মজুতদারি শক্ত হাতে দমন করা হবে জানিয়ে নতুন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশে আমরা স্মার্ট বাজার ব্যবস্থাপনা করতে চাই। গতকাল রোববার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রথম অফিস করতে এসে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে কোনো সিন্ডিকেট থাকতে পারবে না। কেউ কোনো কারসাজি করে বাজারে অস্থিতিশীলতা তৈরি করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আমরা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে চাই। কোনো ভয়ভীতি এটা না। এদেশে যারা ব্যবসা করেন সবাই দেশপ্রেমিক। আমরা বিশ্বাস করি তারা মানুষের কল্যাণে কাজ করবে। আমাদের দায়িত্ব থাকবে তাদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির মধ্যে নিয়ে আসা। বিশেষ করে যারা আমাদের এসেনশিয়াল (জরুরি) পণ্যগুলো নিয়ে কাজ করে। তেল, চিনি, লবণ এ ধরনের পণ্য নিয়ে যারা কাজ করে তারা যেন স্বচ্ছতা জবাবদিহির সঙ্গে কাজ করে এটা আমরা নিশ্চিত করবো। তিনি বলেন, কৃষিতে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। কৃষিতে আমরা অভূতপূর্ব সাফল্য পেয়েছি। চাল, ভেজিটেবল, মাছ, ডিম, মুরগি কোনো কিছুতে আমাদের ঘাটতি নেই। কিন্তু বাজার ব্যবস্থাপনা, স্মার্ট বাংলাদেশে স্মার্টবাজার ব্যবস্থাপনা করতে চাই। উৎপাদক বা আমদানিকারক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে সরবরাহের সময় কমিয়ে আনতে চাই। সরবরাহ যদি ভালো থাকে তাহলে কেউ বাজারে কারসাজি করার সুযোগ পাবে না এবং কেউ উচ্চমূল্যে বিক্রি করারও সুযোগ পাবে না।
তিনি আরো বলেন, আমরা রপ্তানিকে বৈচিত্র্যময় করতে চাই। আমরা গার্মেন্টসের ওপর অনেক নির্ভরশীল। প্রধানমন্ত্রী কাল (১৩ জানুয়ারি) আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন গার্মেন্টসের মতো একই রকম সুযোগ-সুবিধা চামড়া শিল্পে যারা আছেন এবং পাট শিল্পে যারা আছেন, তারা পাবেন। ওখানে আমাদের ভ্যালু এডিশন অনেক বেশি। টিটু বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কোনো কিছু উৎপাদন করে না, আমদানিও করে না। বাজার ব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করে, ভোক্তা যাতে সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা পায় সেটা নিশ্চিত করা হলো আমাদের কাজ। তিনি বলেন, কেউ কারসাজি করার চেষ্টা করলে আমরা শক্ত হাতে দমন করব। বিশেষ করে মজুতদারি। আমরা দেখি রমজান এলেই কিছু ব্যবসায়ী, আমি ব্যবসায়ী বলবো না তাদের, অসাধু কিছু গোষ্ঠী তারা ব্যবসার নামে এই অপকর্মগুলো করে। মজুতদারি আমরা শক্ত হাতে দমন করবো। আমাদের সব ডিপার্টমেন্ট এ বিষয়ে সচেতন থাকবে। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সহজলভ্য করা। যাতে সবার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে। আমরা এবছরের শুরু থেকে স্মার্ট বাজার সিস্টেম চালু করতে চাই। যাতে উৎপাদনকারী থেকে ভোক্তা, আমদানিকারকদের থেকে ভোক্তা- এর মধ্যে যেন কোনো হস্তক্ষেপ না থাকে। আপনারা জানেন অনেক পণ্যের জন্য আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভর করতে হয়। আমাদের কাজ শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। এটার নিশ্চয়তা দিতে পারি। টিসিবির পণ্য নেওয়া এক কোটি পরিবারকে কবে নাগাদ স্মার্ট কার্ড দিতে পারবেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, টিসিবির যে ১ কোটি পরিবার রয়েছে তাদের তথ্য নিয়েছি সেটা যাচাই-বাছাই চলছে। যেগুলো যাচাই-বাছাই হয়ে গেছে সেগুলোর কার্ড ইস্যু করা হচ্ছে। আশা করছি জুনের মধ্যে কার্ড দিতে পারব। তার জন্য কার্যক্রম বন্ধ থাকবে না। এখন যে তালিকা আছে সেটা ধরেই দেব। এটা হলে ডিজিটাল যে ব্যবস্থা তখন সবাই হাতে হাতে পাবে। তিনি বলেন, যারা বাজারে উৎপাদক, আমদানিকারক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে যারা কোনো রকমের হস্তক্ষেপ করবে তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেবো। যারা কৃত্রিম সংকট, মজুতদারি করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো। তবে যারা ভালোভাবে ব্যবসা করবে তাদের সহযোগিতা করব। তাদের আস্থা নিয়ে কাজ করতে চাই। টিটু বলেন, ভারত থেকে আমাদের পণ্য আমদানি করতে হয়, তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আমাদের সুবিধামতো পেঁয়াজ থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় যেসব পণ্য ভারতে থেকে আসে সেগুলো আমদানিতে একটু সহজ করা হবে বলে আশা করছি। একই সঙ্গে দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করে যাবো। সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেবেন- জানতে চাইলে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি নিন্ডিকেট শব্দের সঙ্গে অভ্যস্ত না। দেশে কোনো সিন্ডিকেট থাকতে পারবে না। আমি পুঁজিবাজার নিয়ে কাজ করেছি। তখন কোনো সিন্ডিকেট, মজুতদার কোনো কারসাজি করতে পারেনি।