ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ধান কিনে অবৈধ মজুত করলে কোনো ছাড় নয় : খাদ্যমন্ত্রী

ধান কিনে অবৈধ মজুত করলে কোনো ছাড় নয় : খাদ্যমন্ত্রী

করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্দেশে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, বাজারে প্রতিযোগিতা করে ধান কেনা থেকে বিরত থাকতে হবে। ক্যাপাসিটির বেশি অবৈধ মজুত করলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। গতকাল সোমবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে দেশের ছয়টি করপোরেট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক সভায় তিনি এ কথা বলেন। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, মিলারদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলাম। তারা বলেছে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিযোগিতা করে ধান কিনে মজুত করছে। করপোরেট প্রতিষ্ঠান মোটা চালের ব্যবসা না করলে আমাদের সঙ্গে বসার প্রয়োজন ছিল না। মিলাররা আপনাদের দিকে আঙুল তোলে। মিডিয়াও দোষারোপ করে। আমরা প্রকৃত চিত্র জানতে চাই। তিনি বলেন, করপোরেট প্রতিষ্ঠান ভ্যালু অ্যাড করে বাজারে পণ্য বিক্রি করে। সে কারণে তারা বেশি দামে বাজার থেকে ধান কেনায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। বাজার থেকে অল্প পরিমাণ ধান কিনলেও তার প্রভাব পড়ে খুব বেশি। তখন অন্যরাও বেশি দামে ধান কিনতে বাধ্য হয়। এটা বাজারের জন্য অশুভ বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী। তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নামে বাজারে চাল পাওয়া যাচ্ছে, যেটাতে এমআরপি লেখা থাকে। আমরা চাই পাশাপাশি মিল গেটের দামও লেখা থাকুক। বস্তায় মিল গেটের দাম লেখা থাকলে হঠাৎ করে কিংবা অযৌক্তিকভাবে খুচরা বিক্রেতারা দাম বাড়াতে পারবে না। খাদ্য সচিব ইসমাইল হোসেন বলেন, প্রতিযোগিতামূলকভাবে বাজারে কেউ ধান-চাল কিনছে কি না বা অবৈধ মজুত করছে কি না তা নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে। কেউ ক্যাপাসিটির বাইরে মজুত করার চেষ্টা করলে প্রয়োজনে মজুত ক্যাপাসিটি রিভিউ করব। সিটি গ্রুপ, স্কয়ার, প্রাণ-আরএফএল, মেঘনা গ্রুপ, এসিআই ও আকিজ এসেনশিয়াল-এর প্রতিনিধিরা সভায় অংশ নেন। এ সময় করপোরেট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা বস্তায় মিল গেটের দাম লেখার বিষয়ে সম্মতি জানান। প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ক্যাপাসিটি ও ক্রয়-বিক্রয়ের চিত্র তুলে ধরেন এবং সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। সভায় খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাখাওয়াত হোসেন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম, এফপিএমইউ-এর মহাপরিচালক মো. শহিদুল আলমসহ খাদ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে গত রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠকে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার উপস্থিত ছিলেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে কোনো ব্যবসায়ী কারসাজি করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। লাইসেন্স বাতিল করা হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের ছাড়পত্র বন্ধ করা হবে। অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান বলেন, এই বসাটা একটি স্বদিচ্ছার প্রকাশ। আপনাদের, আমাদের সবারই মনে রাখতে হবে, শেখ হাসিনা সরকারের একটি রাজনৈতিক অঙ্গীকার- দেশের মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য তাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা এবং যাতে সহজলভ্য হয়, সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারসাজিতে কিছু কিছু জিনিসের ব্যত্যয় ঘটেছে, সে ব্যত্যয় যাতে আর না ঘটে, সে ব্যাপারে যাতে পদক্ষেপ আমরা নিতে পারি, কি কি পদক্ষেপ নিতে পারি, সে ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে।

চালের উৎপাদন বাড়াতে সহযোগিতা জোরদার করবে ইরি

বাংলাদেশে চালের উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা জোরদার এবং আরো গভীরভাবে কাজ করবে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইরি)। সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সঙ্গে (ব্রি) পাঁচ বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সংস্থাটি। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে ইরির প্রতিনিধি দল এসব কথা জানান। সেই দলে সংস্থাটির এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক জংসু শিন, বাংলাদেশ প্রতিনিধি হোমনাথ ভান্ডারি, নির্বাহী সহকারী মো. শাহিন ভূইয়া এবং ব্রি’র মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী বলেন, একটি দেশের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি নিশ্চিত করা না গেলে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বর্তমানে দেশে খাদ্যের কোনো ঘাটতি নেই। তবে জনসংখ্যা বাড়ছে, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী রয়েছে। এসব কারণে ভবিষ্যতে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য খাদ্যের উৎপাদন বাড়াতে হবে। ইরির সহযোগিতা এক্ষেত্রে খুবই সহায়ক হবে। মন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য এখন উৎপাদন আরো বৃদ্ধি করা। উৎপাদন বাড়াতে পারলে মজুতদারি ও কৃত্রিম সংকটের মতো সমস্যা থাকবে না। সেজন্য উৎপাদন বাড়িয়ে আমরা সেসব সংকট মোকাবিলা করব। ইরির প্রতিনিধ দল তাদের কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন। তারা জানান, চালের উৎপাদন বাড়াতে উচ্চফলনশীল, স্বল্প জীবনকালীন ও মানসম্পন্ন ধানের জাত উৎপাদনে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। খরা, তাপ, ঠান্ডা, লবণাক্ততাসহ প্রতিকূল পরিবেশে চাষোপযোগী জাত এবং পুষ্টিসম্পন্ন ধানের জাতের উদ্ভাবনে গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে।

মোকামে সরু চালের প্রতি কেজি সর্বোচ্চ ৬২ টাকা নির্ধারণ

কুষ্টিয়ায় মোকামে প্রতি কেজি সরু চালের দাম সর্বোচ্চ ৬২ টাকা হবে বলে নির্ধারণ করা হয়েছে। যা খুচরা বাজারে ৬৪ টাকায় বিক্রি হবে। গত বোরবার থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়। বিকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান জেলা প্রশাসক মো. এহেতেশাম রেজা। বিকাল চারটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে চালকলমালিক, আমদানিকারক, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এ মতবিনিময় সভা করা হয়। সভায় পুলিশ সুপার এএইচএম আবদুর রকিব, বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদসহ জেলার শীর্ষ মিলমালিকরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় চালকলমালিক ও ব্যবসায়ী আবদুর রশিদ অভিযোগ করে বলেন, কুষ্টিয়ার চাল কলমালিকরা খেয়াল খুশিমতো চালের দাম বাড়ান না। উত্তরবঙ্গের কিছু করপোরেট চাল ব্যবসায়ী চালের দাম বাড়ান। মিলাররা চালের দাম বাড়ান- এমন কথা শুধু মিলারদের শত্রুরা বলেন। তিনি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, কোনো চালকলমালিক কেজিপ্রতি ১ টাকাও লাভ করেন না। সভায় উপস্থিত লোকজন বলেন, সবার বক্তব্যের পর জেলা প্রশাসক মিলামালিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, মিনিকেট চালের একটা দাম নির্ধারণ করে দেন। যেটা গতকাল সোমবার থেকে কার্যকর করেন। সেই সিদ্ধান্তের বিষয় খাদ্য মন্ত্রণালয়ে জানানো হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত