হলো না- তাহলে আবার আমাদের কর্মদক্ষতা কমে যাবে। তবে প্রত্যাশার এ পালে শঙ্কার বাতাস লাগিয়েছে লোহিত সাগরে পণ্যবাহী জাহাজে হুতি বিদ্রোহীদের হামলা।