ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

লোহিত সাগরে হুথি হামলা

বিশ্ব অর্থনীতিতে যা ক্ষতি করছে

বিশ্ব অর্থনীতিতে যা ক্ষতি করছে

গত বৃহস্পতিবার রাতে হুথি সশস্ত্রগোষ্ঠী নিয়ন্ত্রিত একাধিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। হামলার পর বিদ্যমান সামরিক উত্তেজনা লোহিত সাগর থেকে ইয়েমেন পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। ৩০ কিলোমিটার প্রশস্ত বাব-এল-মান্দেব প্রণালির মধ্য দিয়ে যাওয়া ইসরায়েলি সংযোগ থাকা একাধিক বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালিয়েছে হুথিরা। তারা ইসরায়েলের কাছে গাজায় বোমা বর্ষণ বন্ধ এবং মানবিক সহায়তার অনুমতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। ইয়েমেনি গোষ্ঠীর ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ঠেকানোর লক্ষ্যে লোহিত সাগরে ডেস্ট্রয়ার (এক ধরনের যুদ্ধ জাহাজ) ও অন্যান্য সামরিক শক্তি মোতায়েন করে হুথিদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করছে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট। তবে হুথিরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, ইসরায়েলের যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা হামলা বন্ধ করবে না। এখন পর্যন্ত ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধে প্রায় ২৪ হাজার ফিলিস্তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। এই সংঘাতের ফলে লোহিত সাগর দিয়ে যান চলাচল ৪০ শতাংশেরও বেশি কমে যাওয়ায় বৈশ্বিক পণ্য পরিবহনে ব্যাঘাত ঘটছে। লোহিত সাগরের নিয়মিত রুটের পরিবর্তে, শিপিং জাহাজগুলো আফ্রিকার দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত কেপ অফ গুড হোপের চারপাশ দিয়ে চলাচল করছে। রুটের এই পরিবর্তনের ফলে অতিরিক্ত ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫০০ নটিক্যাল মাইল (প্রায় ৬ হাজার কিলোমিটার) যুক্ত হওয়ায় পণ্য সরবরাহে হচ্ছে বিলম্ব। গত নভেম্বরে ইসরায়েলি ‘গ্যালাক্সি লিডার’ জাহাজটি দখলের পর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ২৬টি জাহাজে হামলা চালিয়েছে হুথিরা। এই অঞ্চলে মার্কিন যুদ্ধজাহাজগুলো হুথিদের আরও বেশ কয়েকটি হামলা প্রতিহত করেছে। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, গত বুধবার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য হুথিদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ গত বুধবার, হুথিদের এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। লোহিত সাগর সুয়েজ খালের মাধ্যমে এশিয়াকে ইউরোপ ও ভূমধ্যসাগরের সাথে সংযুক্ত করেছে। বর্তমানে, বিশ্বের প্রায় ১২ শতাংশ জাহাজ লোহিত সাগর দিয়ে চলাচল করে এবং প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫০টি জাহাজ ৩০০ থেকে ৯০০ কোটি ডলারের মালামাল বহন করে। ধারণা করা হয়, বছরে এই পথ দিয়ে অন্তত এক ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি পণ্য পরিবহন হয়। এ সপ্তাহের শুরুতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সংঘাতে তেলের ট্যাংকারগুলো কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে কন্টেইনার জাহাজগুলো। মেরিট্রেস থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, ডিসেম্বর মাসে গড়ে ৭৬ টি তেলবাহী জাহাজ লোহিত সাগরে অবস্থিত ছিল যা আগের মাসের গড়ের চেয়ে মাত্র দুটি কম। অন্যান্য ট্র্যাকারগুলোও জাহাজের সংখ্যা বৃদ্ধির কথা নিশ্চিত করেছে। জানুয়ারির গোড়ার দিকে হুথি বিদ্রোহীরা ঘোষণা করেছিল যে, ওই এলাকা অতিক্রম করতে ইচ্ছুক কোনো জাহাজ যদি জলসীমায় প্রবেশের আগেই নিজেদের মালিকানা ও গন্তব্য ঘোষণা করে, তাহলে সেটিকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হবে না। এদিকে শিপিং কোম্পানি মায়ের্স্ক এবং হাপাগ-লয়েড বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সাথে কোনও চুক্তিতে পৌঁছানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছে।

ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত ইসরায়েলের একমাত্র লোহিত সাগর বন্দর ইলাতে, হামলা শুরুর পর থেকে কার্যক্রম ৮৫ শতাংশ কমে গেছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত