রমজানের এক মাস আগেই শক্তিশালী সিন্ডিকেট মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। অতি মুনাফার আশায় সিন্ডিকেট রোজায় ব্যবহৃত পণ্যসহ সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়েছে। পণ্যের এই অসহনীয় দামে সীমিত আয়ের মানুষের ‘নাভিশ্বাস’ উঠেছে। বাজারসংশ্লিষ্টরা বলেছেন, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দেওয়ায় বারবার এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। তাই করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ক্রেতাকে স্বস্তি দিতে কঠোরভাবে বাজার তদারকি করতে হবে এই সময়ে দেশের মানুষের কাছে সবচেয়ে বড় যে দুর্ভাবনার বিষয় সেটি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। চাল, ডাল, আটা, মাছ, মুরগি, ডিমসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অনেক দিন থেকেই নাগালের বাইরে। কোনো একটা পণ্যের দাম একবার বেড়ে গেলে তা আর সহজে কমতে দেখা যায় না। এমনকি চালের মতো ভরা মৌসুমে কিছু কিছু পণ্যের উৎপাদন কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় পৌঁছার পরও রহস্যজনকভাবে সেগুলোর দাম বেড়ে যাচ্ছে। বছরজুড়েই কারণে-অকারণে কোনো না কোনো পণ্যের দাম বেড়ে যায়। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে খুচরা ব্যবসায়ীরা এ পরিস্থিতির জন্য সিন্ডিকেটের কারসাজিকেই বরাবর দায়ী করে আসছে। কিন্তু সেই সিন্ডিকেট ভাঙা সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থায় নতুন সরকারের সামনে অগ্রাধিকারভিত্তিতে যে কয়টি বিষয় দেখার তাগিদ রয়েছে তার অন্যতম হচ্ছে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ। নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের ঘোষিত ইশতেহারে যে ১১টি বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়ার কথা বলা হয়েছে তার ১ নম্বর স্থানে রয়েছে দ্রব্যমূল্য সবার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কী পদক্ষেপ নেবেন তা জানতে চাইলে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার ও আমাদের নির্বাচনি ইশতেহারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের কথা বলা আছে। তাই এটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সব মন্ত্রণালয়ের টপ প্রায়োরিটি। আমি রোববার (আজ) অফিসে যাব। আমাদের মন্ত্রণালয়ের যে কাজগুলো চলছে, তা নিয়ে সব বিভাগের সঙ্গে কথা বলব। ইতঃপূর্বে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল, বর্তমানে কী অবস্থা বিরাজ করছে; তা দেখে আগামীতে কী পদক্ষেপ নেওয়া দরকার; সে বিষয়ে একটি প্ল্যান করব। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিলে সেটি বাস্তবায়নে কাজ করব। বাজারে সিন্ডিকেটের কারসাজির যে অভিযোগ সে বিষয়ে তিনি বলেন- ব্যক্তিগতভাবে আমি কোনো সিন্ডিকেটে বিশ্বাস করি না। দেশে যারা প্রডিউসার, বিগ প্রডিউসার, ডিস্ট্রিবিউটর, ম্যানুফ্যাকচারার রয়েছে তাদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির মধ্যে আনা হবে। ভোক্তাদের কাছ থেকে অতি মুনাফা করার সুযোগ দেওয়া হবে না। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা করতে পারলে সিন্ডিকেটের অভিযোগ আর থাকবে না। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় নিয়ে আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করেছে। নতুন সরকারের জন্য বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এবার মন্ত্রিসভার নতুন মুখ আহসানুল ইসলাম টিটু প্রতিমন্ত্রী হিসেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন।