ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য

ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে গ্রাহকদের অভিযোগ বাড়ছে

ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে গ্রাহকদের অভিযোগ বাড়ছে

২০২২-২৩ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ব্যাংকের সেবা পেতে বাধাগ্রস্ত হয়ে ১০,৫৪২টি অভিযোগ এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে। এর মধ্যে ৮৬৮২টি অভিযোগ নিষ্পত্তি বা সমাধান করেছে সংস্থাটি। অর্থাৎ মোট অভিযোগের মধ্যে ৮২.৩৬ শতাংশ নিষ্পাত্তি হয়েছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের করা নানা অনিয়ম ও অভিযোগের হার বছরের পর বছর পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক এই অভিযোগগুলো নিষ্পত্তির হার কমছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক শেষ অর্থবছরের ১৮ শতাংশ অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে পারেনি। এতে করে আর্থিক খাতে ভোক্তা সুরক্ষা ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। একইসাথে নির্বাচনের বছর হওয়ায় ব্যাংকগুলোতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ টিমের পরিদর্শন কম হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকারা। আর এটিই তদারকি ব্যবস্থাকে দুর্বল করা এবং অভিযোগ অমীমাংসিত রাখার ক্ষেত্রে কারণ হতে পারে। ২০২২-২০২৩ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ব্যাংকের সেবা পেতে বাধাগ্রস্ত হয়ে ১০, ৫৪২টি অভিযোগ এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে। এর মধ্যে ৮৬৮২টি অভিযোগ নিষ্পত্তি বা সমাধান করেছে সংস্থাটি। অর্থাৎ মোট অভিযোগের মধ্যে ৮২.৩৬ শতাংশ নিষ্পাত্তি হয়েছে। কিন্ত আগের অর্থবছরে (২০২১-২০২২) অভিযোগ নিষ্পত্তির হার হার ছিল ৯১.৪২ শতাংশ। তারও আগের অর্থবছরে অভিযোগ নিষ্পত্তির হার ছিল ১০০ ভাগ। অর্থাৎ বছরের পর বছর অভিযোগের সংখ্যা বাড়লেও নিষ্পত্তির হার কমেছে। প্রতিবেদনে ২০২২-২০২৩ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ পরিদর্শনে হয়েছে ৯৪ টি। অথচ ২০২১-২০২২ সালেও যা ছিল ১৭৯টি। অর্থাৎ এখানেও শতকরা ৫০ ভাগ হ্রাস পেয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের উল্লেখ করা হয়, ব্যাংক ও আর্থিক সেবা পেতে হয়রানির শিকার হলে কিংবা অন্য কোনো অভিযোগ থাকলে ভুক্তভোগীরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফাইনান্সিয়াল ইন্ট্রিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিস ডিপার্টমেন্ট (এফআইসিএসডি) এ জানাতে পারেন। ব্যাংকিং খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি ও জাল-জালিয়াতি প্রতিরোধ ও হ্রাস করার লক্ষ্যে এফআইসিএসডি’র ভিজিলেন্স ও এন্টিফ্রড ডিভিশনের বিশেষ পরিদর্শনের মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতের উপর নিবিড় নজরদারি করে। এফআইসিএসডি বিভাগ প্রাপ্ত অভিযোগের গুরুত্ব অনুযায়ী, বিভিন্ন সূত্রের প্রেক্ষিতে স্বপ্রণোদিত হয়ে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বা অন্যান্য বিভাগের অনুরোধে বিভিন্ন ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সমবায় প্রতিষ্ঠান বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে বিশেষ পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, প্রতিনিয়ত ব্যাংকগুলো তাদের নতুন নতুন পণ্য বা সেবা নিয়ে আসছে বাজারে। ব্যাংকের সংখ্যা, সেবার পরিধি ও কড়া তদারকির কারণে দিন দিন অভিযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, দিন দিন বাড়ছে কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন। মোবাইল ব্যাংকিং এখন খুবই জনপ্রিয় একটি লেনদেন মাধ্যম। তাই ব্যাংকিং সেবাগ্রাহীতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ক্রমেই বাড়ছে ব্যাংকের সেবা পরিধি। অর্থনীতির সাথে তাল মিলিয়ে বড় হচ্ছে পুরো ব্যাংক খাত। তাই অভিযোগের সংখ্যা বাড়াটা স্বাভাবিক। তবে অভিযোগ নিষ্পত্তি না হলে খাতের পরিধি বাড়িয়ে কোনো লাভ হবে না বলে মনে করেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক জানান, অভিযোগ নিষ্পত্তি আসলে অপরাধ বা বিষয়ের ধরণের উপর নির্ভর করে। যেগুলো তৎক্ষণাৎ নিষ্পত্তি করা যায় সেগুলো তাড়াতাড়ি নিষ্পত্তি হয়। আর যেগুলোতে আইনি জটিলতা থাকে সেগুলোতে সময় লাগে। তিনি আরও বলেন, অনেক সময় অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য ব্যাংকের সাথে কথা বলতে হয়। আসল কারণ বের করে তারপর আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত