রপ্তানি বাড়ছে চীন ও অস্ট্রেলিয়ায়
প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশে পণ্য আমদানির সবচেয়ে বড় উৎস এখন চীন, ভারত। মোট আমদানির প্রায় এক-তৃতীয়াংশই আসে এই দুই দেশ থেকে। এর বিপরীতে এ দুই দেশে রপ্তানি হয় তুলনামূলক কম। তবে সম্প্রতি বাড়ছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে জুলাই-ডিসেম্বর ছয় মাসে চীনে রপ্তানি হয় ২ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকার ১ লাখ ৩৯ হাজার ৭৩১ মেট্রিক টন পণ্য। সেখানে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রপ্তানি হয়েছে ৩ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকার ১ লাখ ৮০ হাজার ৩২৭ টন। শুধু চীন নয়, ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলতি অর্থবছরের গত ছয় মাসে পণ্য রপ্তানির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, একই সময়ে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, গ্রেট ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, কানাডায়ও পণ্য রপ্তানি বেড়েছে। বিষয়টিকে আশার আলো হিসেবে দেখছেন ব্যবসায়ীরা। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের গত ছয় মাসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ২১ দশমিক ৭৩ শতাংশ। গত ছয় মাসে ২ লাখ ২৭ হাজার ৬২৬ কোটি টাক সমমূল্যের ২৪ লাখ ২৫ হাজার ৯৭৫ টন পণ্য রপ্তানি হয়েছে। যেখানে গত অর্থবছরের একই সময়ে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে রপ্তানি হয়েছিল ১ লাখ ৯৬ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা সমমূল্যের ১৯ লাখ ৯২ হাজার ৯৭০ টন পণ্য। এর মধ্যে ছিল পাট, ফুটওয়্যার, তৈরি পোশাক এবং অন্যান্য কৃষি ও অকৃষি পণ্য। এবার পাট, তৈরি পোশাক ও অন্যান্য পণ্য রপ্তানি বাড়লেও বিপরীতে ফুটওয়্যার পণ্য রপ্তানি কমেছে। একক দেশ হিসেবে গত ছয় মাসে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় পণ্য রপ্তানি বেড়েছে অস্ট্রেলিয়ায়। চলতি অর্থবছরের এই ছয় মাসে অস্ট্রেলিয়ায় ৬ হাজার ৯৭৬ কোটি টাকা মূল্যের ৪৮ হাজার ৫৭৯ টন পণ্য রপ্তানি করা হয়। যেখানে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ওই দেশে রপ্তানি হয়েছিল ৪ হাজার ৯৪১ কোটি টাকা সমমূল্যের ৩৭ হাজার ১০৯ টন পণ্য। এই হিসেবে ওই দেশে চলতি অর্থবছরের এই ছয় মাসে পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ১১ হাজার ৪৭০ টন। অর্থাৎ আগের বছরের ছয় মাসের তুলনায় এই ছয় মাসে অস্ট্রেলিয়ায় পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ৩০ দশমিক ৯১ শতাংশ। এরপরই রয়েছে চীন। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৯ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ পণ্য বেশি রপ্তানি করা হয়। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে চীনে ৩ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা সমমূল্যের ১ লাখ ৮০ হাজার ৩২৭ টন পণ্য রপ্তানি করা হয়। যেখানে ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে চীনে রপ্তানি করা হয় ২ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা সমমূল্যের ১ লাখ ৩৯ হাজার ৭৩১ টন। সেই হিসেবে গত ছয় মাসে দেশটিতে পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ৪০ হাজার ৫৯৫ টন। অস্ট্রেলিয়া ও চীনের পরে গত ছয় মাসে পণ্য রপ্তানি বেড়েছে গ্রেট ব্রিটেনে। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রপ্তানি বেড়েছে ২২ দশমিক ৪৯ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাস গ্রেট ব্রিটেনে পণ্য রপ্তানি করা হয় ১৮ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা সমমূল্যের ১ লাখ ৩১ হাজার ২৩২ টন।
অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পণ্য রপ্তানি হয়েছে ২৩ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা সমমূল্যের ১ লাখ ৬০ হাজার ৭৪৩ টন। সেই হিসেবে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় গত ছয় মাসে দেশটিতে পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ২৯ হাজার ৫১১ টন। এর পরই রয়েছে জাপান, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় গত ছয় মাসে জাপানে পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ১৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ। কানাডায় বেড়েছে ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ, ইউরোপীয় ইউনিয়নে ৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং যুক্তরাষ্ট্রে বেড়েছে ৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রে চলতি অর্থবছরের গত ছয় মাসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য রপ্তানি হয় ৩৭ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা সমমূল্যের ২ লাখ ৬৯ হাজার ৯৬৪ টন। যেখানে আগের অর্থবছরের একই সময়ে ওই দেশে রপ্তানি করা হয়েছিল ৩৪ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা সমমূল্যের ২ লাখ ৪৯ হাজার ১৬৭ মেট্রিক টন। চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ওমর হাজ্জাজ বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়ীদের প্রচলিত বাজারের পাশাপাশি অপ্রচলিত বাজারগুলোতে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্র তৈরি করার আহ্বান জানিয়ে আসছেন। আমি মনে করি, এটি সেই উদ্যোগেরই সফল।’