অনলাইনে জ্বালানি তেল কেনার সুযোগ!

প্রকাশ : ১১ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

জ্বালানি তেল কিনতে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষার ঝামেলা এড়িয়ে খুব শিগগিরই অনলাইনে অর্ডার দিতে পারবেন বাংলাদেশের প্রধান শহরগুলোর বাসিন্দারা। অর্ডার দিলেই তাদের ঠিকানায় পৌঁছে যাবে জ্বালানি তেল। অনলাইনে ডিজেল, পেট্রল, অকটেন ও লুব অয়েল বিক্রি এবং হোম ডেলিভারির জন্য সরকার একটি নতুন নীতিমালা অনুমোদন করেছে। আবাসিক ভবন থেকে শুরু করে শিল্প কারখানা, বাণিজ্যিক ভবন, সরকারি স্থাপনা, বিপণিবিতানের জেনারেটর, ভারী নির্মাণ যন্ত্রপাতি নতুন নীতিমালায় বিভিন্ন খাতে জ্বালানি তেল সরবরাহকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ‘ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ পদ্ধতিতে জ্বালানি পণ্য বিক্রয়/ সরবরাহের লক্ষ্যে ডিলার/সরবরাহকারী নিয়োগ-সংক্রান্ত নীতিমালা, ২০২৪’- গত ৩ জানুয়ারি এক গ্যাজেট জারির মাধ্যমে প্রকাশ করে জ্বালানি বিভাগ। নীতিমালায় বলা হয়েছে, শুধুমাত্র ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, ময়মনসিংহ, বরিশাল, রংপুর, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন এলাকা বা সিটি কর্পোরেশনের এলাকায় অনলাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহ সীমাবদ্ধ থাকবে। এর বাইরে কোনো শহর, উপশহর, জেলা, উপজেলা ও মহাসড়কে এ পদ্ধতিতে জ্বালানি তেল বিক্রি করা যাবে না। এসব এলাকায় সরকার নির্ধারিত দরেই জ্বালানি তেল বিক্রি হবে। তবে নির্ধারিত মূল্যের বাইরে ডেলিভারির দূরত্ব অনুযায়ী সার্ভিস চার্জ দিতে হবে। ট্যাংকলরি বা জেরিক্যানে করে এসব তেল সরবরাহ করবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানসমূহ। ট্যাংকলরিতে সরবরাহ করা হলে সর্বোচ্চ লিটার প্রতি এক টাকা, আর জেরিক্যানে সরবরাহ করা হলে লিটার প্রতি সর্বোচ্চ দুই টাকা সার্ভিস চার্জ দিতে হবে। জ্বালানি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, জ্বালানি চাহিদার পরিবর্তন এবং ব্যস্ত সময়সূচীতে মানুষের দৈনন্দিন কর্মব্যস্ততা বেড়ে যাওয়ার ঘটনা অনলাইনে জ্বালানি সরবরাহের চাহিদা তৈরি করেছে। শিল্প প্রতিষ্ঠান ও আবাসিক ভবনে জ্বালানি তেলের ব্যবহার বাড়ছে। পাশাপাশি প্রাইভেট কারও বাড়ছে। যানবাহনের মালিকরা সময়ের অভাবে অনেকসময় সরাসরি নিজেরা কিনতে পারে না। আবার যাদের দিয়ে তেল সংগ্রহ করে- তাদের প্রতি বিশ্বাস করতে পারে না। তেল কম বা চুরি হয়, এ অভিযোগ বাংলাদেশে আছেই। এই সেবা মাঝখান থেকে এসব অবিশ্বস্ত সরবরাহকারীদের দূর করে সুবিধাজনক সমাধান দেবে। জ্বালানি সচিব নূরুল আলম বলেন, অনলাইনে জ্বালানি বিপণন পদ্ধতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রয়েছে। বাংলাদেশের বিপণন ব্যবস্থায় ডিজিটাল পদ্ধতি আগে থেকেই অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে, জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রেও উদ্যোগটি নেওয়া হয়েছে। যাতে গ্রাহকরা সহজে পণ্যটি পেতে পারেন। জ্বালানি বিভাগ আশা করছে, এই উদ্যোগে জ্বালানি তেলের গ্রাহকরা ইতিবাচক সাড়া দেবেন। নাশকতা বা অপব্যবহারের আশঙ্কা থেকে প্রায়ই পাম্প থেকে খোলা তেল বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়ে থাকে। বিষয়টি উল্লেখ করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখেই আমরা অর্ডার পদ্ধতি ডিজাইন করেছি। এজন্য গ্রাহককে অ্যাপে বা ওয়েবলিংকে বাধ্যতামূলক নিবন্ধন করে নিতে হবে, এবং কোথায়, কার কাছে পণ্য সরবরাহ হচ্ছে- তারও বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে। এতে স্বচ্ছ নজরদারি নিশ্চিত হবে, এবং ঝুঁকিও কমবে।’ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারতে এ ধরনের পদ্ধতিতে ডিজেল সরবরাহ করা হয়ে থাকে। দেশটির ডোর টু ডোর ডেলিভারি অব ডিজেল শীর্ষক একটি নীতিমালাও রয়েছে। বাংলাদেশের অনলাইন জ্বালানি বিক্রির পদ্ধতিতে- বিদ্যমান এসব নীতিমালার অনুসরণ আছে। বিপিসির তথ্য মতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট ডিজেল বিক্রির ৫.৬৩ শতাংশ বা ৪ লাখ ১৩ হাজার ৫৫০ টন শিল্পখাতে বিক্রি হয়েছে।